Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ট্রাকে ফেলা ফোন ধরাল দুষ্কৃতীকে

এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুকোমলকান্তি দাস জানান, রড ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত অভিযোগে শেখ সানোয়ার নামে এক যুবককে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সোমবার।

ধৃত শেখ সানোয়ার। নিজস্ব চিত্র

ধৃত শেখ সানোয়ার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১৭
Share: Save:

ট্রাক ভর্তি রড ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পরে খালি ট্রাক ফেরতও দিয়ে যায়। কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না। ট্রাকের কেবিনে ফেলে যাওয়া দুষ্কৃতীদের মোবাইল ফোনই পুলিশের নাগালে এনে দিল অভিযুক্তদের। এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ উদ্ধার করল বিপুল টাকার রড। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার ঘটনা।

এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুকোমলকান্তি দাস জানান, রড ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত অভিযোগে শেখ সানোয়ার নামে এক যুবককে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সোমবার। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই রাতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেউটপাড়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় চুরি করা লোহার রড।’’ সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ দে জানান, এসিজেএম প্রবীর মহাপাত্র ধৃতকে ১১ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

২৪ নভেম্বর বাঁকুড়ার মেজিয়া থেকে ১৭ মেট্রিক টন লোহার রড এবং চল্লিশ বান্ডিল লোহার রিং নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোদাপিয়াশালের পণ্য পরিবহণ সংস্থার একটি ট্রাক রওনা দেয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের কুইকাটা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের পানিপারুলে রড দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বিষ্ণুপুর শহর ছাড়িয়ে যাওয়ার পরেই ঘটে বিপত্তি।

মঙ্গলবার বিষ্ণুপুর থানায় এসেছিলেন সেই ট্রাকের চালক বিহারের হাজিপুরের বাসিন্দা সরোজকুমার সিংহ। তাঁর দাবি, রাত প্রায় ৮টা ২০ নাগাদ খড়িকাশুলি গ্রামের কাছে পিছন থেকে একটি ছোট গাড়ি অনবরত হর্ন দিতে থাকে।

কিছুটা এগিয়ে বাঁ দিক চেপে ছোট গাড়িটিকে তিনি যাওয়ার পথ করে দেন। কিন্তু, ছোট গাড়িটি কিছুটা এগিয়ে তাঁদের ট্রাকের সামনে আড়াআড়ি দাঁড়িয়ে যায়। কেন তাঁদের গাড়িকে যেতে দেওয়া হচ্ছিল না, তা নিয়ে বচসা জোড়ে চার-পাঁচ জন।

চালকের অভিযোগ, ‘‘ওরা কেবিনে উঠে আমাকে ও খালাসি নীরজ সিংহকে মারধর করে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে দেয়। আমার গামছা দিয়েই আমার চোখও বেঁধে দেয়। ওদেরই কেউ ট্রাক চালাতে শুরু করে।’’

তিনি জানান, কিছুটা গিয়ে ট্রাক থামানো হয়। চোখের কাপড় খুলে ট্রাক থেকে নামিয়ে একটা জঙ্গলের ভিতরে নিয়ে গিয়ে তাঁদের গাছে বেঁধে দেয়। দু’জন পাহারায় ছিল। এরপরে বাকি দুষ্কৃতীরা রড বোঝাই ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়।

দুষ্কৃতীরা সেই ট্রাক নিয়ে ঘণ্টাখানেক পরেই ফিরে আসে। চালক জানান, দুষ্কৃতীরা তাঁদের একটি ছোট গাড়িতে তুলে ফের চোখ বেঁধে দেয়। ঘণ্টাখানেক পরে তাঁদের একটি জায়গায় নামিয়ে ফের ট্রাকে তুলে দিয়ে দুষ্কৃতীরা ছোটগাড়ি পালায়। ভোরে মোটরবাইকে টহলদারি পুলিশ হাত খুলে থানায় নিয়ে যান।’’

কী করে ধরা পড়ল দুষ্কতী?

এসডিপিও জানান, ট্রাকটি খুঁটিয়ে দেখতে গিয়ে তাঁরা কেবিনের ভিতরে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন। সেটি দুষ্কৃতীদের অনুমান করে, সেখান থেকে কাদের ফোন করা হয়েছিল, কাদের ফোন এসেছিল, খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করে পুলিশ।

এসডিপিও বলেন, ‘‘দেখা যায়, একটি বিশেষ নম্বর থেকে ছিনতাইয়ের দিন এই ফোনে বেশ কয়েকবার কথা বলা হয়েছিল। সেই ফোন নম্বর ট্র্যাক করে সানোয়ারের খোঁজ মেলে। তারপর ওই ফোনের সূত্র ধরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bishnupur Truck Hijack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE