Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘ড্রোন’ উড়িয়ে বালিতে নজর

জেলার ঘাটগুলি থেকে যন্ত্র দিয়ে বালি তোলা, অনুমোদিত পরিমাণের থেকে গাড়িতে বেশি বালি বোঝাই করা, অবৈধ ঘাট চালানো— এমন নানা অভিযোগ প্রায়ই ওঠে বাঁকুড়ায়।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৯
Share: Save:

আকাশ থেকে নদীর উপরে নজর রাখবে বাঁকুড়া পুলিশ। বালির বেআইনি কারবার রুখতে এ বার জেলা পুলিশের ভরসা ‘ড্রোন’। বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস জানান, ইতিমধ্যেই একটি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কিছু দিনের মধ্যেই ‘ড্রোন’ আমাদের হাতে চলে আসার কথা। বালিঘাটগুলিতে আকাশ থেকে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানোর লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।”

জেলার ঘাটগুলি থেকে যন্ত্র দিয়ে বালি তোলা, অনুমোদিত পরিমাণের থেকে গাড়িতে বেশি বালি বোঝাই করা, অবৈধ ঘাট চালানো— এমন নানা অভিযোগ প্রায়ই ওঠে বাঁকুড়ায়। প্রশাসন অভিযানও চালায়। জেলার কোন ঘাট থেকে কত বালি তোলা হচ্ছে, সেই বালি কোন গাড়িতে কোন পথে কোথায় পাঠানো হচ্ছে, তার উপরে নজর রাখতে জেলাশাসক চালু করেছেন একটি ‘পোর্টাল’। ঘাটের ইজারাদারেরা যাবতীয় তথ্য প্রশাসনের ‘পোর্টাল’-এ জমা করছেন।

গত জুলাইয়ে বালি চুরি রুখতে প্রশাসনের তরফে প্রত্যেক ইজারাদরকে বালিঘাটগুলিতে পাহারাদার রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই প্রশাসনিক সেই নির্দেশ মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ‘ড্রোন’ দিয়ে আকাশপথে বালি ঘাটগুলির উপরে নজরদারি চালালে কোথায় কী ঘটছে, তা সরাসরি প্রশাসনের নজরে থাকবে বলেই মনে করছেন আধিকারিকেরা। তাঁদের আশা, এতে অনিয়ম অনেকটাই বন্ধ হবে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক বলেন, “আকাশে ড্রোন উড়িয়ে কোথায় কী হচ্ছে সহজেই সেই ছবি আমরা দেখতে পাব। কোথাও অনিয়মের ঘটনা নজরে এলে দ্রুত পদক্ষেপ করা যাবে।”

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন বাঁকুড়া জুড়ে ১২৮টি বৈধ বালিঘাট রয়েছে। প্রশাসনের দাবি, গত কয়েক বছরে বালি ব্যবসায় নানা অনিয়মের জেরে জরিমানার আদায়ও বেড়েছে অনেকটা। যার ফলে, বছর বছর রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বাড়ছে বলে দাবি প্রশাসনিক কর্তাদের।

প্রশাসনিক তথ্য অনুসারে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে সামগ্রিক ভাবে জেলার প্রাকৃতিক সম্পদ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে প্রায় ৪৪ কোটি ৪৪ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৫৩ কোটি ২৯ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকায়। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে অক্টোবর পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ৩০ কোটি ১৮ লক্ষ টাকার বেশি।

বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সব্যসাচী সরকার বলেন, “চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে এখনও বেশ কয়েক মাস বাকি রয়েছে। রাজস্ব আদায়ের গতি এমন চললে গত অর্থবর্ষকে এ বারও ছাপিয়ে যাবে। বালি ব্যবসায় অনিয়ম রুখতে কড়া নজরদারি চালানোর ফলে জরিমানা থেকে পাওয়া টাকার পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে।” জেলাশাসক বলেন, “আমাদের লক্ষ্য, বালির কারবারে স্বচ্ছ্বতা নিয়ে আসা। তার জন্যই এই সমস্ত পদক্ষেপ।’’

আকাশ থেকে নজর রেখে এখন রাশ কতটা শক্ত করা যায়, সে দিকেই তাকিয়ে বাঁকুড়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Sand Mafia Drone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE