Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নিরুদ্দেশের পোস্টার ‘শিশুসুলভ’, বলছে বিশ্বভারতী

সব মিলিয়ে অচলাবস্থা কাটার কোনও লক্ষণ আপাতত দেখা যাচ্ছে না এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুক্রবারই কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে নোটিস দিয়ে কর্মিসভাকে বৈঠকে বসার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নোটিসে কোনও লোগো এবং কর্মিসভার তরফ থেকে কারা বৈঠকে যোগ দেবেন, তাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

n এই পোস্টার ঘিরেই বিতর্ক বিশ্বভারতীতে।ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

n এই পোস্টার ঘিরেই বিতর্ক বিশ্বভারতীতে।ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

বাসুদেব ঘোষ
Neন্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৪১
Share: Save:

অচলাবস্থা কাটিয়ে কর্মিসভার সদস্যদের কাজে যোগ দেওয়ার আর্জি জানিয়ে শনিবার সকালে একটি নোটিস জারি করেছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, কাজে যোগ দেওয়া তো দূর, শনিবারই কর্মিসভার একটি পোস্টার ঘিরে বিতর্ক ছড়াল। বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় দফতরের সামনে, সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, উপাচার্যের অফিস-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এ দিন সেই পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। সেগুলিতে লেখা রয়েছে, বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ সন্ধান দিতে পারলে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে। যদিও বিশ্বভারতীর তরফে এমন পোস্টারকে ‘শিশুসুলভ’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের পোস্টারের নিন্দা করেছে বিশ্বভারতী ইউনিভার্সিটি ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশন (ভিবিইউএফএ)।

সব মিলিয়ে অচলাবস্থা কাটার কোনও লক্ষণ আপাতত দেখা যাচ্ছে না এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুক্রবারই কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে নোটিস দিয়ে কর্মিসভাকে বৈঠকে বসার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নোটিসে কোনও লোগো এবং কর্মিসভার তরফ থেকে কারা বৈঠকে যোগ দেবেন, তাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়নি—এই যুক্তি দেখিয়ে বৈঠক এড়িয়ে যায় কর্মিসভা। ফলে বিশ্বভারতীতে অচলাবস্থা সেই তিমিরেই রয়ে যায়।

এ সবের মধ্যেই শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপাচার্যের ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়ার পোস্টার ঘিরে নতুন করে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক কালে বিশ্বভারতীতে এ ধরনের পোস্টার নজিরবিহীন বলেই জানাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও মাস খানেক আগে উপ-রাষ্ট্রপতির সফরের দিন উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর বিনয় ভবন চত্বর লাগোয়া একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টার পড়তে দেখা যায়। কর্মিসভার সভাপতি গগন সরকারের দাবি, ‘‘আমরা জানি না কোথায় রয়েছেন উপাচার্য। দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের মনে হয়েছে, উপাচার্য কোথাও নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছেন। তাই আমরা এই ধরনের পোস্টার দিয়েছি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, কর্মিসভার সমস্যা সমাধানের ব্যাপারেও উপাচার্য এখনও পর্যন্ত সরাসরি আহ্বান জানাননি।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ‘‘উপাচার্য নিরুদ্দেশের যে পোস্টার দেওয়া হয়েছে, তা শিশুসুলভ এবং হাস্যকর। উপাচার্য যে থাকবেন না, তার নোটিস অনেক দিন আগেই বিশ্বভারতীর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, বিশ্বভারতীর নিজস্ব নিয়ম অনুসারে সঙ্গীত ভবনের অধ্যক্ষ নিখিলেশ চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে সমস্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ অনির্বাণবাবুর সংযোজন, এর পরেও এই ধরনের পোস্টার হাস্যকর বলে মনে হয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে। পাশাপাশি এ দিনই বিকেলে কর্তৃপক্ষ একটি নোটিস জারি করে অনুরোধ করেছেন, কোনও কর্মী যেন কর্মবিরতিতে শামিল হয়ে হাজিরা খাতায় সই না করেন। যাঁরা হাজিরা খাতায় সই করছেন, তাঁদের কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

অচলাবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর আবেদন জানিয়েছে বিশ্বভারতী ইউনিভার্সিটি ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনও। তবে, সংগঠনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য ও সম্পাদক সমরকুমার সাহা বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, কর্মিসভার কিছু কিছু দাবি অত্যন্ত অসঙ্গত এবং এ নিয়ে বিশ্বভারতীকে অচল রাখা অযৌক্তিক। এর সঙ্গে এ দিন কর্মিসভার পক্ষ থেকে উপাচার্যের উদ্দেশে অত্যন্ত কুরুচিকর পোস্টার ফেলা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Poster on VC Visva Bharati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE