উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলেই দিন পনেরো বাদে স্কুলে স্কুলে ইউনিট টেস্ট শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু তার প্রস্তুতি তো দূর, এখনও বই পায়নি পড়ুয়ারা। চলতি সপ্তাহের গোড়ায় বই বিলি শুরু হয়েছে মাত্র। অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বই নিয়ে এমন টালবাহানা দেখে ঘুম উবেছে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের।
সরকারি এবং সরকার অনুমোদিত স্কুলের পড়ুয়াদের প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সব বিষয়ের এবং নবম-দশম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি এবং অঙ্কের পাঠ্যবই সরবরাহ করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। অন্য সমস্ত বিষয়ের বই সময়ে স্কুলে পৌঁছে গেলেও গোল বেঁধেছে ইতিহাসের বই নিয়েই।
দেরির কারণ নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। শিক্ষা দফতরের জেলা আধিকারিক থেকে সর্বশিক্ষা মিশনের জেলার প্রকল্প আধিকারিকরা এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি। কিন্তু, ওই দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের প্রসঙ্গ অন্তর্ভুক্ত করতে গিয়েই এই দেরি। আগে পুরনো ইতিহাস বই বিলি করা হলেও ওই সিঙ্গুরের অন্তর্ভুক্তির কারণেই নাকি ফের বই জমা নেওয়া হয়েছে।
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির বীরভূম জেলা সম্পাদক আশিস বিশ্বাসের প্রশ্ন, ‘‘একটা রাজনৈতিক আন্দোলনকে পাঠ্য বিষয়ে ঢোকাতে গিয়েই ছেলেমেয়েদের এই ক্ষতি হল। এর দায় কে নেবে?’’ বস্তুত, সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গুরের কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার রায়দানের পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্যক্রমে সিঙ্গুরের প্রসঙ্গ থাকবে। অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইয়ে ওই আন্দোলনের উল্লেখ থাকারও সিদ্ধান্ত হয়।
বীরভূম জেলা শিক্ষা পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রেজাউল হক অবশ্য দেরির ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতেচাননি। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রমিত দাসের সাফাই, ‘‘কেন দেরি হল, এটা জেলাস্তরে বসে বলা সম্ভব নয়।’’
তবে কিছু কিছু স্কুলে এত দিন পুরনো বই অনুযায়ীই পড়ানো হয়েছে। এমনই একটি স্কুলের এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘বইতে নতুন বলতে তো কেবল ওই সিঙ্গুরের বিষয়টি। সেটা পরে পড়িয়ে দিলেই হল। বই নেই বলে তো আর বসে থাকা যায় না।’’ জেলা শিক্ষা দফতর থেকে অবশ্য আশ্বাস দেওয়া হয়েছে এ বার দ্রুত বই পোঁছে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy