Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাজনৈতিক ব্যানার সরানো শুরু

সরকারি কার্যালয় থেকে নেতামন্ত্রীদের ছবি সরানোর কাজ শুরু হল সোমবার। রবিবার লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই লাগু হয় আদর্শ আচরণ বিধি।

প্রস্তুতি: পুরুলিয়ায় জেলাশাসকের অফিস চত্বরে চলছে লোকসভা ভোটের সচেতনতা মূলক হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে। ছবি: সুজিত মাহাতো

প্রস্তুতি: পুরুলিয়ায় জেলাশাসকের অফিস চত্বরে চলছে লোকসভা ভোটের সচেতনতা মূলক হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে। ছবি: সুজিত মাহাতো

নিজস্ব  সংবাদদাতা
বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০৫:০৪
Share: Save:

সরকারি কার্যালয় থেকে নেতামন্ত্রীদের ছবি সরানোর কাজ শুরু হল সোমবার। রবিবার লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই লাগু হয় আদর্শ আচরণ বিধি। বিধি মোতাবেক সরকারি কার্যালয়গুলি থেকে মন্ত্রীদের ছবি সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের ছবি-সহ সরকারি প্রকল্পের প্রচারে টাঙানো হোর্ডিং-য়ে ছয়লাপ থাকত জেলাশাসকের দফতর প্রাঙ্গন। ছবিটা রাতারাতিই বদলে গেল। সরকারি প্রকল্পের প্রচারের হোর্ডিং থেকে গেলেও ‘আদর্শ আচরন বিধি’ মেনে বাদ দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। তবে বহু সরকারি অফিসে এখনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ছবি দেওয়া পোস্টার বা ফেস্টুন দেখা যাচ্ছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, নিয়ম অনুযায়ী ভোট ঘোষণা হওয়ার পরেই দ্রুত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ছবি সহ ফেস্টুন, ব্যানার বা পোস্টার সরিয়ে ফেলতে হবে। নির্বাচন ঘোষণার বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশংকর এস জেলার সমস্ত দফতরকে চিঠি দিয়ে এই বিষয়ে সতর্ক করেন। তা সত্ত্বেও এদিন বিকেল পর্যন্ত বেশ কিছু সরকারি দফতরের দেওয়াল বা সরকারি বাংলোর মূল দরজায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ছবি দেওয়া ফেস্টুন, পোস্টার দেখা গিয়েছে। বিকেলে বাঁকুড়া সদর থানার মূল দরজায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’-এর ব্যানার ঝুলতে দেখা গিয়েছে।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কার্যালয়ের দেওয়ালে ও সরকারি বাংলোর মূল দরজায় পালস পোলিও টিকাকরণের প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া পোস্টার দেখা গিয়েছে। সার্কিট হাউসের মূল দরজার সামনে যুব তৃণমূলের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া একটি ফেস্টুনও রয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধক হিসেবে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নাম লেখা ফলকও প্রকাশ্যেই দেখা যাচ্ছে। সেগুলি ঢাকা দেওয়া বা সরিয়ে ফেলার কোনও উদ্যোগ এদিন চোখে পড়েনি।

বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার বলেন, “ভোট ঘোষণার এক দিন পরেও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সরকারি জায়গায় টাঙিয়ে আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘন করছে প্রশাসন। এতে ভোটে প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। দ্রুত ছবিগুলি সরিয়ে ফেলা না হলে আমরা কমিশনে অভিযোগ জানাবো।”

সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “কেবল সরকারি জায়গা থেকেই নয়, পুলিশ ও প্রশাসনের ওয়েবসাইট থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সরিয়ে নেওয়া উচিত। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এই নিয়ম মানা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবি তুলছি।” জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রশাসন নিজের মত করে কাজ করবে। এনিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে আমাদের দলের সমস্ত স্তরের কর্মীদের আদর্শ আচরণ বিধি মেনে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে”।

বাঁকুড়ার জেলাশাসক বলেন, “নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরে প্রত্যেকটি দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ছবি দেওয়া যে কোনও পোস্টার, ফেস্টুন সরিয়ে দিতে হবে। প্রকল্প উদ্বোধনের নামের ফলকও আড়াল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম মেনে সব হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখছি।”

বিষ্ণুপুর শহরের সরকারি ভবনগুলি থেকেও এদিন নেতামন্ত্রীদের ছবি এবং ছবি সম্বলিত সরকারি প্রকল্পেগুলির পোস্টার-ব্যানার সরানোর কাজ শুরু হয়। মানস মণ্ডল, মহকুমা শাসক (বিষ্ণুপুর), বলেন, “সরকারী ও বেসরকারি জায়গায় যে সব রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞাপন ঝুলছিল তা সরিয়ে ফেলা হল। এই অভিযান চালু থাকবে। সাধারন মানুষের কাছ থেকে খবর পেয়েও আমরা খুলে নিয়ে আসছি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের ব্যানার। ইতিমধ্যেই মহকুমার প্রতিটি ব্লক প্রশাসনও কাজ শুরু করে দিয়েছে। আশাকরি দু একদিনের মধ্যেই অলিগলিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক পতাকাগুলিও খুলে ফেলা সম্ভব হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Banner
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE