Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত ঘরে চোলাই, গুড়-জল

মাস পেরোনোর মুখে ফের অভিযান হল মুরারই ১ ব্লকের রাজগ্রাম পঞ্চায়েতে ঢুড়িয়া গ্রামে।

নেশা: নষ্ট করা হচ্ছে চোলাই। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নেশা: নষ্ট করা হচ্ছে চোলাই। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মুরারই শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৬
Share: Save:

মাস পেরোনোর মুখে ফের অভিযান হল মুরারই ১ ব্লকের রাজগ্রাম পঞ্চায়েতে ঢুড়িয়া গ্রামে। শুক্রবারের ওই অভিযানে বহড়াগাছি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত ঘর থেকে ১৫৫ লিটার চোলাই, ৬০০০ লিটার গুড়-জল, ৪২৫ কেজি গুড় উদ্ধার হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা অভিযান চলে। যদিও চোলাই কারবারিদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ওই অভিযানে বিডিও (মুরারই) ছাড়াও ছিল পুলিশ, আফগারি দফতর।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য ঢুড়িয়া গ্রাম দীর্ঘ দিন ধরেই চোলাই মদ তৈরিতে দক্ষতা অর্জন করেছে। বীরভূমের মুরারই থানার শেষ গ্রাম হল ঢু়ড়িয়া। অন্য পারেই ঝাড়খণ্ড। অভিযোগ, দুই রাজ্যের মাঝে থাকা এক গ্রামের মাঠে চলে চোলাই তৈরির কারবার। পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে অভিযান হলেই মুহূর্তে এ রাজ্যে ঢুকে পড়েন কারবারিরা। আবার এ রাজ্যের পুলিশ অভিযান চালালে কারবারিরা বিনা বাধায় ঢুকে প়ড়়েন ঝাড়খণ্ডে।

এলাকাবাসী জানান, বহড়াগাছি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া চোলাই সঙ্গে সঙ্গেই নষ্ট করে প্রশাসন। কথা বলে জানা গেল, গ্রামের চোলাই ব্যবসায়ীরা ভাত, গুড়, বাকর পচিয়ে তার সঙ্গে নেশার দ্রব্য মিশিয়ে বাড়ির মধ্যে উনুন বানিয়ে বড়ো হাঁড়িতে ফুটিয়ে চোলাই তৈরি করে। পরে ড্রামে ভরে গ্রামের কোনও জায়গায় লুকিয়ে রাখে। রাতের অন্ধকারে কারবারিরা মদগুলিকে প্লাস্টিক ব্লাডারের মধ্যে ভরে রাখে। ভোরের আলো ফোটার

আগে বিভিন্ন জেলা তো বটেই, পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদের নানা জায়গায় পৌঁছে দেয়।

সরকারি মদের চেয়ে দামে অনেকটাই কম বলে খেটে খাওয়া দুঃস্থ পরিবারের অনেকে চোলাই খেয়ে থাকেন। কিন্তু, এটা বোঝেন না, তা খাওয়া কতটা ঝুঁকির। গত বছরের নভেম্বরের শেষে নদিয়ার শান্তিপুরে বিষমদে ১২ জনের মৃত্যুর পরে জেলার নানা প্রান্তে অভিযান শুরু হয়েছিল। হয়েছিল সচেতনতা মূলক নানা প্রচারও। তার পরেও ছবি যে বিশেষ পাল্টায়নি এ দিনের অভিযানেও স্পষ্ট হল। এ দিন গ্রামের একটি কাঠ বোঝাই করা জায়গা থেকে পঞ্চাশ টিন চোলাই উদ্ধার হয়। কাঠ বোঝাই করা জায়গা দেখে সন্দেহ হওয়ায় একটু খুঁজতেই বেরিয়ে পরে চোলাই ভর্তি টিন।

বিডিও (মুরারই ১) নিশীথভাস্কর পাল বলেন, “গ্রামের মহিলাদের সোমবার বিডিও অফিসে ডেকেছি। দু’জন বিধবা মহিলা আছেন। ওঁনাদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছি। গ্রামে সচেতনতা মূলক প্রচারও চালানো হবে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, গ্রামের মহিলাদের নিয়ে আরও বেশি সংখ্যায় স্বনির্ভর দল গঠন করে বিভিন্ন কুটির শিল্পের প্রতি আগ্রহী করার চেষ্টা চলছে। একশো দিনের কাজ ও সরকারি সহায়তা দিয়ে গ্রামটিকে এই পেশা থেকে অন্য পেশায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হবে বলেও খবর। রামপুরহাট চক্রের ডেপুটি আফগারি আধিকারিক সুহৃদ রায় বলেন, ‘‘আমাদের দফতর গ্রামে গিয়ে সচেতনতা শিবির করে চোলাই কারবারিদের সচেতন করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Excise department Liquor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE