সচিত্র: পুরুলিয়া সার্কিট হাউসে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
একশো দিনের কাজে দিনে ৫০ হাজার শ্রমদিবসের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকেই এই লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে ব্লকগুলিকে কাজ করতে হবে বলে শুক্রবার এক বৈঠকে বিডিওদের জানিয়ে দিল জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘মানুষকে কাজ দেওয়ার পাশাপাশি, সম্পদ সৃষ্টি করার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। একটা কথা সবাইকে গুরুত্ব দিতে হবে, বেশি মানুষকে কাজ দিতে হবে। তা হলে কাজের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা অসম্ভব নয়।’’
এ দিন সার্কিট হাউসে একশো দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে ওই বৈঠক হয়। সেখানে কাজের গতি বাড়াতে ওই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে আরও সক্রিয় হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের পাশাপাশি সমস্ত ব্লকের বিডিও, যুগ্ম বিডিও, এক জন করে বাস্তুকার ও যে সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই প্রকল্পে যুক্ত, তাদের ডাকা হয়েছিল।
একশো দিনের প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, বর্তমানে এই জেলায় ৩৫-৩৬ হাজার শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। গড়ে কাজ দেওয়া গিয়েছে ৩২ দিন। সেখানে রাজ্যের গড় ৩১ দিন।
তবে জেলাশাসক ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের জানিয়ে দিয়েছেন, পুরুলিয়ার মতো জেলায় যেখানে মানুষকে কাজের খোঁজে ভিন্রাজ্যে যেতে হয়, সেখানে এই প্রকল্পে কাজের গড় সন্তোষজনক নয়। তাঁর যুক্তি, এই জেলার জল ও জলের সঙ্গে মাটির উপরি ভাগ গড়িয়ে যায়। এই প্রকল্পকে ঠিক মতো কাজে লাগাতে পারলে জল সংরক্ষণ ও মাটি রক্ষা করা যাবে। ওই ব্যাপারে মানুষকে কাজ দিয়ে তাঁদেরও ভিন্ জেলায় যাওয়া আটকানো সম্ভব।
দেশের নানা রাজ্যের শুষ্ক এলাকায় কী ভাবে বৃষ্টির জল ধরে রাখা হচ্ছে, তাতে সেই এলাকা কতটা বদলেছে, তা ভিডিয়োর মাধ্যমে দেখানো হয়। ‘ঊষরমুক্তি’ প্রকল্পের সফল প্রয়োগের মাধ্যমে শুষ্ক এলাকার ভূপ্রকৃতি কতটা বদলে গিয়েছে, সেই বদলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রামীণ জনজীবনে কতটা পরিবর্তন এসেছে, দেখানো হয় তা-ও। লক্ষ্য স্থির রেখে পুরুলিয়াতেও একই ভাবে একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে ঊষরমুক্তি প্রকল্পের সঙ্গে কী ভাবে মিশিয়ে দেওয়া সম্ভব, বোঝানো হয়। এ ছাড়া, জেলায় গত দশ বছরের বৃষ্টিপাতের পরিসংখ্যান দেখিয়ে যে ভাবে বৃষ্টি কমে আসছে, তা মাথায় রেখে এই প্রকল্পে গুরুত্ব আরোপের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের সার্থক রূপায়ণের মাধ্যমেই বৃষ্টির জল ধরে রাখা সম্ভব।’’ একশো দিনের প্রকল্পকে কাজে লাগিয়ে জেলার ঢালু, টাঁড়, বাইদ, কানালি ও বহাল— সমস্ত ধরনের জমিতে ছোট-বড় খাল কেটে, জল সঞ্চয় করে গাছ লাগিয়ে সেখানকার চেহারা বদলে দেওয়া যেতে পারে। পরীক্ষামূলক ভাবে পুরুলিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে এই প্রকল্পে জল ধরে রাখা, ফলের বাগান তৈরি করে যে সুফল পাওয়া গিয়েছে তা-ও জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy