Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নজরে নেতা-নিরাপত্তা

নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের খুনের ঘটনায় সতর্ক পুরুলিয়া প্রশাসন। সোমবার বিকেলে সার্কিট হাউসে তৃণমূলের কয়েকজন বিধায়ক, মন্ত্রী এবং জেলা পরিষদের  প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

বৈঠক: পুরুলিয়া সার্কিট হাউসে জনপ্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

বৈঠক: পুরুলিয়া সার্কিট হাউসে জনপ্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের খুনের ঘটনায় সতর্ক পুরুলিয়া প্রশাসন। সোমবার বিকেলে সার্কিট হাউসে তৃণমূলের কয়েকজন বিধায়ক, মন্ত্রী এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

সূত্রের খবর, বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার, পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া। ছিলেন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো এবং সন্ধ্যারানি টুডু, জেলা সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, পাঁচ বিধায়ক-সহ তৃণমূলের কয়েকজন জেলা নেতা এবং জেলা পরিষদের কয়েকজন সদস্য।

আকাশ বলেন, ‘‘এটি রুটিন বৈঠক। তবে যেহেতু একটা ঘটনা ঘটেছে, তাই যাঁদের দেহরক্ষী রয়েছে, তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে।’’ বৈঠকের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বর্তমানে পুরুলিয়ায় যাঁদের দেহরক্ষী রয়েছেন, তাঁদের নিয়েই নিরাপত্তা পর্যালোচনা হয়েছে। ওঁদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন আছে, কোন হুমকি রয়েছে কিনা, এমন বিষয় আলোচনা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তাই ওঁদের গতিবিধিও বাড়বে। সেই বিষয়গুলি নিয়েই এই পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল নেতা-বিধায়কদের নিরাপত্তারক্ষীদেরও এদিন তলব করা হয়েছিল। তাঁদের নিয়ে বিশেষ ‘ক্লাস’-ও হয়। ভিআইপি-দের সঙ্গে থাকাকালীন তাঁরা কী অবস্থায় থাকেন, ভিআইপি-রা গাড়ি থেকে নামলে দেরহী কী ‘পজিশন’ নেন, ভিড়ের মাঝে তাঁরা কী ভাবে ভিআইপি-দের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেন, এমন বিষয় খুঁটিয়ে দেখা হয়।

গত শনিবার সত্যজিৎবাবুকে যখন গুলি করা হয়, তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন না দেহরক্ষী। সেই প্রেক্ষিতে এদিন পুরুলিয়ার তৃণমূল নেতা-মন্ত্রী-জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তারক্ষীদের ক্লাসে তলব করার বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, এদিন নিরাপত্তারক্ষীদের সার্ভিস রিভলবারও পরীক্ষা করা হয়।

পুরুলিয়ার ৩৮০ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ঝাড়খণ্ড সীমান্ত। বিধায়ক, নেতা-মন্ত্রী বা জন প্রতিনিধিদের অনেক কাজেই সীমান্ত লাগোয়া এলাকা এবং ঝাড়খন্ডে যেতে হয়। সূত্রের খবর, সীমান্ত এলাকা বা ঝাড়খণ্ডে গেলে পুলিশকে আগে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে।

সত্যজিৎবাবুকে খুন হতে হয়েছে তাঁর বিধানসভা এলাকাতেই। তাই ‘নিজের এলাকায় কিছু হবে না’— এমন ধারণা ত্যাগ করতে হবে বলে এদিনের বৈঠকে বার্তা দেওয়া হয়েছে নেতা-মন্ত্রী-জন প্রতিনিধিদের। বৈঠক উপস্থিত এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘এটা ঘটনা যে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই দেহরক্ষীদের বিষয়টা ধর্তব্যের মধ্যে আনি না। এবার সেটা মাথায় রাখতে হবে।’’

পঞ্চায়েত ভোটে জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকে বিজেপি ভাল ফল করেছে। তবে ওই এলাকায় বিজেপির অনেক জন প্রতিনিধি দলবদল করায় পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি দখল করেছে তৃণমূল। ওই সমস্ত এলাকায় তৃণমূল নেতৃত্বের ‘গতিবিধি’ এবং নিরাপত্তার বিষয়টিও এদিন আলোচনায় উঠেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE