Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
কড়া কথায় কাজ না হওয়ায় পদক্ষেপ

একশো দিনে কাজ কম, শো-কজ চিঠি

এই বৈঠকে জেলা প্রশাসনের কর্তারা পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ কর্মীদের পরিষ্কার ভাষাতেই জানিয়ে দেন, কাজের গতি বাড়াতে হবে। এর পরেই জেলাশাসক কাজের গতি না বাড়ালে প্রয়োজনে জরিমানা করার হুঁশিয়ারি দেন।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২১
Share: Save:

একশো দিনের কাজের প্রকল্পে এত দিন বৈঠকে শুধু কড়া কথাই শুনিয়েছিলেন পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের কর্তার। এ বার কঠিন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জেলার যে সব গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ দেওয়ার গড়, জেলার কাজের গড়ের নীচে রয়েছে, সেই সব গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে শো-কজ নোটিস পাঠাচ্ছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের কাজের গড়, জেলার কাজের গড়ের চেয়ে কম, তার সন্তোষজনক জবাব না পেলে তলব করা হতে পারে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের কর্মীদের।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি এই জেলার ১৭০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই প্রকল্পের কাজ কেমন চলছে, তা খতিয়ে দেখতে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসে প্রশাসন। দেখা যায়, জবকার্ডধারীদের পরিবার-পিছু রাজ্যে কাজ দেওয়ার গড় যেখানে ২৭.৩ দিন, সেখানে পুরুলিয়া পরিবার-পিছু কাজ দিতে পেরেছে ২৩.১ দিন।

এই বৈঠকে জেলা প্রশাসনের কর্তারা পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ কর্মীদের পরিষ্কার ভাষাতেই জানিয়ে দেন, কাজের গতি বাড়াতে হবে। এর পরেই জেলাশাসক কাজের গতি না বাড়ালে প্রয়োজনে জরিমানা করার হুঁশিয়ারি দেন।

চলতি সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সেই গড় অবশ্য খানিকটা বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে, পরিবার পিছু কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যের গড় ৩২.৫ দিন। সেখানে পুরুলিয়া জেলা কাজ দিতে পেরেছে ৩৩.৭ দিন।

প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, যদিও পুরুলিয়ার থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৪০.৪ দিন), পশ্চিম মেদিনীপুর (৩৯.৩ দিন), হাওড়া (৩৮.১ দিন), পূর্ব বর্ধমান (৩৬.৪ দিন), হুগলি (৩৬.১ দিন), জলপাইগুড়ি (৩৫ দিন), ঝাড়গ্রামের (৩৩.৯ দিন) মতো জেলাগুলি এগিয়ে রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘এই জেলাগুলি যদি পুরুলিয়ার থেকে এগিয়ে থাকতে পারে, তাহলে কেন পুরুলিয়াও এগোতে পারবে না? কাজের সন্ধানে তো পুরুলিয়ার মানুষকে ভিন্‌ জেলা ও অন্য রাজ্যে যেতে হয়।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, পুরুলিয়ার ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত জেলার গড়ের থেকে পিছিয়ে রয়েছে। কিছু কিছু পঞ্চায়েতের কাজ দেওয়ার পরিমাণ জেলার গড়েরও অর্ধেকের কাছাকাছি।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে এই প্রকল্পে পিছিয়ে থাকার কারণে পুরুলিয়াকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। জানা গিয়েছে, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, পুরুলিয়ায় কাজ দেওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন মানুষকে কাজ দেওয়া যাচ্ছে না?

জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘যে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত জেলার কাজের গড়ের থেকে পিছিয়ে রয়েছে, সেই পঞ্চায়েতের কর্মীদের শো-কজ করা হচ্ছে। কেন তাঁদের কাজ দেওয়ার গড় জেলার গড়ের থেকে নীচে, তা জানতে চাওয়া হবে। পঞ্চায়েতকে এর জবাব দিতে হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে পঞ্চায়েতের কর্মীদের তলব করা হবে।’’

জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি যাতে কাজের গড় আরও বাড়ানো যায়। মানুষকে কী ভাবে আরও কাজ দেওয়া যায়, সে চেষ্টা সবাইকে করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE