Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
১০ ঘণ্টা বৈঠক করলেন শান্তিরাম

বান্দোয়ানে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব-কাঁটা

বিধানসভা নির্বাচন এখনও ঢের দেরি। অথচ এর মধ্যেই বিধানসভা দখলের লক্ষ্যে সভা শুরু করে দিল তণমূল। রবিবার বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকার দু’টি জায়গায় সভা করেন দলের জেলা সভাপতি তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। বান্দোয়ান ও বোরো মিলে তিনি ১০ ঘণ্টা ধরে সভা করেছেন। কিন্তু এত আগে প্রচার শুরু করা হল কেন? পুরুলিয়া জেলার মধ্যে বান্দোয়ান বিধানসভা এখনও সিপিএমের দখলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

বিধানসভা নির্বাচন এখনও ঢের দেরি। অথচ এর মধ্যেই বিধানসভা দখলের লক্ষ্যে সভা শুরু করে দিল তণমূল। রবিবার বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকার দু’টি জায়গায় সভা করেন দলের জেলা সভাপতি তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। বান্দোয়ান ও বোরো মিলে তিনি ১০ ঘণ্টা ধরে সভা করেছেন।

কিন্তু এত আগে প্রচার শুরু করা হল কেন? পুরুলিয়া জেলার মধ্যে বান্দোয়ান বিধানসভা এখনও সিপিএমের দখলে। সে জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘জেলার মধ্যে বান্দোয়ান বিধানসভাতে সিপিএম এখনও থেকে গিয়েছে। আগামী নির্বাচনে জেলা থেকে সিপিএমকে মুছে ফেলার লক্ষ্যে এখন থেকে কর্মীদের মাঠে নামার কথা বলেছি। এ ছাড়া, জেলা সদর থেকে বান্দোয়ানের দূরত্ব অনেকটা। কর্মীদের কথা সরাসরি শুনব বলে বান্দোয়ান ও বোরোয় দু’জায়গায় সভা করেছি।’’

তৃণমূল সূত্রে খবর, সিপিএমকে এখান থেকে মুছে ফেলতে দলের মধ্যে দ্বন্দ্বকে আগে মেটাতে হবে। সে জন্য এত আগে থেকে এখানে বৈঠক করলেন মন্ত্রী। রবিবার বেলা ১১টা থেকে বান্দোয়ানের এ.এন.ঝা হাইস্কুলে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে ব্লক কমিটির সদস্য, পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, জেলা পরিষদের সদস্য, জেলা স্তরের নেতাকর্মীরা হাজির ছিলেন। এখানে বৈঠক শেষ হতে বেলা চারটে হয়ে যায়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা সভাপতিকে কাছে পেয়ে দলের মধ্যে নানা টানাপোড়েন, সম্পর্কের ওঠানামা— সবই আলোচনায় উঠে আসে। স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অভিযোগ উঠে এলেও জেলা সভাপতি দলের সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়েছেন। দলীয় কর্মীদের প্রতি সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ ছিল পুরুলিয়া জেলায় সিপিএমের একমাত্র বিধায়ক রয়েছে বান্দোয়ানে। এ বার এই আসন সিপিএমকে দেওয়া যাবে না। এজন্য কর্মীদের নিজেদের মধ্যে সব বিবাদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ে নামতে হবে।

বান্দোয়ানের বৈঠক সেরে শান্তিরামবাবু বোরোয় যান। এখানে নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক শুরু হয়। চলে রাত দশটা পর্যন্ত। এখানেও তাঁকে দলীয় কোন্দলের কথা শুনতে হয়। কর্মীদের সমন্বয়ের ওপর জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। দলীয় নেতাদের একাংশের মতে, বান্দোয়ান বিধানসভা নিয়ে জেলা সভাপতিকে এত দীর্ঘ বৈঠক করতে ইতিপূর্বে দেখা যায়নি। তা ছাড়া, বান্দোয়ান বিধানসভার বোরো, বান্দোয়ান ও বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতি ও বেশিরভাগ পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে থাকলেও বিধায়ক সিপিএমের। শাসকদলের কাছে এই কাঁটা হয়ে রয়েছে। ফলে যে কোনও মূল্যে বান্দোয়ানের বিধায়ক পদ দখলের জন্য নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বকে আগে মেটানো ভাল মনে ১০ ঘণ্টা ধরে সভা করেন মন্ত্রী।

সরকারি দ্বন্দ্বের কথা স্বীকার না করলেও দলের জেলা নেতা নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘শুধু বান্দোয়ান নয়। একে একে অন্যান্য বিধানসভার কর্মীদের নিয়েও বৈঠকে বসা হবে। সে ক্ষেত্রে ঠিক হয়েছে, সেই এলাকার কর্মী ও নেতাদের জেলায় ডেকে পাঠানো হবে। বিশেষ ক্ষেত্রে ওই বিধানসভা এলাকাতেও বৈঠক হতে পারে।’’

তণমূলের এই বৈঠককে কটাক্ষ করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণীন্দ্র গোপ। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূলের জেলা সভাপতি দলীয় কোন্দল মেটাতে এসেছিলেন। এ ছাড়া, এলাকায় নতুন করে গোলমাল পাকানোর ইন্ধন জুগিয়ে গেলেন। বান্দোয়ানে এ বারও আমরাই জিতব। বরং দলীয় কোন্দলের জেরে তৃণমূল জেলায় আরও আসন হারাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE