তাদের যৌথ মালিকানায় থাকা জায়গায় চিত্রশিল্পী সুরেন্দ্রনাথ করের নাতি সৌমিত্র কর রেস্তোরাঁ এবং লজিংয়ের ব্যবসা খুলেছেন বলে অভিযোগ জানাল বিশ্বভারতী। যে জায়গা ঘিরে অভিযোগ, সেটি হাতিপুকুরের কাছে বাঁধগোড়া মৌজার অন্তর্গত। বিশ্বভারতীর যুগ্ম কর্মসচিব তথা কেন্দ্রীয় সরকার নিযুক্ত সম্পত্তি আধিকারিক অশোককুমার মাহাতো জানান, এ বিষয়ে
সৌমিত্রবাবু কোনও অনুমতি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নেন নি। গত মার্চ মাসে তাঁকে চিঠি পাঠিয়ে ‘অবৈধ নির্মাণ’ এবং ‘অবৈধ ভাবে’ রেস্তোরাঁ ও লজ ব্যবসা চালানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানানো হয়। তাতেও কোনও লাভ হয়নি। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশেরও দ্বারস্থ হয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ওই জায়গা আমাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। প্রামাণ্য দলিল পর্যন্ত আছে। পুরসভাকে কর দিই আমরা। বিশ্বভারতীর এক চিলতে অংশও এখানে নেই।’’
সুরেন্দ্রনাথ কর ছিলেন বিশ্বভারতীর অন্যতম স্থপতি। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতিপুকুরের কাছে ওই অংশে নির্মাণের খবর পেয়ে সৌমিত্রবাবুকে গত ১৫ মার্চ একটি চিঠি দিয়ে সব বন্ধ করার জন্য বলা হয়। ওই চিঠির প্রতিলিপি মহকুমাশাসক (বোলপুর), ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককেও পাঠানো হয়। গত ১৮ জুন বোলপুর ও শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে মহকুমাশাসক এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে জানানো হয়েছে। অশোকবাবু জানান, ওই এলাকা থেকে কিছু দূরেই প্রতিমা, শ্রীসদন ছাত্রীনিবাস রয়েছে। ২৫ মিটারের মধ্যে ছাত্রাবাস। সঙ্গীতভবন ও কলাভবন ক্যাম্পাসও বেশি দূরে নয়। এই অবস্থায় ওই জায়গায় ‘অবৈধ’ নির্মাণ এবং রেস্তোরাঁ চালানোর ফলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, সঙ্গীতভবন সংলগ্ন অংশেও একটি রেস্তোরাঁ চলছে। এখনই যদি হাতিপুকুরের ওই অংশে পুরো বিষয়টি বন্ধ না করা যায়, ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে।
নিরাপত্তা এবং ক্যাম্পাসের অসুবিধা প্রসঙ্গে সৌমিত্রবাবু জানান, এলাকা দিয়ে পূর্ত দফতরের একটি রাস্তা হবে বলে তিনি শুনেছেন। ঐতিহ্যময় ছাত্রাবাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়াও আরও কী কী সমস্যা হতে পারে বা সেই দিকগুলি দেখা হয়েছে কিনা তা জানিয়ে ফেব্রুয়ারিতে তাঁরা একটি স্মারকলিপি বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে দিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে উত্তর পাননি। সৌমিত্রবাবুর ক্ষোভ, ‘‘এই রাস্তা দিয়ে যখন দিনরাত ভারী গাড়ি যাতায়াত করবে, তখন কি কোনও সমস্যা হবে না?’’
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের দখল করা জমি পুনরুদ্ধার করতে চাইছি। অবৈধ কাজকর্ম যত তাড়াতাড়ি বন্ধ হবে তত ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy