থইথই: বৃষ্টি হলেই এমন অবস্থা হয় বলে বাসিন্দাদের নালিশ। নিজস্ব চিত্র
জলাধারের বিপুল জল ধরে রেখেছে লকগেট। কিন্তু মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের সেই লকগেটের উপরের রাস্তায় মাঝেমধ্যেই জলে জমে থাকায় উঠেছে প্রশ্ন, ‘দেখাশোনা ঠিকঠাক হচ্ছে তো?’ এলাকার বাসিন্দারা পরিস্থিতিক জন্য ওই ব্যারাজের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা কংসাবতী সেচ দফতরকে দুষছেন। যদিও জল জমে থাকার কথা মানতে নারাজ সেচ দফতর।
কংসাবতীর জলের উপরে দক্ষিণ বাঁকুড়া তো বটেই, ঝাড়গ্রাম জেলার একটা অংশের সেচ ব্যবস্থা নির্ভরশীল। জলাধার থেকে ছাড়া জল বিভিন্ন সেচ খালের মধ্যে দিয়ে দুই জেলার বিস্তীর্ণ গ্রামে পৌঁছে যায়। কিন্তু ওই রাস্তায় জল জমে থাকায়, ব্যারাজের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। ব্যারাজের রাস্তায় জল যাতে না জমে সে জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বাসিন্দাদের দাবি, কয়েকশো মিটার দীর্ঘ ওই ব্যারাজের রাস্তায় অল্প বৃষ্টি হলেই জল জমে যাচ্ছে। তাতে ব্যারাজের ক্ষতির আশঙ্কা দেখছেন তাঁরা। যদিও ওই জলাধারের দায়িত্বে থাকা কংসাবতী সেচ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌরভ ভৌমিক দাবি করেছেন, ‘‘কখনও সখনও ব্যারাজের রাস্তায় যে জল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, তা বৃষ্টির নয়। রাস্তার পাশ দিয়ে পানীয় জলের পাইপলাইন গিয়েছে। মাঝেমধ্যে পাইপ থেকে জল বেরিয়ে জমে যায়।’’
পাইপলাইনের জল যদি জমতে পারে, তা হলে বৃষ্টির জল দাঁড়াবে না কেন? জবাব মেলেনি। তবে এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, ব্যারাজে নিকাশিতেই মূল সমস্যা। জল যাতে জমতে না পারে, সে জন্য ব্যারাজে রাস্তার পাশে গর্ত রয়েছে অনেকগুলি। কিন্তু নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সেই সব গর্ত বুজে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
সুশান্ত কবিরাজ নামে স্থানীয় এক হাইস্কুলের শিক্ষক বলেন, ‘‘প্রতিদিনই ব্যারাজের রাস্তা দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করি। বেশ কিছু দিন ধরেই দেখছি, বৃষ্টি হলেই সেতুর উপরে জল জমে যাচ্ছে। অথচ, গর্তগুলো পরিষ্কার করে দিলেই জল নীচে পড়ে যাবে অনায়াসে। এইটুকু কাজও করা হচ্ছে না।’’
রানিবাঁধের বিধায়ক তথা ‘মুকুটমণিপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র ভাইস চেয়ারপার্সন জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে বৃষ্টির পরে সন্ধ্যায় ওই রাস্তা দিয়ে ফেরার সময়ে দেখি, জল জমে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় কী কারণে জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, বিষয়টি দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলব।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, কংসাবতী প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয় ১৯৬৪ সালে। তারপরে ধীরে ধীরে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ হয়। কুমারী ও কংসাবতী নদীর জল নিয়ে তৈরি এই জলাধারের ব্যাপ্তি মোট ৫২.৭৫ বর্গ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ জলধারণ ক্ষমতা ৫৫৪ ফুট। জলস্তর ৪৩৪ ফুট উঠলেই বিপদসীমা বলে ধরা হয়।
ব্যারাজের সংস্কার নিয়ে সক্রিয়তা দাবি করছেন বাসিন্দারা। সেচ দফতরের অবশ্য দাবি, তাঁদের নজর রয়েছে। প্রয়োজনমতো সংস্কারও হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy