প্রতীকী ছবি
বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গোঁসাইবাড়িকে বিষ্ণুপুর ব্লকের আদর্শ গ্রাম ‘ঘোষণা’ করা হয়েছিল। এই ‘আদর্শ গ্রামেই’ দেখা গিয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। বুধবার গাঁধীজয়ন্তী উপলক্ষে প্রশাসনিক কর্তারা গিয়েছিলেন ভরা পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে। সেখানকার ২৫টি আদিবাসী পরিবারকে মৎস্য চাষের মাধ্যমে স্বনির্ভর করে তুলতে ‘আতমা’ প্রকল্পে এক কুইন্টাল রুই, কাতলা, মৃগলের চারা বিলি করেন তাঁরা। তখনই তাঁদের সামনে পানীয় জলের সঙ্কটের কথা তুলে ধরেন গোঁসাইবাড়ির রবি হাঁসদা, শ্রীকান্ত মুর্মু, মঙ্গলা মুর্মু, চিন্তা মুর্মুর মতো গ্রামবাসী। জল নিয়ে তাঁদের অভিযোগের কথা শোনেন জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ মথুর কাপড়ি এবং বিষ্ণুপুর ব্লকের সহ-কৃষি আধিকারিক।
বিষ্ণুপুর ব্লকের ভড়া পঞ্চায়েতের শাল-জঙ্গল ঘেরা গ্রাম গোঁসাইবাড়ি। সেখানে ২৫টি আদিবাসী পরিবারের ১৫০ সদস্যই দিনমজুর। ভাগচাষ করে যা মেলে তাতে বছরের অর্ধেক সময় ভাত জোটে তাঁদের। বাকি সময় তাঁরা দিনমজুরের কাজ করেন। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামে পানীয় জলের তিনটি কল থাকলেও দু’টি বিকল। একমাত্র সচল কলটি থেকে অনেক সময় বেরোয় ঘোলা জল।
পানীয় জলের প্রসঙ্গ উঠলে ভৈরব মুর্মু, কালীচরণ বেসরার মতো গ্রামবাসীরা বলেন, ‘‘বর্ষাতেই এই অবস্থা! তা হলে গরমে কী হয়, অনুমান করে নিন।’’ শ্রীকান্ত মুর্মু, বাদল মুর্মুরা বলেন, ‘‘এক বছর আগে তিন কিলোমিটার দূরে ভড়া গ্রাম থেকে আমাদের গ্রাম পর্যন্ত পানীয় জলের পাইপ বসানো হয়েছিল। এক মাস জল পেয়েছিলাম। তার পরে আর জল আসে না।’’ তাঁদের কথায়, ‘‘পানীয় জলের জন্য কষ্টে আছি আমরা সকলেই। শুনেছি আমাদের গ্রামকে নাকি ‘আদর্শ গ্রাম’ করা হয়ছে। অথচ, ‘আদর্শ গ্রামে’ পানীয় জল পেতে কালঘাম ছোটে।’’
পানীয় জলের সমস্যা প্রসঙ্গে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা ‘আতমা’ প্রকল্পের বিষ্ণুপুর ব্লকের চেয়ারম্যান মথুরবাবুর মন্তব্য, ‘‘গ্রামবাসী আগে জলের সমস্যার কথা জানাননি। এ দিন গ্রামে যাওয়ার পরে জানতে পারলাম। দু’দিনের মধ্যে চাপাকলগুলি সারিয়ে দিতে বলেছি পঞ্চায়েত প্রধানকে। পাইপলাইনে জলের ‘প্রেশার’ বাড়লেই পানীয় জল গ্রামে পৌঁছে যাবে।’’ মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডলের আশ্বাস,‘‘ সমস্যা খতিয়ে দেখে দ্রুত গ্রামে পানীয় জল পৌঁছনোর সব ব্যবস্থা হচ্ছে।’’
বিষ্ণুপুর ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা তাপস ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সমস্যা আছে। পুজোর পরেই চাষের জন্য সৌরশক্তি-চালিত সাবমার্সিবল পাম্প বসাবে কৃষি দফতর। তাতে গ্রামবাসীর পানীয় জলের কিছুটা সুরহা হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আতমা প্রকল্পে গোঁসাইবাড়ি গ্রামকে ব্লকের ‘আদর্শ গ্রাম’ ঘোষণা করে সেখানে নানা উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। গ্রামের মহিলারা মাশরুম চাষ শিখে স্বনির্ভর হয়েছেন। চিনে বাদাম চাষও করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy