Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ভাঁড়ে জমা জল দেখে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্যকর্তা

সোমবার নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর না থাকলেও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, জল জমে থাকতে পারে এমন জায়গাই আসলে মরণফাঁদ। রবিবার বিকেলে দুবরাজপুরের ওই ওয়ার্ডের একটি বাড়িতে ঢুকে মাটির পাত্রে জমা জলে মশার এক গাদা লার্ভা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ডেপুটি সিএমওএইচ (২) শকুন্তলা সরকার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

প্রায় বাড়িতেই এক ছবি। ভাঙা চিনে মাটির কাপ, মাটির ভাঁড়, প্লাস্টিকের বোতল, ভাঙা মগ বা মাটির টবে জমে রয়েছে বৃষ্টির জল! যা মশাদের বংশ বিস্তারের নিশ্চিত আস্তানা।

দুবরাজপুরের সাত নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছে আগেই। জেলায় মোট ১১ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সাত জনই ওই ওয়ার্ডের। রোগ প্রতিরোধে মেডিক্যাল ক্যাম্প চলছে। মশা নিধন অব্যাহত। চলছে ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রচারও। তবুও বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতার মাত্রা খুব একটা বেড়েছে, এমন নজির নেই।

সোমবার নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর না থাকলেও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, জল জমে থাকতে পারে এমন জায়গাই আসলে মরণফাঁদ। রবিবার বিকেলে দুবরাজপুরের ওই ওয়ার্ডের একটি বাড়িতে ঢুকে মাটির পাত্রে জমা জলে মশার এক গাদা লার্ভা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ডেপুটি সিএমওএইচ (২) শকুন্তলা সরকার। তাঁর পরামর্শ ছিল, ‘‘ওই জলে কেরোসিন তেল ফেলে কিছু সময় রেখে পাত্রটিকে নষ্ট করে দিন।’’ ওই পাত্রটি হয়তো নষ্ট করা হয়েছে, কিন্তু প্রায় বাড়িতেই এমন অনেক মরণফাঁদ তৈরি হয়ে রয়েছে, যেখান থেকে ডেঙ্গির বাহক মশারা দিব্য বংশ বিস্তার করে চলেছে।

ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ নাজিরউদ্দিনও মানছেন সে কথা। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে এত প্রচার চলছে। রোগ এতটা ছড়িয়ে পড়ার পরেও বাসিন্দারা যদি সচেতন না হন, তা হলে কী করণীয় সত্যিই বুঝতে পারছি না।’’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি মনে করছেন, ‘‘প্রচারের ব্যাপকতা আরও বাড়াতে হবে। বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। না হলে রোগের প্রকোপ কমানো যাবে না।’’

গত বুধবার জেলায় প্রথম যে তিন জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল, তাদের মধ্যে কবিতা খাতুন নামে বছর চোদ্দোর এক ছাত্রী ছিল। যার বাড়ি দুবরাজপুরের ওই ওয়ার্ডেই। দুবরাজপুর পুর এলাকার এই ওয়ার্ড অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। প্রায় ৬ হাজার বাসিন্দার বাস। পরে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয়ে সবচেয়ে ভরসাযুক্ত পরীক্ষা ম্যাক অ্যালাইজা টেস্টেও আরও ছ’জনের রক্তে মেলে ডেঙ্গির জীবণু। যা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগ বাড়ায়। রোগের প্রকোপ কামাতে সব রকমের পদক্ষেপের ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা। তার মধ্যে বাড়ির আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা এবং বৃষ্টির জল জমতে না দেওয়াও ছিল।

আদপে সে সব পরামর্শ মানা হচ্ছে না। আরও একটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। সেটা হল যে ওয়ার্ডে ডেঙ্গি ছড়িয়েছে, তার পাশের সব ওয়ার্ডও যেন একই রকম সতর্ক হয়। সিএমওএইচ বলছেন, ‘‘ভৌগোলিক সীমা মেনে রোগ ছড়াবে না। সেই জন্যই সতর্কতা জরুরি।’’

পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলছেন, ‘‘সব ওয়ার্ডে মশা মারার স্প্রে চলছে। ৬টি স্প্রেয়ার কাজে লাগানো হয়েছে। মাইকে প্রচার চলছে। স্বাস্থ্য কর্মীদেরও সচেতনতা বাড়াতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE