যুবতীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। বোলপুরের মকরমপুরের মঙ্গলবারের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, রাতে অভিযোগ দায়ের হয়। নিহতের স্বামী,
শাশুড়ি, দুই ননদ ও এক নন্দাইকে আটক করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মঙ্গলবার সকাল ন’টা নাগাদ কল্পনা দাসের (২৫) গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। প্রাণে বাঁচতে কল্পনা পাশের ক্যানেলে ঝাঁপ দেন। তার শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মৃত্যু হয়। প্রতিবেশীরাই অভিযুক্তদের আটকে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
নিহতের দাদা কৃষ্ণ দাস জানান, আট বছর আগে বোলপুরের শুঁড়িপাড়ার কল্পনার সঙ্গে বিয়ে হয় মকরমপুরের কার্তিক দাসের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই নানা বিষয়ে শারীরিক নির্যাতন করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সন্ধ্যায় এলাকায় গিয়ে পড়শিদের সঙ্গে কথা বলেও উঠে এল একই অভিযোগের কথা। সকলেরই ক্ষোভ মূলত মৃতার শাশুড়ি এবং দুই ননদের উপরে। কৃষ্ণের দাবি, ‘‘এর আগেও বোনকে একবার বিষ খাইয়ে, একবার গলায় দড়ি দিয়ে খুন করার চেষ্টা করেছিল ওরা। কোনও ভাবে বোনকে বাঁচিয়ে নিয়েছিলাম। এ বার পারলাম না!’’
কল্পনার তিন সন্তান রয়েছে। এক মাস আগেই ছোট মেয়ের জন্ম হয়েছে। এইটুকু বয়সেই মা-হারা হল একরত্তি মেয়েটা। তা দেখে চোখের জল বাঁধ মানেনি অনেকের। কল্পনার বাপেরবাড়ির আত্মীয়েরা বলেন, ‘‘অশান্তি করে বাড়ি চলে এলে বোঝাতাম। আবার কিছু দিন পরেই শ্বশুরবাড়ি ফিরে যেত। তার মাসুল যে ওকে এ ভাবে দিতে হবে বুঝতে পারিনি। তা হলে হয়তো ফিরে যেতেই নিষেধ করতাম।’’ প্রতিবেশীরাও জানালেন, প্রায়ই কল্পনাকে মারধর করত শাশুড়ি ও ননদেরা। ছাড়াতে গেলে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিত।
প্রতিবেশী কাজল মাল জানান, সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ফের মারধর শুরু করে। কান্নার আওয়াজ পেয়ে তাঁরা স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানান। তিনি এসে মিটমাট করে দিয়ে যান। কাজলের অভিযোগ, ‘‘এর পর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ পাড়ার অধিকাংশ লোক দিনমজুরের কাজে বেরিয়ে গেলে কল্পনার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় তার শাশুড়ি ও দুই ননদ।’’ লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বোলপুর পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy