Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে পাড়ুইয়ের ভেড়ামারিতে

দফায় দফায় গুলি-বোমার লড়াইয়ের পর, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ভেড়ামারিতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাল জেলা পুলিশ। স্বাভাবিক হচ্ছে গ্রামের স্কুলে পঠনপাঠন। পড়ুয়াদের আশেপাশের স্কুল, কলেজে যথারীতি যেতে দেখা গিয়েছে। শুক্রবার সকালে ধান জমিতে কেউ কেউ সার দিয়েছেন। কেউ আবার সেচের কাজে ব্যস্ত থেকেছেন দিনভর।

গ্রামের পাহারা।  —নিজস্ব চিত্র।

গ্রামের পাহারা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়ুই শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:১৯
Share: Save:

দফায় দফায় গুলি-বোমার লড়াইয়ের পর, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ভেড়ামারিতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাল জেলা পুলিশ। স্বাভাবিক হচ্ছে গ্রামের স্কুলে পঠনপাঠন। পড়ুয়াদের আশেপাশের স্কুল, কলেজে যথারীতি যেতে দেখা গিয়েছে। শুক্রবার সকালে ধান জমিতে কেউ কেউ সার দিয়েছেন। কেউ আবার সেচের কাজে ব্যস্ত থেকেছেন দিনভর।

গ্রাম লাগোয়া ক্যানেল বরাবর রাস্তায় জেলা পুলিশ এবং র্যাফ-কমব্যাটকে টহল দিতে দেখা যায়। কার্যত বাহিনী দেখেই স্বস্তি ফিরেছে হাজার তিনেক বাসিন্দার ওই গ্রামে। যদিও, এ দিনও গ্রামের রাস্তা শুনসানই ছিল। গ্রাম থেকে বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে পশ্চিম মাঠের ঈদগাহের দিকে এগোলেই, যত্রতত্র বোমার সুতলি ও পোড়া কাগজের টুকরো আর একাধিক গুলির খোল পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আর শুক্রবার ভোরে এক গাদা খোল কুড়িয়ে নিয়ে গিয়েছেন পুলিশ কর্মীরা। কিন্তু এখনও জমির আল পথে, ঈদগাহের লাগোয়া পশ্চিম মাঠে পড়ে আছে গুলির খোল।” জানা গেল, ভেড়ামারি এলাকায় অশান্তির জেরেই বৃহস্পতিবার রাতের ধর্মীয় আলোচনা ‘জালসা’ বন্ধ রাখা হয়েছে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, পুলিশ সরলেই ফের ঝামেলা হবে এলাকায়।

এলাকা দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাড়ুই থানার একাধিক এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি উভয় দলের কর্মী-সমর্থক এবং তাঁদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের মধ্যে বোমাবাজিতে উত্তেজনা ছড়ায়। এলাকায় বিকেলের দিকে দুষ্কৃতীদের পিছু হটাতে গিয়ে ভেড়ামারিতে সংঘর্ষ বাধে জেলা পুলিশের সঙ্গে। উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়। শেষমেষ দুষ্কৃতীদের পিছু হটাতে সক্ষম হয় জেলা পুলিশ। ওই গ্রামে গভীর রাত পর্যন্ত চলে কড়া পুলিশ নজরদারি। ভেড়ামারি-সহ আশেপাশের এলাকায় তল্লাশি অভিযানে নামে পুলিশ উদ্ধার করে বোমা এবং বোমার মশলা। এ দিন দুর্গাপুর থেকে সি আইডি এবং বম ডিস্পোজাল দল এসে পাড়ুই থানার অদূরে সেগুলি নিস্ক্রিয় করেছে।

তৃণমূলের সাত্তোর অঞ্চল সম্পাদক শেখ মুস্তফার অভিযোগ, “স্থানীয় বিষ্ণুখণ্ডা এলাকায় বিজেপি এবং তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দলীয় কার্যালয়ে বোমা মেরেছে। লুটপাট করেছে তৃণমূলের সদস্যা গৌরি বাগদীর বাড়ি-সহ গ্রামের তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের কুড়িটি বাড়িতে। লুটপাট চালিয়েছে, আগুন ধরানো হয়েছে একটি মুর্গির খামারে। গোটা বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট থানায়।

এ দিকে ওই ঝামেলার পর থেকে বিষ্ণুখণ্ডা গ্রাম প্রায় পুরুষ শূন্য। এ দিনও ওই গ্রামে একই চিত্র দেখা গেল। স্থানীয় বাসিন্দা জয়রুন বিবি, আফরোজা বিবি, মজিফা বিবিরা জানান, মুখে গামছা বাঁধা দুষ্কৃতীরা গ্রামে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে। দলীয় কার্যালয়, সাধারণ মানুষের ঘর-বাড়িতে ঢুকে লুটপাট করেছে। যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, “বহিরাগত দুষ্কৃতী এনে তৃণমূল হামলা চালিয়েছে। পাড়ুই থানার একাধিক এলাকায় আমাদের দলের কর্মী -মর্থকেরা তৃণমূল সন্ত্রাসের জন্য গ্রামছাড়া।” এসপি মুকেশ কুমার বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

parui raf combat district police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE