Advertisement
০২ মে ২০২৪

ইংরেজবাজার ভুগছে জলের কষ্টে, ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা

গরমের আঁচ বাড়তেই জল সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে মালদহের ইংরেজবাজার শহরের একাংশ এলাকা জুড়ে। শহরের অধিকাংশ টিউবওয়েল অকেজো হতে শুরু করেছে। যার ফলে পুরবাসী সমস্যা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। তাই পুরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ফুঁসছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, গরম পড়লেই মালদহে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৬ ০২:২৪
Share: Save:

গরমের আঁচ বাড়তেই জল সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে মালদহের ইংরেজবাজার শহরের একাংশ এলাকা জুড়ে। শহরের অধিকাংশ টিউবওয়েল অকেজো হতে শুরু করেছে। যার ফলে পুরবাসী সমস্যা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। তাই পুরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ফুঁসছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, গরম পড়লেই মালদহে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেয়। গ্রামগঞ্জের মতো পুরসভা একাংশ এলাকাতে এখনও পানীয় জলের জন্য ভরসা করতে হয় টিউবওয়েলের উপরেই। আর টিউবওয়েলগুলি অকেজো হয়ে পড়ায় পানীয় জলের জন্য ছুটতে হচ্ছে অন্যা এলাকায়। তবুও সমস্যা মেটাতে কোনও হেলদোল নেই পুর-কর্তৃপক্ষের।

পানীয় জলের সমস্যার বিরুদ্ধে পুরসভার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধী দলগুলিও। পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী সিপিএমের সুতপা ঘোষ বলেন, ‘‘শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ডে জলের গতি খুবই কম। এ ছাড়া কয়েক বছর আগে বহু নতুন নতুন এলাকায় শহরে যুক্ত হয়েছে। সেই সব এলাকায় এখনও পাইপ লাইনের জল পৌঁছয়নি। ওই এলাকার মানুষদের টিউবওয়েলের জল পান করতে হয়। আমরা পুরসভা কর্তৃপক্ষকে বহুবার জানিয়েছি। তবুও তাঁরা কোন কর্ণপাত করেননি।’’

বিজেপির কাউন্সিলর সঞ্জয় শর্মাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘শহরে গ্রামগঞ্জের অনেক ভালো পানীয় জলের পরিষেবা মেলে। সাধারণ মানুষকে সুষ্ঠ পরিষেবা দিতে ব্যর্থ তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা কর্তৃপক্ষ।’’

যদিও বিরোধীদের অভিযোগ মানতে নারাজ ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘শহরে পানীয় জলের সমস্যা তেমন নেই। এছাড়া শহরের জলের জন্য কৌতুয়ালিতে জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। তা চালু হয়ে গেলেও পানীয় জলের আরও সুপরিষেবা পাবেন সাধারণ মানুষ।’’

মালদহ জেলার গ্রাম বাংলার মতো শহরেও পানীয় জলের চরম সমস্যা রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে শহর তৈরি হলেও এখনও শহরের বহু ওয়ার্ডে পাইপ লাইনের জল পৌঁছয় না। সেই সব এলাকাগুলির মানুষদের পানীয় জল হিসেবে অগভীর নলকুপের জল পান করতে হয়। এ ছাড়া যে সমস্ত ওয়ার্ডে পাইপ লাইনের জল রয়েছে, সেই ওয়ার্ডগুলিতেও সমস্যা রয়েছে। অভিযোগ, পাইপলাইনের জলের গতি খুব কম থাকে। ফলে সরু সুতোর মতো জল পড়ে কলগুলিতে। পানীয় জল নেওয়ার জন্য বাড়ির মহিলাদের দীর্ঘ ক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এক বোতল জল ভরতেই মিনিট কুড়ি সময় গড়িয়ে যায়।

এমন চিত্র ইংরেজবাজার পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডেই দেখা যায়। ইংরেজবাজার পুরসভার ২০, ২১, ২২, ২৩, ৩, ২, ১ প্রভৃতি ওয়ার্ডেই দেখা যায় সরু সুতোর মতো কল থেকে জল পড়তে। নিউ গয়েশপুর, চুনিয়া পাড়া, বিদ্যাসাগার পল্লি, গয়েশপুর, সর্বমঙ্গলা পল্লি, সুভাষ পল্লি, মহানন্দা পল্লি, মাধবনগর, বিশ্বনাথ মোড়, ঘোড়াপীড় প্রভৃতি এলাকায় এমন দৃশ্য রোজকার। এ ছাড়া এখনও পুরসভার বেশ কিছু ওয়ার্ডে এখনও পাইপ লাইনের জল পৌঁছয়নি। পুরসভার ২৩ নম্বর ওর্য়াডের কুলদীপ মিশ্র কলোনি, নেতাজি কলোনি, জাহাজ ফিল্ড, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সানি পার্ক, এয়ারভিউ কমপ্লেক্স ও ২৫ নম্বর ওর্য়াডের কুলি পাড়া, কৃষ্ণপল্লি, সিং পাড়া প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা পাইপ লাইনের জল থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তাঁদের এখনও টিউবওয়েলের জল পান করতে হয়। শীতকালে তেমন সমস্যা না হলেও এপ্রিলের শুরু থেকে চরম আকার ধারন করে পানীয় জলের সমস্যা। গরমে ভূগর্ভস্থ জলস্তর নিচে নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলগুলি দিয়ে ঠিক মতো জল পড়ে না। ওই এলাকা গুলির টিউবওয়েল গুলি অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাউন্সিলরদের জানিয়েও কোন কাজ হয় না। যার ফলে পানীয় জলের জন্য বাড়ির কাজ ফেলে অন্যত্র ছুটতে হয় বলে দাবি করেছেন শহরের বাসিন্দা মৃণাল চৌধুরী, অংশুমান ঝাঁ প্রমুখেরা। তাই গরম পড়তেই জলের সন্ধানে ছুটতে হয় পার্শ্ববর্তী এলাকা গুলিতে। এই বিষয়ে পুরকর্তৃপক্ষের উচিত এখন থেকেই সমস্যার সমাধান করা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water crisis English Bazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE