সাত দিনের মাথায় ফের একবার ঘেরাও হলেন জলপাইগুড়ির গরালবাড়ির ফোদরপাড়া বি এফ পি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এবারও অভিযোগ সেই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে৷ তাঁকে গালিগালাজও করা হয় বলেও অভিযোগ৷ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও অপমানিত প্রধান শিক্ষক প্রলয় কুমার সাহা এ দিন সাফ জানালেন, সমস্যা না মেটা পর্যন্ত তিনি আর স্কুলেই যাবেন না ৷
সাত দিনের মাথায় পর পর দু’বার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও থাকতে হওয়ায় খানিকটা হলেও টনক নড়েছে প্রশাসনের ৷ সমস্যা সমাধানে খুব শীঘ্রই প্রধান শিক্ষক ও বিক্ষোভকারীদের নিয়ে বৈঠকে বসা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) ৷ অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা দাবি করেছেন, তারা এ দিনের ঘেরাওতে সামিল হলেও, আসলে ওই কর্মসূচিটা অভিভাবকদেরই ছিল ৷
স্কুলের একটি নতুন নির্মাণকে ঘিরে ফোদরপা়ড়া বিএফপি স্কুলে অনেক দিন ধরেই সমস্যা চলছে ৷ প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, “ওদের পছন্দের শ্রমিকদের কাজে নেওয়ার দাবিতে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা ওই নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল৷
কিন্তু কেন ওদের কথা শুনে আমি সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করলাম না তার জন্য গত ১৩ জুন ওরা আমায় সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেরাও করে রেখেছিল৷ এমনকি আমাকে দিয়ে মুচলেকাও লিখিয়েছিল ৷ তারপর গত শনিবার প্রথম স্কুলে যাই ৷ কিন্তু সে দিন কিছু হয়নি৷ সোমবার স্কুলে যেতেই ওরা আবারও আমায় বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখল ৷ সঙ্গে চলল গলিগালাজ ৷”
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় অঞ্চল কমিটির সদস্য জামিনার রহমানের দাবি , প্রধান শিক্ষককে এ দিন মূলত অভিভাবকরাই ঘেরাও করেছিলেন৷ তাঁরা শুধুমাত্র সঙ্গে ছিলেন৷” তাঁর কথায়, “গত ১৩ জুন প্রধান শিক্ষক আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, স্কুলের নির্মাণ কাজটি নিয়ে খুব শীঘ্রই তিনি আমাদের সঙ্গে প্রশাসনের কর্তাদের আলোচনার ব্যবস্থা করবেন৷ তা না হওয়াতেই অভিভাবকরা আজ ক্ষেপে গিয়ে তাঁকে ঘেরাও করে৷” স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি দুপুর তিনটের সময় ঘেরাও মুক্ত হন প্রধান শিক্ষক ৷
এ দিকে সাত দিনের মাথায় একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষককে দু’দুবার ঘেরাওয়ের ঘটনায় এ দিন টনক নড়ে প্রশাসনেরও ৷ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) তৃপ্তি গুহ বলেন, “আমরা খুব শীঘ্রই প্রধান শিক্ষক ও আন্দোলনকারীদের নিয়ে আলোচনায় বসে বিষয়টি মেটাব৷” সূত্রের খবর, প্রশাসনের এক আধিকারিক প্রধান শিক্ষকের মোবাইল মারফৎ আন্দোলনকারীদেরও ওই আশ্বাস দিলে ঘেরাও ওঠে৷
তবে গোটা ঘটনা চরম ক্ষুব্ধ ও অপমানিত প্রধান শিক্ষক প্রলয়বাবুর সাফ কথা, “অনেক হয়েছে ৷ চাকরি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস ৷ আর ভাল লাগছে না৷ তাই সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আর স্কুলেই যাব না৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy