প্লাস্টিকের প্যাকেটবন্দি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী।
কেন্দ্রীয় সরকার একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ করতে চেয়েছেন। খুবই ভাল উদ্যোগ, সন্দেহ নেই। কিন্তু বাস্তবে আমাদের জীবন থেকে প্লাস্টিকের ব্যবহার এই মুহূর্তে পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব কি? বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। কারণ, বর্তমানে প্লাস্টিকের প্যাকেট ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সঙ্গে প্রতিনিয়ত জড়িয়ে আছে। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ছাড়াও আমাদের চর্তুদিকেই প্লাস্টিকের ছড়াছড়ি। পরিবেশের ক্ষতির দিক থেকে এই ধরনের প্লাস্টিকও কোনও অংশে কম যায় না। যে কোনও মুদির দোকানের দিকে তাকালে দেখা যাবে সামনে নানা সামগ্রীর প্লাস্টিকের প্যাকেট ঝুলছে। বিস্কুট, কেক, চিপস, মশলাপাতি, ডিটারজেন্ট পাউডার, সাবান, তেল, ডাল, নুন-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবই বিক্রি হয় প্লাস্টিকের প্যাকেটে। এগুলো কি রাতারাতি বন্ধ করা সম্ভব? উত্তর ‘না’। আশ্চর্যের ব্যাপার, সরকার নিজে প্লাস্টিকের প্যাকেট বন্ধ করার জন্য আবেদন করেছে। আবার সরকারি দুধের প্যাকেট তৈরি হছে প্লাস্টিকে। বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে খাবারের প্যাকেট দেওয়া হয় প্লাস্টিকে। এ যেন সর্ষের মধ্যেই ভূত।
পাশাপাশি আরও একটি বিষয় ভেবে দেখা দরকার। প্লাস্টিকের সঙ্গে ভারতের অর্থনীতির বিষয়টাও জড়িয়ে আছে। বহু শ্রমিক কাজ করেন প্লাস্টিক শিল্পে। প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ হলে বহু শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন। সরকারের রাজস্ব আয়ও কমে যাবে।
তাই প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করার আগে প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরি করতে হবে। বিভিন্ন সামগ্রীকে কাগজ বা পরিবেশবান্ধব অন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থায় মোড়কের ব্যবস্থা করে বাজারজাত করতে হবে। এর জন্য কোম্পানিগুলোর কাছে আবেদন করতে হবে। তাদের সময় দিতে হবে। একটি অতি প্রচলিত কেক বহু বছর ধরে কাগজে মুড়ে বিক্রি হচ্ছে। তার জনপ্রিয়তা এবং বিক্রিও যথেষ্ট ভাল। সুতরাং ইচ্ছে থাকলে এই ধরনের নানা সামগ্রীর ক্ষেত্রে কাগজের মোড়ক ব্যবহার করা যায়।
মানুষের দায়িত্ববোধ এবং সচেতনতাও জরুরি। দোকানদাররা যদি প্লাস্টিকের ব্যাগে জিনিস দেওয়া বন্ধ করেন, তাহলে খদ্দেররা বাধ্য হবেন বাড়ি থেকে ব্যাগ নিয়ে যেতে। এইভাবে ছোট ছোট পদক্ষেপ নিলে ধীরে ধীরে পরিবেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করা সম্ভব। তবে তার জন্য সময় দিতে হবে। রাতারাতি তা সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy