Advertisement
১১ মে ২০২৪

দিল্লি ডায়েরি

আইপিএল-এ দিল্লির টিম নিয়ে এ বার রাজধানীর বাড়তি উৎসাহ দেখে ঋষভ পন্থকেও প্রচারে নামিয়েছিল কমিশন।

প্রেমাংশু চৌধুরী, অগ্নি রায়
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

দেশ উত্তাল, কিন্তু ভোটে মন নেই দিল্লিবাসীর

মানালির পথ ধরেন। ভোট পর্যন্ত দিল্লিতে থেকে যাওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রচার করেছিল, ‘পহলে ভোট জরুরি, ফির শিমলা-মুসৌরি’। দিল্লির গদিতে কে বসবেন, তা নিয়ে দেশ উত্তাল হলেও দিল্লির ভোটারদের মধ্যে বরাবরই ভোট দিতে উৎসাহ কম দেখা যায়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। ভোটারদের উৎসাহ দিতে কোথাও নিজামি ভাইদের কাওয়ালি বা মোহিত চৌহানের গান, কোথাও বাইক মিছিল। নয় নয় করে ১৩.৫ কোটি টাকা খরচ করেছে নির্বাচন কমিশন। গরমে রেহাই দিতে ভোটকেন্দ্রে ঠান্ডা জলের ব্যবস্থা থাকবে বলেও ঢাক পেটানো হয়েছিল। তার পরেও ১২ মে-র ভোটগ্রহণের পরে দেখা গেল, ভোট পড়েছে মাত্র ৬০.৩৮ শতাংশ। পাঁচ বছর আগের লোকসভা ভোটে পড়েছিল ৬৫.০৯ শতাংশ ভোট। আইপিএল-এ দিল্লির টিম নিয়ে এ বার রাজধানীর বাড়তি উৎসাহ দেখে ঋষভ পন্থকেও প্রচারে নামিয়েছিল কমিশন। তাতেও মন গলল না দিল্লিবাসীর।

বিদ্যাসাগর

শাহি দিল্লিতে কোথায় পাওয়া যাবে বিদ্যাসাগরের ‘বর্ণপরিচয়’? কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হল, তার পরেই জরুরি ভিত্তিতে দিল্লি এসেছিলেন রাজ্যসভার তিন তৃণমূলী সাংসদ। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার আগে তাঁদের সামনে হাইকম্যান্ডের পক্ষ থেকে ছিল এক শব্দের ছোট্ট ব্রিফ—‘আবেগ’! সেই আবেগকে পূর্ণতা দিতেই মাথায় আসে বর্ণপরিচয়ের দু’টি কপি সামনে রেখে সাংবাদিক সম্মেলন করার পরিকল্পনা। শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল গোলমার্কেটের কাছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক বিপণিতে। তবে তাতেও বিদ্যাসাগরকে নিয়ে উত্তর ভারতের সাংবাদিকদের কাছে কতটা আবেগ তৈরি করা গেল, তা নিয়ে সংশয়। বিদ্যাসাগর কী এবং কেন, তা দিল্লিকে বোঝাতে শুধু সাংসদরাই নয়, বাংলা থেকে আসা সাংবাদিকরাও ব্যস্ত!

হঠাৎ দেখা

তুঘলক লেন থেকে সদ্য বেরিয়েছেন রাহুল গাঁধী। সঙ্গে দিল্লির কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন, গন্তব্য দিল্লির ভোটদান কেন্দ্র। কমলার নেতৃত্বে তৃতীয় লিঙ্গের তিন জন হঠাৎ পথরোধ করলেন কংগ্রেস সভাপতির। কমলা জানালেন, তাঁরা রাজস্থানের চুরু থেকে এসেছেন তাঁদের নেতাকে আশীর্বাদ করতে। এই ভোটে তিনি জয়ী হন, এই তাঁদের প্রার্থনা। মাকেনকে ইশারায় দাঁড়াতে বলে তাঁদের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ কথা বললেন রাহুল, জানতে চাইলেন রাজস্থানের পরিস্থিতি, শুনলেন তাঁদের অভাব অভিযোগের কথাও। ভোট কেন্দ্রের দিকে পা বাড়ানোর আগে কিছু টাকা কমলাকে অনুদান হিসাবেও দিয়ে গেলেন।

মাহেন্দ্রক্ষণ: দিল্লির নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনের রাজপথ। ১২ মে-র ছবি।

বাবা ও মেয়ে

ফটোগ্রাফার বাবা আর তাঁর পড়ুয়া কন্যা যে ঝড় তুলবেন, কে জানত! অশোক লাভাসা ও তাঁর কন্যা অবনীকে নিয়ে দিল্লির আমলা মহলে এখন রোজ আলোচনা। যতই নালিশ জমা পডুক, নির্বাচন কমিশন মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করতে নারাজ। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে সায় দেননি নির্বাচন কমিশনার অশোক লাভাসা। মোদীর নোট বাতিলের সময় তিনি ছিলেন অর্থ সচিব। পক্ষে হোক বা বিপক্ষেই, কোনও দিন মুখ খোলেননি। চাকরি করার সময় সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়তেন ক্যামেরা কাঁধে। মুসৌরিতে আইএএস-এর প্রশিক্ষণের সময় থেকেই ছবি তোলার নেশা। তাঁর ছবির প্রদর্শনীও হয়েছে। মেয়ে অবনী যখন আইএএস হলেন, কেউ অবাক হননি। অবনী এখন লেহ-র ডেপুটি কমিশনার ও নির্বাচন আধিকারিক। বাবা যখন দিল্লির নির্বাচন কমিশনে বসে বলছেন তিনি রাজনৈতিক চাপের সামনে মাথা নোয়াবেন না, মেয়ে তখন লেহ-তে বসে ভোটে গন্ডগোল দেখলেই নালিশ ঠুকছেন। সেনা জওয়ানদের ভোটে গরমিল দেখে সোজা সেনা-কর্তাদের চিঠি লিখে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। অশোকের বন্ধুরা বলছেন, এই না হলে ‘বাপ কি বেটি’!

গর্বিত: অশোক লাভাসা

উৎসব

রমজান মাস মানেই পুরনো দিল্লিতে খাবারের মেলা। চাঁদনি চকের গলিতে শিক কাবাবের গন্ধ, রুমালি রুটিতে জড়িয়ে পাতে পড়তেই হাপুস-হুপুস। শাহি টুকরা, বা প্রাণ জুড়োতে রুহ-আফজার সঙ্গে তরমুজের টুকরো। কুরেশি কাবাব, আল-জাওহার-এর সামনে ভিড়। গরম জিলিপি, রাবড়ি, আম কুলফিতে সব ধর্ম, জাতি মিলেমিশে একাকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Diaries Delhi Diaries Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE