Advertisement
২৯ মার্চ ২০২৩
Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি: কংগ্রেসের প্রকৃত ক্ষমতা তবে কার হাতে

গত দশ দিনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল দুই সিনেমা। এক দিকে পঠান ও অন্য দিকে বিবিসি-র বিতর্কিত তথ্যচিত্র ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন।

Picture of Delhi Diary.

দিল্লি ডায়েরি। ফাইল চিত্র।

প্রেমাংশু চৌধুরী, অগ্নি রায় এবং অনমিত্র সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৪:৩৯
Share: Save:

মল্লিকার্জুন খড়্গে কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার পর রাজনৈতিক শিবিরে অবধারিত গুঞ্জন ছিল, গান্ধী পরিবারই বকলমে দলকে চালাবেন। সম্প্রতি খড়্গের সংসদীয় অফিসে বিরোধী দলের সাংসদদের বৈঠকে বিষয়টি কিছুটা প্রকাশ্যেই চলে এল। আদানি-কাণ্ডে সরকারকে চাপে ফেলার কৌশল স্থির হয়ে যাওয়ার পরেও, আগামী দিনের কর্মসূচি কংগ্রেস পরের দিন জানাবে বলে ঘোষণা করেন খড়্গে। তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তখন তাঁকে চেপে ধরেন এই বলে যে, কংগ্রেসের সর্বাধিনায়ক খড়্গেকে কেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে? তিনি কি কারও নির্দেশের অপেক্ষায়! খড়্গে নাকি দাবি করেছেন, এ সব সত্যি নয়। তাঁর হাতেই পুরো ক্ষমতা। কিন্তু পরের দিন কী সিদ্ধান্ত হবে সেটিও নাকি সে দিন খোলসা করতে পারেননি কংগ্রেস সভাপতি।

Advertisement

কেবলই ছবি?

সংসদ ভবনে শিবসেনার দলীয় কার্যালয়ে এত দিন তিন জনের ছবি ঝুলত— বালাসাহেব ঠাকরে, তস্যপুত্র উদ্ধব ও তস্যপুত্র আদিত্য। কিন্তু শিবসেনা এখন ভেঙে দু’টুকরো। একটি উদ্ধব ঠাকরের গোষ্ঠী। অন্যটি একনাথ শিন্দের গোষ্ঠী। একনাথ এখন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভার শিবসেনা সাংসদরা প্রায় সকলেই তাঁর সঙ্গে। রাজ্যসভার সাংসদরা উদ্ধবের গোষ্ঠীতে। দুই গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে রফায় আসায় এখন কার্যালয়ের দেওয়ালে একনাথ শিন্দে ও তাঁর রাজনৈতিক গুরু আনন্দ দিঘের ছবি ঝোলানো হয়েছে। কিন্তু দিঘেও যে বালাসাহেবের শিষ্য ছিলেন। তাই বালাসাহেব বা তাঁর পুত্র ও পৌত্রের ছবি সরানো হয়নি।

Picture of Eknath Shinde and Anand Dighe at Shiv Sena office in Parliament.

মিটমাট: সংসদ ভবনে শিবসেনার কার্যালয়ে একনাথ শিন্দে ও আনন্দ দিঘের ছবি।

প্রত্যাবর্তন

Advertisement

এক সময় বেঙ্গালুরু মেট্রো রেল নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন। কিন্তু আর্থিক বিষয়ক সচিব পদের দায়িত্ব নেওয়ার পরে অজয় শেঠ কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। এতটাই শরীর খারাপ ছিল যে, নিজেই আর অর্থ মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে চাইছিলেন না। তাঁর বিকল্প কে হতে পারেন, তা নিয়ে খোঁজও শুরু হয়। সেই সঙ্গে সাময়িক ভাবে অন্য এক জনকে দায়িত্ব দিয়ে অজয় শেঠকে চিকিৎসা করে ফেরার সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কর্নাটক ক্যাডারের এই আইএএস অফিসার শুধু কঠিন রোগ সারিয়ে ফিরেই এলেন না, গোটা বাজেটের কাজও সেরে ফেললেন। দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে সপ্রশংস ফিসফাস চলছে— সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে সপাট প্রত্যাবর্তন একেই বলে!

শ্রীঅন্ন

বাংলায় যাহা ‘দাদা’, তামিলে তাহাই ‘আন্না’। তামিলনাড়ুর সাংসদরা একে অপরকে আন্না বলেই ডাকেন। জোয়ার-বাজরা-রাগির মতো খাদ্যশস্য বা মিলেট নিয়ে এখন মোদী সরকারের অন্দরমহলে বিরাট উৎসাহ। বাজেটেও মিলেট চাষে উৎসাহ দিতে চেয়ে অর্থমন্ত্রী যাবতীয় মিলেটকে ‘শ্রীঅন্ন’ তকমা দিয়েছেন। বাজেট বক্তৃতায় যত বারই তিনি দক্ষিণী উচ্চারণে ‘শ্রীঅন্ন’ বলেছেন, তত বারই নড়েচড়ে বসেছেন তামিলনাড়ুর সাংসদরা। তার পরে হেসে গড়িয়ে পড়েছেন।

ছদ্মবেশী

গত দশ দিনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল দুই সিনেমা। এক দিকে পঠান ও অন্য দিকে বিবিসি-র বিতর্কিত তথ্যচিত্র ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন। কট্টর গেরুয়া শিবিরের কাছে দু’টিই ছিল সমান পরিত্যাজ্য। গেরুয়া শিবিরের একটি বড় অংশ আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পঠান বয়কট করার। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সিনেমা হলে গিয়ে পঠান দেখবেন না তাঁরা। কিন্তু মোবাইলে যদি পঠান সিনেমার লিঙ্ক চলে আসে? অনেকেই চুপিচুপি সেই লিঙ্ক খুলে দেখলেন। কিন্তু তাতে পঠান কোথায়! বিবিসি-র তথ্যচিত্র চালু হয়ে যাচ্ছে সেই লিঙ্কে। গেরুয়া শিবিরের মতে, এটি বাম ছাত্র শিবিরের কীর্তি।

Picture of PM Narendra Modi.

অস্বস্তি: ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন

ঐতিহাসিক

বাজেটের দু’দিন পরে রেল মন্ত্রকের বিভিন্ন ঘরে আলাদা আলাদা রাজ্যের সাংবাদিকদের বসানো হয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব প্রতিটি ঘরে গিয়ে জানাচ্ছেন, কোন রাজ্যের রেল প্রকল্পে এ বারের বাজেটে কত বরাদ্দ পেল। পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিকদের ঘরে গিয়ে জানালেন, পশ্চিমবঙ্গের রেল প্রকল্পে বরাদ্দ এ বার ‘ঐতিহাসিক’। পরে জানা গেল, প্রতিটি রাজ্যের সাংবাদিকদের কাছেই এক দাবি করেছেন রেলমন্ত্রী। এক রাজ্যের সাংবাদিকরা অন্য রাজ্যগুলি কে কত অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে, জানতে চেয়েছিলেন। বিস্তর তদ্বিরের পরেও রাজ্যভিত্তিক সেই বরাদ্দ জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.