ফাইল চিত্র।
উদ্যাপনে আড়ম্বর দেখা গেল বেশ। প্রতি বছরই উৎসাহে উদ্যাপিত হয় শিক্ষক দিবস। স্বাভাবিক নিয়মেই বছর বছর আড়ম্বরও বেড়ে যায় হয়তো। কিন্তু শিক্ষক দিবসের এই আয়োজন কি বিশেষ কোনও উপলব্ধিকে পরিব্যাপ্ত করে? এই প্রশ্ন কিন্তু সঙ্গত ভাবেই মাথা তুলতে পারে। উত্তর দেওয়ার জন্য আমরা কতটা প্রস্তুত ভেবে দেখা দরকার।
‘শিক্ষা’ শব্দের তাৎপর্য কার কাছে কেমন, তার উপরেই সম্ভবত নির্ভর করে শিক্ষক দিবসের উপলব্ধিটা, নির্ভর করে শিক্ষকের মূল্যায়নটাও। শিক্ষা আসলে গোটা জীবনটাই, শেখার সুযোগ আজীবন, আর জীবনের প্রতিটি পর্বই আসলে শিক্ষক।
শিক্ষা বা শিক্ষক সম্পর্কে এই বৃহত্তর উপলব্ধি হয়তো অনেকটা পরে আসে, জীবনের অনেকটা পথ অতিক্রান্ত হওয়ার পরে হয়তো এই তাৎপর্য ধরা দেয়। কিন্তু শিক্ষার একেবারে গোড়ার দিককার পর্বটা শুরু হয়েছিল যে ক্লাসরুম থেকে, সেই ক্লাসরুমেই সুনির্মল বসুর একটা কবিতা সেই প্রাতঃকালে এই পাঠটা দিয়েছিল। আকাশের কাছ থেকে উদারতার শিক্ষা নিতে বলেছিল সে কবিতা, পাহাড়ের কাছ থেকে মহান অথচ মৌন হওয়ার শিক্ষা নিতে বলেছিল, মাটির কাছ থেকে সহিষ্ণুতা শিখতে বলেছিল, পাষাণের কাছ থেকে কাঠিন্য আর চাঁদের থেকে মাধুর্য নিতে বলেছিল।
আরও পড়ুন:শিক্ষক দিবসে আড়ম্বর বাদ দিয়ে অর্থ-সাহায্য
বিশ্বজোড়া এক বিরাট পাঠশালা দেখেছিলেন কবি, গোটা জীবন এক অশেষ-অনন্ত পাঠাগার তাঁর কাছে। সেই পাঠশালায় প্রত্যেকের কাছ থেকেই কিছু না কিছু শিখতে পারার মধ্যে বা সবার ছাত্র হতে পারার মধ্যে যে অপার আনন্দ রয়েছে, মৌলিক উপলব্ধিটা সেই অপার আনন্দেই নিহিত। এই উপলব্ধি শুধু একটা কবিতার সারকথা কিন্তু নয়, এ আসলে জীবনের সারকথা। এই উপলব্ধি যাঁর রয়েছে, শিক্ষা এবং শিক্ষকের গুরুত্ব তথা তাৎপর্য তাঁর কাছে নিঃসন্দেহে মহত্তর।
আরও পড়ুন:স্কুলের ভোল বদলে ঝুলিতে শিক্ষারত্ন
শিক্ষক দিবস উদ্যাপনের সময় এই রকম কোনও উপলব্ধি কি চেতনার প্রবাহে ঠাঁই পায়? নাকি বাহ্যিক আড়ম্বরটাই মূল হয়ে ওঠে? একটু ভেবে দেখা দরকার। জীবনের অর্থটাই হয়তো বদলে দিতে পারে এই উপলব্ধি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy