Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Donald Trump

ধ্বংস-ঘড়ির কাঁটায় মহাপ্রলয়ের পদধ্বনি, রাজা কি কাপড় পরবেন?

শেষের সে দিন যে ভয়ঙ্কর, সে সত্য কারও অজানা নয়। কিন্তু সেই মহাপ্রলয়কে চোখের সামনে এগিয়ে আসতে দেখার অনুভূতি যে কতটা ভয়ঙ্কর, তা বোধ হয় সকলের জানা নয়। ডুমস্‌ডে ক্লকের কাঁটায় কিন্তু আজ সেই মহাধ্বংসের ভ্রূকুটি।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৫
Share: Save:

শেষের সে দিন যে ভয়ঙ্কর, সে সত্য কারও অজানা নয়। কিন্তু সেই মহাপ্রলয়কে চোখের সামনে এগিয়ে আসতে দেখার অনুভূতি যে কতটা ভয়ঙ্কর, তা বোধ হয় সকলের জানা নয়। ডুমস্‌ডে ক্লকের কাঁটায় কিন্তু আজ সেই মহাধ্বংসের ভ্রূকুটি।

ধ্বংস-ঘড়ি জানান দিল, অন্তিম মুহূর্তের আরও কাছে পৌঁছে গিয়েছে সভ্যতা। আর মাত্র আড়াই মিনিট, তার পরই নিবিড় মধ্যরাত্রি, নিকষ-নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। ধ্বংস-ঘড়ির কাঁটা মধ্য রাতে পৌঁছনোমাত্র সেই নিকষ-নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে ডুবে যাবে হাজার হাজার বছর ধরে একটু একটু করে অর্জিত সভ্যতার আলো। ‘বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস’ পরিচালিত এই ধ্বংস-ঘড়ি প্রতীকী ঘড়ি ঠিকই। সময়টাও হয়তো প্রতীকী। কিন্তু এ ঘড়ি এবং এ সময় ভয়ঙ্কর প্রলয়ের যে আভাসটা দিচ্ছে, সে আভাসটা কিন্তু প্রতীকী নয়। অনিবার্য পদক্ষেপে একটু একটু করে এগিয়ে আসতে থাকা মহাপ্রলয়ের মুখটা কেমন, ধ্বংস-ঘড়ি আসলে সেটাই দেখিয়ে দিচ্ছে।

কালের প্রবাহে এমন অনেক সময়বিন্দু তৈরি হয়, যে সব সময়বিন্দুতে পৌঁছে চোখে আঙুল দাদাদের প্রয়োজনটা নিদারুণ ভাবে অনুভূত হয়। তেমনই এক সময়বিন্দুতে উপনীত এ মানব সভ্যতা। আত্মঘাতী ঔদ্ধত্যে সওয়ার এ সভ্যতা যে আজ অতলস্পর্শী এক খাদের কিনারে পৌঁছে গিয়েছে, স্পর্ধা-প্রতিস্পর্ধায় বুঁদ পৃথিবী তা দেখতেই পাচ্ছে না। তাই চোখে আঙুল দাদার ভূমিকা গ্রহণ করতে হল ‘বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস’কে।

১৯৫৩ সালেও এক বার মহাপ্রলয়ের ক্ষণের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল ডুমস্‌ডে ক্লকের কাঁটা। সোভিয়েত রাশিয়া আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গগনভেদী স্পর্ধা-প্রতিস্পর্ধা তথা গণবিধ্বংসী অস্ত্রের তীব্র গর্জন-প্রতিগর্জনে সে সময় ধ্বংসোন্মুখ হয়েছিল পৃথিবী। বিশ্ব জুড়ে বিপদ-ঘণ্টা বাজতে শুরু করার পর মানুষ সামলে নিয়েছিল নিজেকে। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, এ বিশ্বের নিয়ন্ত্রকরা সামলে নিয়েছিলেন নিজেদের। তাই ঘড়ির কাঁটাটা পিছতেও শুরু করেছিল। কিন্তু ইতিহাস থেকে মানুষ শিক্ষা নেয়নি। তাই অন্তিম ক্ষণ আজ ফের মাত্র আড়াই মিনিট দূরে।

ডুমস্‌ডে ক্লকের মুখমণ্ডলে আজ যে আতঙ্কের ছাপ, তার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে সরাসরি আঙুল তুলেছেন পরমাণু বিজ্ঞানীরা। উদ্যত আঙুলগুলো আসলে রাজাকে দেখিয়ে দিতে চাইছে, রাজার পরনে কাপড় নেই। রাজা কি উপলব্ধি করবেন? যদি করেন, তা হলে ঘড়ির কাঁটা আবার পিছতে পারে। যদি না করেন, মহাপ্রলয়ের অনিবার্য পদক্ষেপটাই অমোঘ হয়ে দেখা দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE