বিধ্বংসী আগুন এসএসকেএমে।
ভয়ঙ্কর স্মৃতি ফিরল। স্মৃতিপটে উঁকি দিয়েই অবশ্য ফিরে গিয়েছে আতঙ্ক এ বার। কিন্তু ফিরে না-ও যেতে পারত। আর একটা আমরি বা আর একটা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হয়ে উঠতে পারত এসএসকেএম।
রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সরকার নিয়ন্ত্রিত পরিকাঠামো যতটা, সেই অংশের সেরা মুখ এসএসকেএম। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের সেরা বিজ্ঞাপন এই হাসপাতাল। স্বাভাবিক ভাবেই আগুন নেভাতে প্রশাসনিক তৎপরতা ছিল প্রবল। এই তৎপরতা আগামী কয়েক দিনেও হয়তো চোখে পড়বে শহর জুড়ে। কোন কোন হাসপাতাল জতুগৃহ হয়ে রয়েছে, উঠে আসবে হয়তো সে চর্চা। মহানগরের কোন কোন বহুতল বা গুরুত্বপূর্ণ ইমারতে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়, সে সব খতিয়ে দেখতে হয়তো প্রশাসনিক হানাদারি, ধরপাকড়, কঠোর বার্তা ইত্যাদি চলবে দিনকতক। কিন্তু আগুনের আঁচ একটু কমতেই আবার সব শীতল হয়ে আসবে।
এসএসকেএম-এর জন্য পাকাপোক্ত বন্দোবস্ত হল। দমকলের গাড়ি স্থায়ী ভাবে ওই হাসপাতালে থাকবে এ বার থেকে। তাতে কী হবে? আগুন লাগলেই নেভানোর কাজ শুরু করা যাবে। প্রশ্নের অবকাশ এখানেই। জোরটা নিরাময়ে না দিয়ে প্রতিরোধে দেওয়া বেশি জরুরি নয় কি? অগ্নিনির্বাপন নিয়ে বেশি ভাবিত হওয়া উচিত, নাকি অগ্নিনিরোধক ব্যবস্থা গড়ে তোলা নিয়ে? আমাদের হাসপাতাল, গুরুত্বপূর্ণ ইমারত বা বহুতলগুলো অগ্নিনিরোধক হয়ে উঠবে না কেন? আগুন যাতে না লাগে, তেমন বন্দোবস্তে পৌঁছনোর চেষ্টা আমরা করব না কেন? এসএসকেএম হাসপাতালে স্থায়ী দমকল কেন্দ্র হচ্ছে। রাজ্যের অন্য সব হাসপাতালের জন্যও কি সেই ব্যবস্থা হওয়া সম্ভব? অন্য সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জনবহুল ইমারতই কি স্থায়ী দমকল কেন্দ্রের সুবিধা পেতে চলেছে? নিশ্চয়ই নয়। অতএব আগুন নেভানো নয়, আগুন যাতে না লাগে, তা নিশ্চিত করাই আশু কর্তব্য হওয়া উচিত।
আমাদের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোই অগ্নিনির্বাপক ভাবে গড়ে ওঠাটা জরুরি। অনেক দেশেই সে ব্যবস্থা রয়েছে। কী ভাবে তাঁরা সাফল্যের সঙ্গে অগ্নিসুরক্ষা সুনিশ্চিত করেছেন, আমরা তা দেখে শিখতেই পারি। শুধু দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন জরুরি। আগুন নয়, জতুগৃহের নিরসন জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy