Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু

উনিশ শতকের ওয়াহাবি আন্দোলনের বন্দিদের এক জন ছিলেন শের আলি, যিনি ১৮৭২ সালে পোর্ট ব্লেয়ারে ভাইসরয় লর্ড মেয়ো-কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০০:০০

উনি ‘বীর’, আর বাকিরা?

উনিশ শতকের ওয়াহাবি আন্দোলনের বন্দিদের এক জন ছিলেন শের আলি, যিনি ১৮৭২ সালে পোর্ট ব্লেয়ারে ভাইসরয় লর্ড মেয়ো-কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। ভাইপার দ্বীপে শের আলির ফাঁসি হয় (‘কাকে বলে দেশপ্রেমী’, ১২-৫)।

১৯০৬ সালে সেলুলার জেল স্থাপিত হওয়ার পর ১৯০৯ থেকে ১৯৩৮ পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলার বন্দির সংখ্যা ছিল ৪০৪ (যুগান্তর দল, অনুশীলন সমিতি, বি.ভি, শ্রীসঙ্ঘ প্রভৃতি দল)। ১৯০৯ সালে প্রথম বন্দি হয়ে আসেন মানিকতলা বোমার মামলার বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, হেমচন্দ্র কানুনগো, উল্লাসকর দত্ত, উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। এর পর আসেন পুলিন দাস, ত্রৈলোক্য চক্রবর্তী মহারাজ প্রমুখ। মহারাজ তিরিশ বছর ব্রিটিশ কারাগারে ছিলেন। এঁদের কথা ওই ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’-এ বলাই হয় না।

সাভারকর ৩০/৩/১৯২০ তারিখে ক্ষমাপ্রার্থনার পঞ্চম চিঠিতে লেখেন ‘একদা বাকুনিনের উগ্রপন্থায় বিশ্বাসী হলেও আমি তলস্তয়-এর শান্তিপূর্ণ দার্শনিক নৈরাজ্যের পথেও কোনও সাহায্য করিনি।... আমার আগের আবেদনগুলি থেকে বোঝা যাবে সংবিধান, যা মি. মন্টেগু দেশের জন্য প্রবর্তন করেছেন তা মেনে চলাই আমার উদ্দেশ্য।’

সাভারকর ১৯২১ সালে মুক্তি পাওয়ার পর ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত আর কখনও স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেননি। জেলও খাটেননি। তা সত্ত্বেও তিনি কিছু ব্যক্তির কাছে ‘বীর’। এর কারণ তিনিই প্রথম ১৯২৩ সালে ‘হিন্দুত্ব’ পুস্তক রচনা করে ‘দ্বিজাতি’ তত্ত্ব প্রচার করেন। তাঁর মতে দেশের প্রধান দ্বন্দ্ব ‘হিন্দু’ ও ‘মুসলমানের’ মধ্যে। ভারতীয় জনসাধারণের সঙ্গে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের নয়। মহম্মদ আলি জিন্নার সঙ্গে তাঁর তত্ত্বের কোনও মৌলিক পার্থক্য ছিল না।

১৯৩৯-এর সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে আটটি রাজ্যের নির্বাচিত কংগ্রেস সরকার পদত্যাগ করে। দাবি ছিল, স্বাধীনতা না দিলে যুদ্ধ সম্পর্কে কংগ্রেসের নীতি ‘না এক ভাই, না এক পাই’। আশ্চর্যের বিষয়, হিন্দু মহাসভা ও মুসলিম লিগের অবস্থান হল, বিদেশি সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার। এই কারণেই সিন্ধ (সিন্ধু) এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে, মুসলিম লিগ ও হিন্দু মহাসভা কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠন করে। সাভারকর হিন্দু যুবকদের ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁর স্লোগান ছিল ‘রাজনীতির হিন্দুত্বকরণ’ ও ‘হিন্দুত্বের সামরিকীকরণ’।

১৯৪০-এর গোড়ার দিকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র সাভারকরের সঙ্গে দেখা করে ব্রিটিশ-বিরোধী চূড়ান্ত সংগ্রামে যোগ দিতে অনুরোধ করেন। সাভারকর এই অনুরোধ ফিরিয়ে নেতাজিকে বলেন, তাঁর এখন প্রধান কর্মসূচি ব্রিটিশ বাহিনীতে ‘হিন্দু’ যুবকদের নাম লেখানো (সুভাষচন্দ্র রচনাবলী, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৯৯, আনন্দ পাবলিশার্স)।

মহাত্মা গাঁধী হত্যাকাণ্ডের বিচারে ট্রায়াল কোর্টের বিচারক আত্মারাম, সাভারকরকে বেনিফিট অব ডাউট-এ মুক্তি দেন। সরকার এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিলে যায়নি। কিন্তু গাঁধীজিকে হত্যার পর গঠিত জাস্টিস জে এল কপূর কমিশন তাঁর রিপোর্টে বলেছিলেন, ‘অল দিজ ফ্যাক্টস টেকেন টুগেদার ওয়ার ডেসট্রাকটিভ অব এনি থিয়োরি আদার দ্যান দ্য কন‌্সপিরেসি টু মার্ডার বাই সাভারকর অ্যান্ড হিজ গ্রুপ’।

এক দিনের জন্যও সাংসদ না হওয়া সত্ত্বেও ২০০৩ সালে সংসদ ভবনে তাঁর তৈলচিত্র স্থাপন করেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। ওই সময় আন্দামান বন্দি-বিপ্লবী বিশ্বনাথ মাথুর বলেন ‘এক কাপুরুষকে বিপ্লবী বলে আঁকার চেষ্টা হচ্ছে, জাতীয় লজ্জার প্রতীককে বৈধতা দেওয়ার এটি একটি নির্লজ্জ প্রয়াস।

শান্তনু দত্ত চৌধুরী কলকাতা-২৭

স্মরণীয়

দিগ্বিজয় চৌধুরী ‘কল্পতরু’ ছবিতে পিতা মোহিনীর চারটি স্মরণীয় গান যুক্ত করেছেন (‘আবার মোহিনী’, ২৬-৪)। প্রণব-মোহিনী-সুবোধ পুরকায়স্থ-গৌরীপ্রসন্ন-অজয় ভট্টাচার্য প্রভৃতি স্বর্ণযুগের গীতিকারদের কথা ও সুর আজও এক মুগ্ধ নস্টালজিয়া, কোনও কালেই যা বিস্মৃত হওয়ার নয়। মূলত প্রণব রায়ের পরেই মোহিনী চৌধুরীর অবিস্মরণীয় গীতিমণিহার রচিত হয়। উল্লিখিত চারটি গানের মধ্যে সর্বাধিক বিখ্যাত ‘ভালবাসা মোরে ভিখারি করেছে’ এবং ‘পৃথিবী আমারে চায়’— গানদ্বয় সুরকার কমল দাশগুপ্তর সুরারোপিত এবং যথাক্রমে জগন্ময় মিত্র ও সত্য চৌধুরীর কণ্ঠে পরিবেশিত। আরও মনে পড়ে মোহিনী চৌধুরীর বিখ্যাত কয়েকটি সংগীত, ‘আমি দুরন্ত বৈশাখী ঝড়’, ‘শতেক বরষ পরে’, ‘জেগে আছি একা’, ‘যাদের জীবনভরা আঁখি জল’ প্রভৃতি।

চিরকাল গান অনুরাগী বাঙালিও ভুলে যায়নি মোহিনীর মধুক্ষরা গানের বাণী। ‘বাঙালী গীতিকার’ নামে প্রকাশিত ‘তথ্য সূত্র’ (সুব্রত রায়চৌধুরী) নামক পত্রিকায় প্রণব রায়ের পুত্র প্রদীপ্ত রায় লিখিত ‘চরণ ফেলিও ধীরে ধীরে প্রিয়’ রচনাটি তাঁর পিতৃস্মৃতিতর্পণ। অন্য ক্ষেত্রে মোহিনী চৌধুরীর সুযোগ্য পুত্র দিগ্বিজয় চৌধুরীও পিতার স্মরণাঞ্জলি নিবেদনে উদ্যোগী হয়েছেন ‘কল্পতরু’ প্রযোজনা উপলক্ষে।

সন্তোষকুমার বিশ্বাস কলকাতা-১২২

আক্রান্ত কারা?

তরুণ অফিসার উমর ফয়েজ বিয়েবাড়িতে এসে খুন হয়ে গেলেন জঙ্গিদের হাতে। খবরটি (‘বিয়েবাড়ি গিয়ে খুন...’, ১১-৫) পড়তে পড়তে মনে পড়ে যাচ্ছিল তাপস সিংহ-র লেখা (‘যা খুশি করার নৈতিক অধিকার রাষ্ট্রের নেই’, ২৫-৪) নিবন্ধটি। দুই সশস্ত্র মুখোশধারী যুবক বন্দুক দেখিয়ে বিয়েবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ৩০ কিলোমিটার দূরে উমরের মৃতদেহটি ফেলে রাখল। এমনকী তাঁর শেষযাত্রাতেও পাথর ছোড়ার চেষ্টা হল। এর পরেও বলা হবে, সেনাবাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী ও কাশ্মীর পুলিশ মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে! জঙ্গিদের দ্বারা দেশের সেনাবাহিনী নিয়মিত ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। তথাপি বিচ্ছিন্নতাবাদের শিকড় গভীরতর করার দায় সহজেই রাষ্ট্র ও সেনাবাহিনীর কাঁধে তুলে দেওয়ার যুক্তিজাল বোনা হচ্ছে। উমর বিয়েবাড়িতে ছিলেন, আধুনিক অস্ত্রে বলীয়ান হয়ে কাশ্মীর উপত্যকায় বিশেষ আইনের সুবিধাভোগ করে সেনাবাহিনীর দায়িত্বে কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন না। আসলে দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী উমরদের এই পরিণতির জন্য তাঁদের আরও সচেতন থাকার পরামর্শ দেবেন আর পাথর-ছোড়ার দল ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান চালালে সর্বোচ্চ স্তরের মানবপ্রেমী হয়ে উঠবেন। কাশ্মীর উপত্যকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের গণতান্ত্রিক অধিকারই যে ঝিলামের জলে ভেসে যাচ্ছে, বোঝা যাচ্ছে না?

সৈকত রায় খানাকুল, হুগলি

গাছ খুন

সম্প্রতি যশোর রোডে গাছ কাটা নিয়ে খবর হচ্ছে। অথচ বনগাঁতে সংশ্লিষ্ট গাছগুলির গোড়ায় কংক্রিটের ঢালাই এবং জঞ্জাল পোড়ানো, গাছের গায়ে পেরেক পুঁতে বিজ্ঞাপন ইত্যাদি নানাবিধ অত্যাচার চলছে। পেট্রাপোল বর্ডারের কাছে বিশাল একটি তেঁতুল গাছকে মেরে ফেলা হয়েছে। বনগাঁ শহরে গাছের গোড়ায় কংক্রিটের আবর্জনা ফেলে গাছের মৃত্যু ডেকে আনা হচ্ছে, বারাসত কোর্ট-সংলগ্ন চত্বরেও একই ঘটনা। কারও মাথাব্যথা নেই।

শঙ্কররঞ্জন মজুমদার শ্রীনগর, হাবড়া

ভ্রম সংশোধন

সুশীল চৌধুরীর বই প্রকাশের ছবির ক্যাপশনে (২০-৫, পৃঃ ৬) তাঁর লেখা দু’টি বই প্রকাশিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। দু’টি বইয়ের একটি তাঁর স্ত্রী মহাশ্বেতা চৌধুরীর লেখা। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy