Advertisement
০৪ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

টিভির বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত বিতর্ক ও আলোচনা থেকে আমরা নিজেদের সমৃদ্ধ করি। ওই ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য চ্যানেলগুলিকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু একটা সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়। এক জন বক্তা একটু বলার পরেই অন্য এক জন বা দু’জন বা তিন জন একসঙ্গে বলে চলেছেন।

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

সমস্বরে বিতর্ক!

সংসারে এখন আমরা বুড়ো-বুড়ি। বিকেল পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত সময়টা কাটে টিভি দেখে। টিভি দেখতে গিয়ে আমরা দুটি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। প্রথম সমস্যা: কয়েকটি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের সময় শব্দ বেড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে শব্দ কমাতে হয়। বিজ্ঞাপন শেষ হলে আবার শব্দ বাড়াতে হয়। এতে আমাদের অসুবিধা হচ্ছে, সমস্যা হচ্ছে। শব্দ সব সময় এক রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট চ্যানেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন রাখছি।

দ্বিতীয় সমস্যা: টিভির বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত বিতর্ক ও আলোচনা থেকে আমরা নিজেদের সমৃদ্ধ করি। ওই ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য চ্যানেলগুলিকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু একটা সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়। এক জন বক্তা একটু বলার পরেই অন্য এক জন বা দু’জন বা তিন জন একসঙ্গে বলে চলেছেন। ফলে, কারও কথা বোঝা যায় না। প্লিজ, এমন একটা ব্যবস্থা করুন, যাতে একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি কথা বলতে না পারে।

রবীন্দ্রনাথ মাইতি

খরিদা, খড়্গপুর

মুখ্যমন্ত্রীর ছবি

ধ্রুবজ্যোতি বাগচি মুখ্যমন্ত্রী সম্বন্ধে লিখেছেন, ‘প্রচারের ঢক্কানিনাদে তিনি বিশ্বাসী নন’। (‘অভিভাবক’, সম্পাদক সমীপেষু, ১৮-৬)। এই কথাটা পুরোপুরি মানা মুশকিল। রাজ্যের সর্বত্র মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিং ছড়িয়ে আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রশাসনিক, রাজনৈতিক সভার সময় মঞ্চের পিছনে বিশালাকার মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকে। অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান, (যেখানে বিশিষ্ট ব্যক্তিগণকে ‘রত্ন, ভূষণ’ ইত্যাদি সম্মান দেওয়া হয়) সেখানেও সভামঞ্চের পিছনে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকে। এ ছাড়া আজকাল নেতা, মন্ত্রীদের অফিসেও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙানো থাকে। কখনও কখনও মনে হয় রাজ্যে যা মানুষ আছে, তার থেকে বেশি মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। অনুমতি ছাড়া এই প্রচার কি সম্ভব?

বিজয় গুহ

কলকাতা-৫২

কবির জন্মশতবর্ষ

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম শতবর্ষের লেখাটি পড়ে আনন্দিত হয়েছি (কলকাতার কড়চা, ১৯-৬)। একদা আমিও নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছাত্র ছিলাম। এ প্রসঙ্গে জানাই, আমাদের আরও এক জন অধ্যাপক জন্ম শতবর্ষের আলোকে রয়েছেন। তিনি কবি অধ্যাপক হরপ্রসাদ মিত্র (১ জানুয়ারি, ১৯১৭— ১৫ অগস্ট, ১৯৯৪)। ১৯৪০ সনে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলায় এম এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত সম্পাদিত ‘পরিচয়’ পত্রিকায় তাঁর প্রবন্ধ ‘গল্পগুচ্ছের রবীন্দ্রনাথ’ পড়ে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ১৯ জুন ১৯৪১-এ তাঁকে একটি চিঠিতে লেখেন— ‘আমার এই প্রিয় গল্পগুলি এত দিন পরে তোমার লেখনী থেকে প্রচুর সম্মান পেয়েছে দেখে আমি যেন অপ্রত্যাশিত ভাবে পরিতৃপ্তি লাভ করছি এবং সে জন্য মনে মনে তোমাকে কৃতজ্ঞতা অর্পণ করেছি।’

তাঁর লেখা কবিতা ‘দেশ’ এবং ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ (পুজো সংখ্যা)-য় নিয়মিত প্রকাশ পেত। তিনি অনেক পুস্তক সমালোচনাও করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজের বাংলার বিভাগীয় প্রধান পদ থেকে অবসর নিয়ে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ অধ্যাপক হয়েছিলেন।

সোমেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী

কলকাতা-৮৪

গানে ‘রিমেক’

বিশ্বনাথ বিশ্বাস হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের ১৯৮০ সালে প্রকাশিত একটি জনপ্রিয় লং প্লেয়িং রেকর্ডের কথা উল্লেখ করেছেন (সম্পাদক সমীপেষু, ৪-৭)। এর সঙ্গে আমি আরও কিছু তথ্য যোগ করতে চাই।

উক্ত লং প্লেয়িং রেকর্ডটির নাম— ‘হেমন্ত মুখোপাধ্যায়- আধুনিক’। রেকর্ডে মোট দশটি আধুনিক গান আছে। সব ক’টি গানই হেমন্তবাবু আগে রেকর্ড করেছিলেন। এ বার নতুন করে ‘রিমেক’ করলেন। আমার ব্যক্তিগত সংগ্রহে রেকর্ডটি আজও সংরক্ষিত আছে। এর একটা ইতিহাস আছে। এর আগে, ১৯৭৯ সালে হেমন্তবাবু সলিল চৌধুরীর সুরে অতীতে তাঁর রেকর্ড করা ন’টি গান নতুন করে রিমেক করেছিলেন। সেই লং প্লেয়িং রেকর্ডটির নাম ছিল ‘আ লেজেন্ড অব গ্লোরি’, ভলিউম-২। রেকর্ডটি অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

সেই প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে হিজ মাস্টার্স ভয়েস কোম্পানি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে দিয়ে তাঁরই পুরনো ছায়াছবির বারোটি গান রিমেক করায় এবং ‘এ শুধু গানের দিন’ নামে লং প্লেয়িং রেকর্ডটি প্রকাশিত হয়। এটিও অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়।

মূল শিল্পীর রিমেক গানের এই জনপ্রিয়তা দেখে হিজ মাস্টার্স ভয়েস অন্যান্য শিল্পীদের দিয়েও তাঁদের নিজের নিজের জনপ্রিয় গানগুলি রিমেক করার ভাবনাচিন্তা শুরু করে দেয়। এবং হেমন্তবাবুকে দিয়ে তাঁর দশটি গান রিমেক করে উক্ত লং প্লেয়িং রেকর্ডটি প্রকাশ করে ১৯৮০ সালের পুজোতে। এই রেকর্ডের গানগুলি ও তাদের প্রথম প্রকাশের তারিখ নীচে দিয়ে দিলাম।

রেকর্ডটির প্রথম পিঠে— ‘পরদেশী কোথা যাও’ (প্রথম প্রকাশ ১৯৪৪), ‘আসবে না তা, নাই বা’ (১৯৪৭), ‘কথা কয়ো নাকো শুধু শোন’ (১৯৪৩), ‘মেঘ মেদুর বরখারে’ (১৯৫১), ‘শুকনো শাখার পাতা’ (১৯৪৮)। রেকর্ডের দ্বিতীয় পিঠের গানগুলি— ‘আকাশ মাটি ওই ঘুমালো’ (১৯৪৯), ‘প্রিয়ার প্রেমের লিপি’ (১৯৪৮), ‘যত দিন তারা জ্বলিবে’ (১৯৪৯), ‘হংস মিথুন চলে’ (১৯৫১), ‘ঘুম নেই কেন চোখে’ (১৯৬৮)।

নিজেদের গান নিজেরাই নতুন করে রিমেক করার যে ধারা চালু হল, সেই ধারায় প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন করে গাইলেন, ‘আঁধার আমার ভাল লাগে’, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ফের রেকর্ড করলেন, ‘ফিরিয়া ডেকোনা মহুয়া’, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার গাইলেন, ‘আলতা পায়ে আলতো ছোঁয়া’ প্রভৃতি।

এই ধারায় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের আরও দুটি লং প্লেয়িং রেকর্ড প্রকাশিত হল। বাংলা ছায়াছবির বারোটি গান দিয়ে ‘কে তুমি আমারে ডাকো’। এবং বাংলা আধুনিক চোদ্দোটি গান দিয়ে ‘বিজন রাতের পাখী’ (১৯৮৩ সাল)। পুরনো দিনের গানের এই অভাবিত চাহিদা দেখে এ বার নবীন শিল্পীরা প্রবীণ শিল্পীদের গান রিমেক করতে শুরু করলেন। এই ধারাটি আজও চলছে।

১৯৮৪ সাল থেকে ধীরে ধীরে রেকর্ড প্রকাশিত হওয়া কমে যায়। এবং ক্যাসেটের যুগ শুরু হয়। তাই এর পর হেমন্তবাবু বা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের নিজেদের গাওয়া রিমেক গানে সম্পূর্ণ ভরা লং প্লেয়িং রেকর্ড প্রকাশিত হয়নি।

পরিশেষে জানাই যে, বাংলা গানের ইতিহাসে রিমেক গান গাওয়া ১৯৮০ সালে প্রথম শুরু হয়নি। এর বহু কাল আগে ১৯৩০-এর দশকে এবং ১৯৪০-এর দশকে যূথিকা রায়, উমা বসু ইত্যাদি নামী শিল্পীরা অন্যের গান রিমেক করেছিলেন।

কিন্তু হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় নিজেদের গান নিজেরাই রিমেক করে বাংলা গানে যে জোয়ার এনে দিয়েছিলেন, সেটি বাংলা গানের ইতিহাসে এক অতুলনীয় ঘটনা।

শ্রীশঙ্কর ভট্টাচার্য

কলকাতা-৩৯

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

ভ্রম সংশোধন

• ‘বেজিং স্থিতাবস্থা চাইবে ডোকা লায়’ (১৫-৭, পৃ ৬) খবরের শিরোনামটি ভুল লেখা হয়েছে।
খবরটি হবে, ডোকা লায় ভুটান স্থিতাবস্থা চেয়ে বৈঠকের প্রস্তাব দেবে চিনকে।

• ‘এক নজরে’ (পৃ ৫) অংশে ছবির শিরোনামে আয়কর-কর্তা তাপসকুমার দত্তের
বাড়ি থেকে ৬৬ কেজি সোনা উদ্ধার হয়েছে বলে লেখা হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে উদ্ধার হওয়া সোনার পরিমাণ ৬.৬ কেজি।

অনিচ্ছাকৃত এই ভুলগুলির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Letters To Editor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE