Advertisement
০৬ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

বেসরকারি স্কুলে কোনও শিশু যে বয়সে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে, সরকারি স্কুলে তা সম্ভব নয়। বেসরকারি স্কুলে প্রাক্-নার্সারি বিভাগে আড়াই-তিন বছর বয়সেই ভর্তি নেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে তার কমেও ভর্তি করা হচ্ছে।

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

কতক্ষণে লাল হবে

কলকাতার প্রতিটি সংযোগকারী মোড়ে যে সিগনালিং ব্যবস্থা, তা অনেকেরই কপালে ভাঁজ ফেলছে। লাল আলো সবুজ হওয়ার আগে পর্যন্ত কাউন্টডাউন চলে, শূন্যে এসে শেষ হয়। মজার বিষয়, কাউন্টডাউন এক-এক জায়গায় এক-এক রকম ভাবে শুরু। কোথাও ২৮, কোথাও ৬০, কোথাও ৯০ ইত্যাদি। কিন্তু সবুজ কতক্ষণ, সেটা চট করে বোঝা যায় না। শুধু কোথাও কোথাও সবুজ লাইট লাল হওয়ার আগে দু-তিন বার দপদপ করে হলুদ আলো। অর্থাৎ, সবুজ থেকে লাল হতে ঠিক কতক্ষণ সময় লাগবে, তা অনুমানেই থেকে যায়।

এখানেই বিপত্তি। লাল হওয়া মানেই ক্যামেরা বন্দি, ফাইন।
সবুজ আলোর ক্ষেত্রেও কাউন্টডাউন দেওয়া হলে এই অনিচ্ছাকৃত ফাইনের হাত থেকে রেহাই পেতে পারে গাড়ি চালকরা।

মনমিতা চক্রবর্তী ও মনামী চক্রবর্তী
কলকাতা-১০৩

স্কুলে ভর্তির বয়স

বেসরকারি স্কুলে কোনও শিশু যে বয়সে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে, সরকারি স্কুলে তা সম্ভব নয়। বেসরকারি স্কুলে প্রাক্-নার্সারি বিভাগে আড়াই-তিন বছর বয়সেই ভর্তি নেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে তার কমেও ভর্তি করা হচ্ছে। অভিভাবকদের চাপেই যে এই ভর্তি, সে রকমটাই জানাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

অন্য দিকে, ২০০৯ সালে শিশু শিক্ষার অধিকার আইন চালু হয়। সেই আইনকে মান্যতা দিয়ে রাজ্য সরকারও ২০১২ সালে স্কুলে ভর্তির বয়স নির্দিষ্ট করে দেয়। প্রাক্-প্রাথমিক শ্রেণিতে ভর্তির বয়স ৫ বছরের বেশি, কিন্তু ৬ বছরের কম। প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির বয়স ৬ বছরের বেশি, কিন্তু ৭ বছরের কম। অর্থাৎ, সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে গেলে কোনও শিশুকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ন্যূনতম কত বছর বয়সে কোনও শিশুর স্কুলে ভর্তি হওয়া উচিত, সে বিষয়ে শিক্ষাবিদরাই একমত নন। তবে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ৫ বছরের নীচে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক গঠন প্রথাগত শিক্ষা গ্রহণের জন্য তৈরি হয় না। তাই অধিকাংশ শিশুশিক্ষা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, প্রাক্-প্রাথমিকে ৫ বছরের নীচে শিশুকে ভর্তি করা উচিত নয়।

আবার শিশুশিক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, গান, নাচ, ছবি, খেলাধুলোর মাধ্যমে খুব কম বয়স থেকে শিশুদের শিক্ষা দিলে প্রাথমিক শ্রেণিতে উঠে শিশুদের দক্ষতা বেশি দেখা যায়। কিন্তু কিছু প্রশ্ন থেকেই যায়। আড়াই-তিন বছরে স্কুলে ভর্তি হলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পক্ষে তা কি সহায়ক হয়? প্রাথমিকে, উচ্চ-প্রাথমিকে উঠে সেই শিশু কি পাঠ গ্রহণে আরও বেশি সক্ষম হয়? পাঠ অনুশীলনে আরও বেশি মনোযোগী হয়? হস্তাক্ষর আরও উন্নত হয়? তা যদি হয়, তবে সরকারি স্কুলের শিশুরা তা থেকে বঞ্চিত হবে কেন? দেরিতে ভর্তির কারণে সমাজের একটা অংশের শিশুরা পিছিয়ে পড়বে কেন? কেন সরকারি স্কুলে তিন বছর বয়সে শিশুদের ভর্তির ব্যবস্থা থাকবে না?

বেসরকারি স্কুলগুলোতে আড়াই-তিন বছরের শিশুদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই প্রথাগত শিক্ষাই দেওয়া হয়, যেখানে এই সব শিশুদের কিন্ডারগার্টেন পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ার কথা। অর্থাৎ, গান, নাচ, ছবি, খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষাদান করতে হবে। এর জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষিত হতে হয়। বেসরকারি স্কুলে ক’জনের সেই প্রশিক্ষণ আছে? কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি সরকারি, বেসরকারি স্কুলের প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করেছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার আবেদন করা হয়েছে, যার মধ্যে ১ লক্ষ আবেদনই এসেছে বেসরকারি স্কুল থেকে। এই সব বেসরকারি স্কুলে আড়াই-তিন বছরের শিশুদের শিক্ষাদান প্রশিক্ষণ ছাড়াই কী ভাবে চলছে?

সরকার প্রাথমিকে, মাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রী কমার কারণ শিক্ষার মাধ্যমকে চিহ্নিত করে কিছু স্কুলে বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমও চালু করছে। সরকারি স্কুলে ছাত্রছাত্রী কমার কারণ একাধিক। অভিভাবকরা শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজির জন্য যেমন বেসরকারি স্কুলের দিকে ঝুঁকছে, আড়াই-তিন বছরে ভর্তির সুযোগ থাকার জন্যও অনেক অভিভাবক সন্তানদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করছে। আর বর্তমানে এই সব বেসরকারি স্কুলগুলিতে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। অভিভাবকরা সন্তানকে ভর্তির সময় এই সুবিধাটাও দেখেন।

বেসরকারি স্কুলগুলো ‘catch them early’ নীতিতে চলে। অর্থাৎ, অন্যরা যখন আরম্ভ করবে, তার আগেই আরম্ভ করে দাও, তবেই ব্যবসায় সাফল্য আসবে। শিশুর ভবিষ্যৎ ভাবনা দূর কল্পনা। শিশু শিক্ষার অধিকার আইনে বেসরকারি স্কুলে ২৫% আসনে দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের ভর্তির কথা বলা আছে, কোথাও কোথাও এই নিয়ম পালিত হলেও সেখানেও ৬ বছরের ওপরে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হয়। আড়াই-তিন বছরে ভর্তির প্রশ্ন নেই।

অসিতকুমার রায়

ভদ্রেশ্বর, হুগলি

সমন্বয় দরকার

ইতিহাস বলে, ভারতীয়, চৈনিক, মিশরীয়, গ্রিক ও আরবীয় চিকিৎসা পদ্ধতিগুলিই সুপ্রাচীনতার দাবিদার। কিন্তু খুব সম্ভবত ভারতীয় পদ্ধতিই প্রাচীনতম। কারণ, ঋগ্বেদ থেকে আরম্ভ করে, পরবর্তী অন্যান্য বেদে এবং বিশেষত অথর্ববেদেও রোগ চিকিৎসার বহু বিবরণ দেখা যায়। আর পরবর্তী কালের ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রে আয়ুর্বেদকে ওই অথর্ববেদেরই একটি উপাঙ্গ বলা হয়।

পৌরাণিক ঋষিদের মধ্যে ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রের পুরোধা রূপে ধন্বন্তরী, ভরদ্বাজ, আত্রেয়ী প্রমুখের নাম আমাদের জানা এবং এঁদের নির্দেশিত বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি আমরা পুরাণের বিভিন্ন শ্লোকে ও সংহিতায় পাই। এ ছাড়াও অগ্নিবেশ, চরক, সুশ্রুত, বাণভট্ট প্রমুখ ঐতিহাসিক চিকিৎসাবিদের মূল্যবান উপদেশ ও তাঁদের পারদর্শিতার কথা বিভিন্ন সংহিতা ও পুরাণের বই থেকে জানা যায়। চরক সংহিতা-র মূল লেখক চরক, না অগ্নিবেশ— সে নিয়ে মতভেদ আছে। চরক ছিলেন অগ্নিবেশের শিষ্য, কারও কারও মতে, চরক সংহিতা আদিতে অগ্নিবেশ দ্বারাই লিখিত। চরক নাকি পরে তার পরিমার্জনা ও পরিবর্ধিত করে পুনঃপ্রকাশ করেন।

পরবর্তী পর্যায়ে আসেন সুশ্রুত ও বাণভট্ট। পৌরাণিক যুগে সর্বত্রই মনীষীরা একাধারে দার্শনিক, ধর্মোপদেষ্টা, বিজ্ঞানী, গণিতবিদ ও চিকিৎসক ছিলেন। সুদূর অতীতে যখন কোনও যন্ত্রপাতি আবিষ্কৃত হয়নি, তখন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা শুধু পঞ্চেন্দ্রিয় ও নিজ নিজ অভিজ্ঞতার দ্বারা উদ্ভিজ, খনিজ, প্রাণীজ, ভেষজ গুণ সম্বন্ধে ধারণার সাহায্যে রোগের যথাবিহিত চিকিৎসা করতেন। আয়ুর্বেদে উল্লিখিত খাদ্যাখাদ্য বিচার, খাদ্যের পরিপাক, হজমের পরবর্তী খাদ্যাংশের বিপাক ও অসার এবং অপ্রয়োজনীয় অংশের রেচন প্রভৃতি সম্পর্কে যা বলা আছে, তা প্রকৃতই বিজ্ঞানসম্মত। কিন্তু নার্ভতন্ত্র, শ্বসনতন্ত্র ও অন্তক্ষরণ তন্ত্র সম্বন্ধে সে কালে সুস্পষ্ট ভাবে কোনও ধারণা ছিল না। ওই যুগে পরজীবী জীবাণু বা ভাইরাসঘটিত রোগ সম্বন্ধে ধারণা না থাকায়, আয়ুর্বেদিক ত্রিদোষের ধারায় এই ধরনের রোগকে ঠিক যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করা যায় না বা যাবে না।

কিন্তু তা সত্ত্বেও বলা যায়, উদ্ভিজ, খনিজ, প্রাণিজ ও ভেষজ সম্বন্ধে আয়ুর্বেদ আচার্যদের জ্ঞান অতি উচ্চ মানের ছিল। পুরাকালের আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসা পদ্ধতির সঙ্গে বর্তমান বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা পদ্ধতির সমন্বয় সাধন আজ অবশ্যই দরকার, যা এক নবদিগন্তের উন্মোচন করবে।

আলোক রায়

কলকাতা-১১০

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Letters To Editor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE