Advertisement
০৬ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

সে যুগে রক্ষণশীল একটা পরিবার তথা সমাজ থেকে উঠে এসে ডাক্তার হওয়া যে কী কঠিন ব্যাপার, সে তো কাদম্বিনী গাঙ্গুলীও বুঝেছিলেন। জোহরা বেগমের লড়াইটা ছিল আরও কঠিন।

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:১৭
Share: Save:

ভুলেই গিয়েছি

ছবির মহিলাটিকে আমরা হয়তো চিনি না। শতবর্ষ পার করে আসা এই মানুষটির নাম— জোহরা বেগম কাজি (১৯১২-২০০৭)। প্রথম বাঙালি মুসলিম মহিলা ডাক্তার। একটা সময় যখন এই উপমহাদেশের অসুস্থ মহিলারা মনে করতেন, পুরুষ ডাক্তারকে দেখানোর চাইতে মৃত্যুও ভাল, এবং তাঁরা দিনের পর দিন বিনা চিকিৎসায়, ভুল চিকিৎসায় মারা যেতেন, সেই সময় দিল্লির লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৩৫ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমবিবিএস পাশ করেন জোহরা। দেশভাগের পর তিনি বাংলাদেশে চলে যান। সেখনেও সেবার হাত বাড়িয়ে দেন।

সে যুগে রক্ষণশীল একটা পরিবার তথা সমাজ থেকে উঠে এসে ডাক্তার হওয়া যে কী কঠিন ব্যাপার, সে তো কাদম্বিনী গাঙ্গুলীও বুঝেছিলেন। জোহরা বেগমের লড়াইটা ছিল আরও কঠিন। এমনও দিন বা রাত গিয়েছে, তিনি এক-বাড়ি থেকে অন্য-বাড়ি শুধু অসুস্থ মহিলাদের জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন। মেয়েদের অসুস্থতা সংক্রান্ত নানান ভুল ধারণা দূর করার চেষ্টা করেছেন। গাঁধীজির ডাকে গ্রামে গ্রামে যে কাজ তিনি এ দেশে শুরু করেন, তা-ই চালিয়ে যান বাংলাদেশে। আমাদের পাঠ্যবইয়ে জোহরা বেগম কাজির জীবনের কাহিনি রাখা যায় না?

সুদীপ বসু

কলকাতা-১১৮

অনলাইন হলে

একশো দিনের কাজে স্বচ্ছতা আনতে কেন্দ্র উদ্যোগ নিয়েছে। জনমনরেগা মোবাইল অ্যাপ চালু হয়েছে। এই অ্যাপে কোথায় কী কাজ হয়েছে তা জানা যাবে সহজে। কর্মপ্রার্থীরা সহজেই অনলাইন নিজেদের কাজের বিবরণ জানতে পারছেন। কিন্তু কাজের আবেদন করা নিয়ে এখনও অনেক সমস্যা। যিনি কাজ করতে আগ্রহী তাঁকে ৪ক ফর্ম ফিল আপ করে গ্রামপ্রধান বা বিডিও অফিসে জমা করতে হয়। এতে গ্রামের মানুষের হয়রানি হয়। বিভিন্ন সময় গ্রামপ্রধান অফিস কাজের ফর্ম দিতে চায় না। পঞ্চায়েত নিজের লোকেদের আবেদন করিয়ে মাস্টার রোল বার করে।

তাই একশো দিনের কাজের আবেদন অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমেও করার ব্যবস্থা করলে জনগণের সুবিধা হবে। বাড়িতে বসেই কাজের আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। সেই সঙ্গে অনলাইন সফটওয়্যার-এর ভিত্তিতে কাজ বিতরণ করা হলে পঞ্চায়েতে স্বজনপোষণ কমবে বলে আশা।

আব্দুল জলিল সরকার

বক্সিগঞ্জ, হলদিবাড়ি, কোচবিহার

কেন শিল্প নেই

দেশের তেরঙা, জাতীয় সংগীত, এবং নিরাপত্তা নিয়ে ভোট রাজনীতির পুষ্টি সাধন করাটা যেখানে এক অনিবার্য আদর্শ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে ‘দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভয়ে এই রাজ্যে লগ্নি থমকে আছে’— এই রাজনৈতিক মত প্রকাশ হবে না, এমন ভাবাটা অস্বাভাবিক (‘মোদীর ভয়ে থমকে লগ্নি’, ২৫-১১)।

পশ্চিম বাংলায় শিল্পের বারোটা বাজতে শুরু হয়েছিল বামফ্রন্টের আমল থেকে। ইউনিয়নবাজির দাদাগিরিতে যখন ‘মালিকের হাত গুঁড়িয়ে দাও, ভেঙে দাও’ স্লোগানে শহর থেকে শহরতলির কলকারখানা কেঁপে উঠত তখনই একের পর এক কারখানার ঝাঁপ বন্ধ হতে শুরু করল। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ দিয়ে যখন শিল্পের ফুটিফাটা অবস্থা আর ঢাকা যাচ্ছে না, তখন নিয়ম করে প্রতি বছর জ্যোতি বসু বিদেশ যাত্রা শুরু করেন। জীবদ্দশায় তিনি এক জনও শিল্পপতি ধরে আনতে পারেননি এই বঙ্গে বিনিয়োগ করার জন্য। এর পর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বামফ্রন্ট আমলের শেষ লগ্নে রাজ্যের শিল্পের দীর্ণ দশা ঘোচাতে অনেকটা পার্টি লাইনের বাইরে গিয়ে শিল্পের মরা গাঙে বান ডাকতে দেশীয় শিল্পপতি টাটাকে দিয়ে সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা স্থাপনে উদ্যোগী হন। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গি আন্দোলন দেখে টাটা কোম্পানি রাজ্য ছেড়ে পালাল, আর সে দিন থেকেই চারিদিকে বার্তা রটি গেল, পশ্চিম বাংলায় শিল্প স্থাপনের কোনও আদর্শ পরিবেশ নেই।

টাটা আর বামফ্রন্ট সরকারের বিদায়ের পর পরিবর্তনের সরকার এল। মানুষের আশা ছিল এ রাজ্যে শিল্পের দীর্ণ দশার এ বার অবলুপ্তি ঘটবে। কিন্তু সেই আশা ক্রমেই নিরাশায় পরিণত হচ্ছে। জ্যোতিবাবুর মতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শিল্পপতি ধরতে লন্ডন, হংকং যাচ্ছেন মাঝে মধ্যে। প্রতি বছর ঘটা করে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনও করছেন। কিন্তু কোনও শিল্পপতি ধরা দিচ্ছেন না। যে রাজ্যে শিল্প নীতি, জমি নীতি বিনিয়োগ-সহায়ক নয়, সিন্ডিকেট রাজের কাছে মাথা নোয়াতে হয়, সেখানে কেন বিনিয়োগে উৎসাহ বোধ করবেন শিল্পপতিরা? দু’এক জন শিল্পপতি তাঁদের আগে থেকে করা বিনিয়োগের উপর যাতে আঘাত না আসে তার স্বার্থে ‘পশ্চিম বাংলায় শিল্প পরিবেশ আছে’ বললেই বাস্তব মিথ্যা হয়ে যাবে?

কেন ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড তৈরি করেও চালু করা গেল না? কেন তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাকে প্রোজেক্ট বৃদ্ধি করার সরকারি সুবিধা দেওয়া গেল না? কেনই বা শিল্প নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে অহিনকুল সম্পর্ক বজায় রয়েছে? শিল্পপতিরা কি বোঝেন না যে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক ভাল না থাকলে তাঁদের পক্ষে শিল্প সহায়ক পরিবেশ পাওয়া সম্ভবপর নয়? এই জন্য প্রধানমন্ত্রীকে শিল্পপতিদের ভয় দেখিয়ে বাংলায় বিনিয়োগ বাধা দেওয়ার প্রয়োজন হবে কেন? ইতিবাচক রাজনীতির পথে না হেঁটে প্রধানমন্ত্রীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুললে কি ‘আইসিইউ’ থেকে রাজ্যের শিল্প পরিস্থিতিকে বের করে আনা যাবে? খুব জোর আরও কিছু দিন ক্ষমতায় থাকাটা হয়তো পাকা করা যাবে, যেমন বামফ্রন্ট সরকার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলে করতেন।

মিহির কানুনগো

কলকাতা-৮১

ট্রাকের লাইন

বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যে অঞ্চলটি ব্যারাকপুর কমিশনারেটের মধ্যে পড়ে, সেই রাস্তায় কলকাতামুখী অসংখ্য ট্রাক সারা দিন ধরে রাস্তার ধারে লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকে। পথচারীরা হেঁটে চলাচল করতে পারেন না। খলিসাকোটা দু’নম্বর, তিন নম্বর এবং চার নম্বরের বহু লোক ওই রাস্তা দিয়ে প্রাণ হাতে যাতায়াত করেন। সার্ভিস রোড এখনও চালু হয়নি, ফলে মেন রোড ধরেই যাতায়াত করতে হয়।

পুলিশ তথা সিভিক ভলান্টিয়ারদের চোখের সামনেই ট্রাকগুলো রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। বর্তমানে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের অবস্থা খুব খারাপ। অসংখ্য খানাখন্দ সারা রাস্তা জুড়ে। ট্রাকগুলো খানাখন্দের হাত থেকে বাঁচার জন্য রাস্তার বাঁ দিক ঘেঁষে চলে। ফলে সব সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা। বিধাননগর কমিশনারেটের এলাকাতেও ট্রাকের সারি দাঁড়িয়ে থাকত, এখন সেটা অনেক কমেছে। কিন্তু ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এলাকায় ট্রাকের লম্বা লাইন রয়েই গিয়েছে।

সমীরবরণ সাহা

কলকাতা-৮১

প্লাটিনাম জয়ন্তী

লন্ডন ডায়েরিতে (২৬-১১) রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপের বিয়ের ৭০ বছর পূর্তিতে ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উদ্‌যাপনের কথা লেখা হয়েছে। কিন্তু প্লাটিনাম জয়ন্তী হয়ে থাকে ৭৫ বছর পূর্তিতে, ৭০ বছরে নয়।

শংকরকুমার দত্ত

কলকাতা-১০৪

সম্পাদকীয় উত্তর: রাজতন্ত্র বা রাজপরিবারগুলির ক্ষেত্রে ৭০ বছর পূর্তির উদ্‌যাপনকেই প্লাটিনাম জয়ন্তী উদ্‌যাপন বলা হয়ে থাকে। তাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল অতুল্যতেজ ৭০ বছর রাজত্বকাল পূর্তিতে দেশ সম্প্রতি প্লাটিনাম জয়ন্তী উৎসব করল। ইংল্যান্ডে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ-প্রিন্স ফিলিপের বিয়ের ৭০ বছর পূর্তিও প্লাটিনাম জয়ন্তী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Letters To Editor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE