Advertisement
০৩ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: বিদ্যাসাগর ২০০ এবং

জেনে রাখা ভাল, বেশ কয়েক বছর আগেই বড়বাজার ব্রাঞ্চের দিবা বিভাগের ছেলেদের স্কুলটি ছাত্রাভাবে উঠে গিয়েছে (ডিরেকগনাইজ়ড)। শিক্ষকদের কেউ বা অবসর নিয়েছেন। অন্যরা দু’তিনটি বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়ে বর্তমানে কর্মরত। বৌবাজারের স্কুলটিরও বাংলা মাধ্যমে ছাত্রাভাব।

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হতে চলেছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মের ২০০ বছরের অনুষ্ঠান। এক বছর ধরে চলবে। শেষ হবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই বিশাল কর্মকাণ্ডের উদ্যোক্তা। এ দিকে এ রাজ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব অনুধাবন করে রাজ্য সরকার ১০০টি বাংলা মাধ্যম স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা গেল, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন বড়বাজার ব্রাঞ্চ স্কুলটিতে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিদ্যাসাগর মহাশয় কলকাতায় প্রথম যে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন, সেটির নাম মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন (মেন) (যার বর্তমান ঠিকানা ৩৯ শংকর ঘোষ লেন, কলকাতা-৬, বিদ্যাসাগর কলেজ সংলগ্ন)। প্রতিষ্ঠাকাল ১৮৬৪ সাল। এর বেশ কয়েক বছর পরে, ঊনবিংশ শতকে আশির দশকে, বিদ্যাসাগর মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন বড়বাজার ব্রাঞ্চ (যার বর্তমান ঠিকানা ১০ প্রসন্নকুমার ঠাকুর স্ট্রিট) ও মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন বৌবাজার ব্রাঞ্চ (ঠিকানা ৩৯ ক্রিক রো) প্রতিষ্ঠা করেন।

জেনে রাখা ভাল, বেশ কয়েক বছর আগেই বড়বাজার ব্রাঞ্চের দিবা বিভাগের ছেলেদের স্কুলটি ছাত্রাভাবে উঠে গিয়েছে (ডিরেকগনাইজ়ড)। শিক্ষকদের কেউ বা অবসর নিয়েছেন। অন্যরা দু’তিনটি বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়ে বর্তমানে কর্মরত। বৌবাজারের স্কুলটিরও বাংলা মাধ্যমে ছাত্রাভাব। কয়েক বছর আগেই হিন্দি মাধ্যমে পড়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন (মেন)— যেখানে স্বামী বিবেকানন্দের মতো মনীষী পড়াশোনা করেছেন, কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, মোহিতলাল মজুমদারের মতো খ্যাতকীর্তিরা শিক্ষকতা করেছেন— সেখানে আজ উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষকের অভাবে বিজ্ঞান বিভাগ, বাণিজ্য বিভাগ বন্ধ হতে চলেছে।

কলকাতার বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলির দুই-তৃতীয়াংশ ছাত্রাভাবে ধুঁকছে। অথচ কলকাতা-সহ রাজ্যের শহরাঞ্চলের বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার তেমন কোনও সদর্থক প্রয়াস পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন (মেন)-এ ২৪ বছর শিক্ষকতার পর মনে হচ্ছে, আমরা বিদ্যাসাগরের জন্মের ২০০ বছর উদ্‌যাপন করতে যাচ্ছি, কিন্তু বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলি বাঁচবে কী ভাবে, তা ভাবছি না?

মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন (মেন) ২০১৪ সালে ১৫০ বছর অতিক্রম করেছে। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে স্টার প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত ছিলেন ভারতের তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মাননীয় রাজ্যপাল, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী মাননীয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, স্থানীয় সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। দেড়শো বছর অতিক্রান্ত এই ঐতিহ্যপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি এখনও শহরের হেরিটেজ প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পায়নি। কলকাতা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের উদাসীনতায় এই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগে কোনও শিক্ষক অবসর নিলে পরিবর্তে কোনও শিক্ষক পাওয়া যায় না। ফলে উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ সঙ্কটের মুখে। আর উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ যদি কাঙ্ক্ষিত মান ধরে রাখতে না পারে, তা হলে মাধ্যমিক বিভাগেও ছাত্রসংখ্যা কমতে বাধ্য। ঠিক তা-ই হয়েছে। আজ এই বিদ্যালয়ে ছাত্রসংখ্যা পাঁচশোর কম। উচ্চ মাধ্যমিকে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের সংখ্যা কম। মাধ্যমিক বিভাগের অনুমোদিত শিক্ষক পদ বর্তমান প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। এই বিদ্যালয়কে রক্ষা করতে যদি মাধ্যমিক বিভাগের পদসমূহকে উচ্চ মাধ্যমিকে কনভার্ট করা যায় তা হলে উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ বাঁচে, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাণ ফিরে পায়। বিদ্যাসাগরের আত্মা শান্তি পায়।

নবকুমার কর্মকার

কলকাতা-৬৭

আবার আসব

কলকাতার কড়চায় প্রকাশিত ‘পায়ে পায়ে মেটিয়াবুরুজ’ অনুষ্ঠানের খবর (‘পায়ে পায়ে’, ৩১-১২) সম্পর্কে এই চিঠি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন খবর প্রকাশিত হয়, কিন্তু পরে সেই অনুষ্ঠানটা কেমন হল সেটা অনেক সময়েই আর প্রকাশিত হয় না। এমনিতেই আমাদের অজান্তেই কোথায় যেন ঢুকে গিয়েছে মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ, তার মধ্যে যদি ‘শিয়া-সুন্নি’ ‘ইমামবাড়া’ শব্দগুলো আসে, এই দূরত্ব বাড়ে বই কমে না। যখন অনুষ্ঠানের ভাবনাটা মাথায় আসে, আমরা অনেকেই ভাবিনি এমন অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যাবে। তার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় চলে প্রচার। কড়চায় বেরোনোর পর, একের পর এক ফোন আসতে থাকে। ৬-১-১৯ তারিখ সকালেও লোকে জানতে চাইছেন, কী ভাবে যাবেন, কোন রাস্তায় কী বাস পাওয়া যাবে। এই ফোন এবং মেসেজ দেখেও বোঝা যাচ্ছিল, কলকাতা শহরের মধ্যে একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে, যা আমরা জানি না। যার মধ্যে দিয়েই দূরত্ব তৈরি হয় এবং হচ্ছে।

চলা শুরু হয়েছিল সুরিনাম ঘাট থেকে, এই ঘাটটি আগে বালু ঘাট নামে পরিচিত ছিল। অষ্টাদশ শতকে এখানে ডাচ উপনিবেশ ছিল, ব্রিটিশ কোম্পানি দ্বারা জাহাজে করে এখান থেকে দক্ষিণ আমেরিকার সুরিনামে শ্রমিক পাঠানো হত।

এই ঘাটের কাছেই হুগলি নদী একটি বাঁক নিয়েছে। সেখানে বিভিন্ন রাজাদের বিশ্রামস্থল তৈরি হয়েছিল। কয়েকটি ইমামবাড়াও আছে। সবাই হেঁটে হেঁটে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখলেন। ইমামের বাড়ি হল ইমামবাড়া। কতগুলি ইমামবাড়া আছে, সেগুলি ঘুরে দেখা, ছবি তোলা, ইতিহাস জানা। স্থানীয় মানুষজন কৌতূহলী, কোথা থেকে এসেছেন? মসজিদের সামনে গিয়ে পদযাত্রায় ক্লান্ত লোকজন মসজিদের চাতালে বসতে চাইলে, এলাকার মানুষজন আন্তরিকতায় জায়গা করে দিলেন।

এর পর শাহি ইমামবাড়া। সেখানে আলাপচারিতা, গল্প আড্ডা চলল। ঝকমকে ঝাড়বাতিতে সাজানো শাহি ইমামবাড়ার পাশেই সদর্পে উড়ছে ভারতের বিরাট জাতীয় পতাকা। হ্যাঁ, এটা আমাদেরই শহর কলকাতা, আমাদেরই দেশ, ‘মিনি পাকিস্তান’ নয়।

‘আবার আসিব ফিরে’ এই অঙ্গীকারে সবার বাড়ি ফেরা, কিন্তু গল্প যেন শেষ হতেই চায় না। নবাবি আমলের পানের দোকান এবং সেই দোকানের মালিকের সঙ্গে আলাপ করা হল, তাঁকেও কথা দেওয়া হল, আবার আসব।

সুমন সেনগুপ্ত

কলকাতা-৭৫

বার্জ

‘ভাটা কাটিয়ে রাতের বার্জে এল রক্ত’ (১৪-১) পড়লাম।

মূল্যবান রক্ত বাঁচানোর জন্য জেলাশাসকের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু, করদাতা হিসাবে আমার প্রশ্ন, এই বার্জের এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট খরচ ওই রক্তসংগ্রহকারী সংস্থা

দেবে তো? কেননা, কোনও দৈব-দুর্বিপাকের কারণে তো সে দিন ওই বার্জ আনার দরকার পড়েনি... ভাটা নির্দিষ্ট সময়েই এসেছিল। ভুল ছিল ওই সংস্থার পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনায়। তাঁদের আগে থেকেই খোঁজ নিয়ে রাখা উচিত ছিল, শেষ বার্জ কখন ছাড়ে।

সরিৎ রায়

ইমেল মারফত

চাঁদা-দাদা

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ঘুরে এলাম নদিয়ার পায়রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত মঙ্গলদীপ থেকে। পায়রাডাঙা থেকে মঙ্গলদীপ, এই স্বল্প দূরত্বের যাত্রাপথে আমরা তিনটি জায়গায় চাঁদ-দাদাদের খপ্পরে পড়ি। আমরা দু’টি বাসে করে পিকনিক করতে যাই। আমি দ্বিতীয় বাসে ড্রাইভারের কেবিনে বসে ছিলাম। কেবিন থেকেই সেই চাঁদা-দাদাদের তর্জনী-গর্জন দেখতে লাগলাম। পরে চাঁদা মিটিয়ে দেওয়ার পর সেই মহামানবের দল আমাদের বাস দু’টিকে ছেড়ে দেয়। আমার প্রশ্ন— এ ভাবে আর কত দিন চাঁদাবাজি চলবে?

পবিত্রমোহন বিশ্বাস

চরমণ্ডল, উত্তর চব্বিশ পরগনা

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Birthday Ishwar Chandra Vidyasagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE