Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: সেই সব পঞ্চায়েত

তখন গ্রামবাংলার মানুষ পঞ্চায়েতের মাধ্যমে অনেক কাজ নিজেরাই করতেন। মনে পড়ে ’৭৮-এর বন্যার পর পঞ্চায়েতের সদস্যদের ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজে সহযোগিতার কথা।

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩৯

‘ভোট আছে, হিংসাও, নেই সেই পঞ্চায়েত’ (৬-৪) শীর্ষক সংবাদে প্রতিবেদক খুব সুন্দর ভাবে বামফ্রন্ট এবং তৃণমূল এই দুই আমলের পঞ্চায়েত ব্যবস্থার তুলনা করেছেন। বিগত শতকের আশির দশকে চরম রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও জ্যোতি বসুর বাংলার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা রাজীব গাঁধীরও পছন্দ হয়েছিল। তিনি সংবিধান সংশোধন করে নব্বইয়ের দশকের শুরুতেই পঞ্চায়েত ও নগর পালিকা বিল সংসদে পাশ করিয়ে আইনে পরিণত করেছিলেন। সারা ভারতে অনুসৃত হয়েছিল বাংলার পঞ্চায়েতের সেই মডেল।

তখন গ্রামবাংলার মানুষ পঞ্চায়েতের মাধ্যমে অনেক কাজ নিজেরাই করতেন। মনে পড়ে ’৭৮-এর বন্যার পর পঞ্চায়েতের সদস্যদের ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজে সহযোগিতার কথা। ভূমিসংস্কারের মাধ্যমে ভূমিহীনদের মধ্যে জমির পাট্টা দেওয়া, সমবায় থেকে ঋণ, কৃষি দফতর থেকে উন্নত জাতের বীজ সার, সেচের ব্যবস্থা করে দেওয়ার ফলে গ্রামবাংলার খাদ্য উৎপাদন বেড়েছিল। আজ সে সব ইতিহাস।

এখন আর পঞ্চায়েতের সেই গুরুত্ব নেই। রাজ্য প্রশাসনের অংশ হিসাবে খোদ নবান্ন থেকেই জেলাশাসক, বিডিওদের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে। অথচ সেই ১৯৭৭ সালেই জ্যোতি বসু বলেছিলেন, রাইটার্স বিল্ডিং থেকে নয়, গ্রামের মানুষ তাঁদের মতো করে গ্রামোন্নয়ন ঘটাবেন। ঠিকই তো, যত বুদ্ধিমান আমলাই হোন না কেন, গ্রামের কোন জায়গায় সাঁকোটা করলে সব জলটা নিকাশ হবে, তাঁরা জানবেন না। গ্রামবাসীরা জানবেন। আজ সেই গ্রামবাসীরাই অবহেলিত।

আর এ বারের এই নবতম পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁদের কাউকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ পর্যন্ত করতে দেওয়া হল না। অনেক আসনে শাসক দলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেলেন। যাঁরা আগের জমানার দোষ-ত্রুটি ধরতেন, তাঁরা এখন কী বলবেন?

তপোময় ঘোষ কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান

রক্তাল্পতা

‘রক্তাল্পতার সহজ ওষুধ’ (২৪-৩) নিবন্ধটি ভুল বার্তা দিল। কুলেখাড়া, কলমি, সজনে, হিঞ্চে, থোড়, মোচা, ডুমুর প্রভৃতি শাকসব্জিতে নানা মাত্রায় লোহা বা আয়রন থাকে। কিন্তু উদ্ভিজ্জ আয়রন খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ে না। অ্যানিমিয়া সারে না। কারণ উদ্ভিদে থাকে যে লোহা, তা অন্ত্র শোষণ করতে পারে না। তাই তা রক্তে গিয়ে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে পারে না। ওই লোহা থেকে তৈরি যৌগগুলি মলের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। শাকপাতা খেয়ে অ্যানিমিয়া সারানোর ধারণা ক্ষতিকর অপবিজ্ঞান। শাকপাতা খাওয়া দরকার ভিটামিনের জন্য, ফাইবারের জন্য। লোহার জন্য নয়।

মাছ, মাংস, ডিমে থাকা প্রাণিজ লোহার চল্লিশ থেকে নব্বই শতাংশ অন্ত্রে শোষিত হয়ে রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়, যদি নিয়মিত খাওয়া যায়। মিড-ডে মিলে এগুলি দেওয়া প্রয়োজন।

শিশুদের অ্যানিমিয়া দূর করতে হলে মিড-ডে মিলের সঙ্গে ‘চিলড্রেন ফলিফার’ বড়ি খাওয়ানো দরকার। সঙ্গে অন্ত্রে বাসা-বাঁধা রক্তচোষা হুকওয়ার্ম ধ্বংসের ওষুধ দিতে হবে। আর ডিম, মাছ, মাংস থাকলে ভাতের পাতে একটু লেবু, যা অন্ত্র থেকে প্রাণিজ লোহার শোষণ বাড়াবে। খিচুড়িতে শাকপাতা থাক। কুলেখাড়ার শাক বাছতে বাছতে স্বল্প-বেতনের মহিলা কর্মীরা মিথ্যে জেরবার হবেন কেন?

শ্যামল চক্রবর্তী আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

মনে রাখা ভাল

আমাদের দেশের, বা আরও নির্দিষ্ট ভাবে বলতে গেলে আমাদের রাজ্যের, অধিকাংশ মহিলা সবচেয়ে বেশি রক্তাল্পতায় ভোগেন গর্ভাবস্থায়। এর একটি কারণ যেমন দেহের সাধারণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, তেমনই সরকারি তরফে যথেষ্ট যত্ন নেওয়া হয় না অন্তঃসত্ত্বাদের।

‘জাতীয় রক্তাল্পতা নিয়ন্ত্রণ কমিটি’র নির্দেশ অনুযায়ী, গর্ভাবস্থায় রক্তাল্পতা প্রতিরোধে রোজ ১০০ মিলিগ্রাম ধাতব আয়রন এবং ৬০০ মাইক্রোগ্রাম ফোলিক অ্যাসিড খাওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ ও ভিটামিনসমৃদ্ধ শাকসব্জি খেতে বলা হয়। যেমন হেলেঞ্চা, কলমি শাক, পালং শাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি। গর্ভাবস্থায় সর্বমোট ১০০০ মিলিগ্রাম ধাতব আয়রন প্রয়োজন।

গর্ভাবস্থায় প্রধানত ‘নর্মোসাইটিক নরমোক্রোমিক’ রক্তাল্পতা দেখা যায়, কিন্তু রক্তাল্পতা ভয়ানক আকার ধারণ করলে, ‘মাইক্রোসাইটিক হাইপোক্রমিক’ রক্তাল্পতায় পরিণত হয়। একমাত্র রক্তে সিরাম ফেরিটিনের পরিমাণ নির্ণয় করে রক্তাল্পতার ভয়াবহতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা করা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি দিনের আয়রনের পরিমাণ দু’গুণ করে দিতে হবে অর্থাৎ প্রতি দিন ২০০ মিলিগ্রাম আয়রন গ্রহণ করতে হবে, যা দু’সপ্তাহ পরে সরাসরি হিমোগ্লোবিন মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস কোনও ভাবেই আয়রন বড়ি সরবরাহ করা যাবে না মহিলাদের। কারণ তার ফলে ভ্রূণের হাড়ের গঠনে বৈকল্য দেখা যায়, যকৃতের প্রদাহ হয় এবং মায়েদেরও শারীরিক দুর্বলতা, বমিভাব, মাথাঘোরা, ঝিমুনি ইত্যাদি লক্ষ করা যায়।

আমরা মহিলাদের গর্ভাবস্থায় যে আয়রন বড়ি সরবরাহ করি খাওয়ার জন্য, তার নাম ফেরাস ফিউমারেট। কিন্তু কারও কারও তাতে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তাঁদের ক্ষেত্রে ফেরিক কার্বোক্সি মলটোজ হল সবচেয়ে নিরাপদ। তাই হাতে যে হেতু বিকল্প আছে, তাই ভাবনা চিন্তা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।

আবু তাহের কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল

পরীক্ষার প্রশ্ন

এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার ভূগোলের ‘চ’ বিভাগের ৬.১০ নম্বর প্রশ্নে মানচিত্রে ভারতের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। পরীক্ষকদের কাছে পাঠানো নমুনা উত্তরপত্রে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঠিক বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্নটি বিভ্রান্তিকর। যাত্রী পরিষেবার দিক থেকে হলে এটি হবে দিল্লির বিমানবন্দর, কিন্তু আকারের দিক থেকে হলে, হায়দরাবাদের রাজীব গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

‌‌‌‌‍দীপক মিত্র কলকাতা-৩৪

বাইক মিছিল

পঞ্চায়েত ভোট বা অন্যান্য ভোটেরও নির্বাচনী প্রচারের একটি বিশেষ অঙ্গ বাইক বাহিনীর মিছিল। এই মিছিল যে কেবল শক্তি বা ভীতি প্রদর্শন করে, তা নয়। সঙ্গে দেশের পেট্রোলিয়ামজাত তেলের ভান্ডারের অপচয় ঘটায়। গত বছর এই তেল আমদানিতে দেশকে প্রায় পাঁচ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে, এ বছরে যা বর্ধিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা।

অজিত রায় নোনাচন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর

নিরীহ অস্ত্র

যতই ধর্মীয় আবেগ থাকুক না কেন, অস্ত্রশস্ত্র বহন করে যে কোনও ধর্মীয় শোভাযাত্রা, বিশেষ করে যুবক ও বাচ্চাদের কোমল মনে, এক উন্মাদনা সৃষ্টি করে। হাতে অস্ত্র থাকলে নিজেদেরকে বেশ বলীয়ান বলে মনে হয়। এ ব্যাপারে জোর করে প্রথা বন্ধ করলেও তার বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা। তাই আমার প্রস্তাব: যদি মিছিলে হালকা অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় ধাতুর পাত দিয়ে তৈরি বা প্লাইউডের তৈরি তরোয়াল, ত্রিশূল ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়, অস্ত্রগুলি প্রতীক হিসাবে ব্যবহৃতও হল, আবার অশান্তিও এড়ানো গেল।

অসিতকুমার মজুমদার কলকাতা-৬১

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

Election West Bengal Panchayat Election 2018 contestant
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy