Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: বিয়েপ্রস্তাব কেন নয়?

যুবকটিকে মুম্বই পুলিশ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সাহায্যে মহিষাদল থেকে গ্রেফতার করে মুম্বই নিয়ে গিয়ে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে। যুবকটির অভিভাবক পুলিশকে চিকিৎসার কাগজপত্র দিয়ে প্রমাণ করেছেন, সে মানসিক ভারসাম্যহীন।

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৯

কিংবদন্তি ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকরের মেয়েকে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক টেলিফোনে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছে। আমাদের দেশে সেলেব্রিটি, মন্ত্রী-সান্ত্রিদের সঙ্গে সাধারণের যোগাযোগ করা অলিখিত ভাবে নিষিদ্ধ এবং ঘোরতর অন্যায়। যা অন্যান্য সভ্য দেশে নয়। যুবকটিকে মুম্বই পুলিশ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সাহায্যে মহিষাদল থেকে গ্রেফতার করে মুম্বই নিয়ে গিয়ে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে। যুবকটির অভিভাবক পুলিশকে চিকিৎসার কাগজপত্র দিয়ে প্রমাণ করেছেন, সে মানসিক ভারসাম্যহীন। সে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেছে, ‘আমি সচিনের মেয়েকে বিয়ে করতে চাই।’ এটাই তো একটা বড় প্রমাণ যে সে মানসিক ভারসাম্যহীন। শেষে তার পুলিশ হেপাজত হয়েছে।

মানসিক ভারসাম্যহীনকে গ্রেফতার, বিচার, হেপাজত হাস্যাস্পদ নয় কি?

আচ্ছা, এ বার তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া যাক, সে মানসিক ভারসাম্যহীন নয়। সে কী করেছে? বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছে। বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া কি অন্যায়? অবশ্য সেলেব্রিটির ক্ষেত্রে অন্যায়। কিন্তু, একটু বুঝেশুনে, ব্যাপারটাকে লঘু করে দেওয়া যেত না কি? মুম্বই পুলিশের যাতায়াত, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সাহায্য, ট্রানজিট রিমান্ড, আদালতে তোলা— এ সমস্ত খরচ রাজকোষ থেকেই তো হবে।

বহু দাগি আসামিকে পুলিশ ধরছে না বা ধরতে পারছে না। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপও রয়েছে। কত দাগি আসামি নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বিজয়ীও হচ্ছে। এমনকী কেউ কেউ মন্ত্রীও হচ্ছে। এ বিষয়ে আইন করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হতে হচ্ছে। এই যখন পরিস্থিতি, একটি নিরীহ মানসিক ভারসাম্যহীনকে নিয়ে এ ভাবে কাণ্ডকীর্তি করার প্রহসনের কি প্রয়োজন ছিল?

মুস্তাফী অমরনাথ, কলকাতা-৮৪

নাটকেও ছিলেন

‘ভাষাচার্য সুনীতিকুমার’ (পত্রিকা, ৩০-১২) শীর্ষক লেখায় জানানো হয়েছে, শিশিরকুমার ভাদুড়ি প্রযোজিত ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকে পোশাক পরিকল্পনা করেছিলেন সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়। এই বিষয়ে আরও কিছু তথ্য সংযোজন করতে চাই। নাটকটি প্রথম অভিনীত হয় বর্তমান ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট গৃহের দ্বার উদ্ঘাটন ‌উপলক্ষে। উদ্ঘাটন ‌করেন তদানীন্তন ব্রিটিশ গভর্নর, বিংশ শতকের প্রথম দিকে। আমার বাবা প্রফুল্লচন্দ্র ঘটক ওই নাটকের স্টেজ ম্যানেজার ছিলেন। তিনি ইনস্টিটিউটের ছাত্র-সম্পাদকও ছিলেন। বাবার কাছে শুনেছি, নাটকের গ্রিক সৈন্যদের ঢাল-এ, গ্রিক ভাষায় লেখা ছিল ‘ঈশ্বর মহান’ ইত্যাদি। গভর্নর গ্রিক ভাষা জানতেন। তিনি চমৎকৃত হয়ে জানতে চান, সৈন্যদের সাজসজ্জা কে করেছে? পোশাক থেকে শুরু করে সব কিছুই সুনীতিকুমার করেছিলেন। তিনি সুনীতিবাবুকে ডেকে তক্ষুনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পদ দিতে চান। সুনীতিকুমার তাঁকে বলেন, তিনি বিদেশে গিয়ে আরও উচ্চ শিক্ষা নিতে চান। কাজেই সরকারি পদগ্রহণ সম্ভব নয়। তিনি চাকরিটা নিলে, আমরা ভাষাচার্যকে হারাতাম।

আশিসকুমার ঘটক, কলকাতা-২৮

দিগম্বর নন্দ

‘বেলদা গঙ্গাধর একাডেমির শতবর্ষ উদযাপন’ (৪-১) শীর্ষক লেখাটি পড়লাম। প্রকৃতপক্ষে মুগবেড়িয়া নন্দবংশের ঐতিহ্যমণ্ডিত ইতিহাসে সমস্ত উন্নয়নের প্রকৃত রূপকার হলেন রায়সাহেব গঙ্গাধর নন্দের দাদা, প্রখ্যাত বিপ্লবী দিগম্বর নন্দ বিদ্যানিধি। তিনি বেলদাসহ পুরী, বারাণসী, গয়া, কলকাতা ও বহু জায়গায় জনগণের স্বার্থে পান্থশালা, পুকুর, দাতব্য চিকিৎসালয়, স্কুল প্রভৃতি স্থাপন করেন।

পরে ব্রিটিশ শাসকেরা তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য তাঁর মুগবেড়িয়ার বাড়ি ঘিরে ফেললে, তিনি পাচকের ছদ্মবেশে বাঁকুড়ার ফুলকুশমার ছাঁদাপাথরে পালিয়ে যান। সেখানেও তাঁর জমিদারি ছিল। সেখান থেকে বারাণসী চলে যান এবং বারাণসী থেকেই সশস্ত্র বিপ্লবের কাজ চালাতে থাকেন। তাঁরই ব্যবস্থাপনায় বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু, কিংসফোর্ড হত্যাকাণ্ডের আগে, মুগবেড়িয়ায় দিগম্বর নন্দের বাড়িতে যুবকদের এক মাসের বেশি সময় অন্তরালে থেকে অস্ত্রশিক্ষা, লাঠিচালনা প্রভৃতি প্রশিক্ষণ দেন। তাঁরই নির্দেশমত তাঁর অসমাপ্ত কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিয়ে যান তাঁর সুযোগ্য ভাই গঙ্গাধর নন্দ।

জয়তী নন্দ আচার্য, কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর

খাতা দেখা

এখন পরীক্ষার ফলাফল দেরিতে প্রকাশ একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষক সমাজের কোনও হেলদোল নেই। বরং কোনও কোনও কলেজের অধ্যক্ষ দাবি করেন, কম পারিশ্রমিক এবং পারিশ্রমিকের টাকা দেরিতে পাওয়া হল এই দেরির কারণ। এই যুক্তি ধোপে টেকে না। পারিশ্রমিকের টাকার উপর মহাবিদ্যালয়ের স্থায়ী শিক্ষকদের জীবিকা নির্ভর করে না। পড়ানোর মতো, খাতা দেখা শিক্ষকদের আবশ্যিক কাজের পর্যায়ভুক্ত। শিক্ষক সমাজ যদি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই কাজে এগিয়ে না আসেন, তা হলে তাঁদের বাধ্য করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আইন প্রণয়ন করতে হবে। কিছু পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়া হল— ১) পরীক্ষার খাতা পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরে স্থানান্তর এবং সেখান থেকে পরীক্ষকের কাছে পাঠানোর পদ্ধতিটি বর্জন করতে হবে। এতে প্রচুর সময় নষ্ট হয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার দু’এক দিনের মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষকদের মধ্যেই উত্তরপত্র বণ্টন করে দিতে হবে। ২) পরীক্ষাকেন্দ্রে কোনও বিষয়ে পরীক্ষক না পাওয়া গেলে পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর সেই উত্তরপত্র কেন্দ্রীয় স্তরে জমা না করে, সাত দিনের মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে সরাসরি কাছাকাছি যে মহাবিদ্যালয়ে ওই বিষয়ের শিক্ষক আছেন, সেখানে পাঠিয়ে দেবে। ৩) পরীক্ষার খাতা দেখার প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা নিয়ামক ছাড়াও মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষদেরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। ৪) সাধারণ বিষয় বা পাসের বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে পরীক্ষা নেওয়া ও উত্তরপত্রের মূল্যায়নের দায়িত্ব মহাবিদ্যালয়ের হাতেই অর্পণ করতে হবে। ৫) খাতা দেখার জন্য স্থায়ী শিক্ষকদের কোনও পারিশ্রমিক না দিয়ে, অতিথি শিক্ষক ও আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বর্ধিত হারে পারিশ্রমিক দিতে হবে। ৬) যে-সব শিক্ষকের কর্তব্যহীনতার জন্য পরীক্ষার ফল প্রকাশে বিলম্ব ঘটবে, তাঁদের তিরস্কৃত করতে হবে। বিশেষ ভাবে স্থায়ী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে চাকরি সংক্রান্ত পুস্তিকায় তা নথিভুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে, দায়িত্বপরায়ণ শিক্ষকদের পুরস্কৃত করতে হবে।

৭) স্থায়ী শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে থাকার সময় অন্যান্য চাকরির মতো পাঁচ ঘণ্টার পরিবর্তে আট ঘণ্টা করা দরকার, যাতে শিক্ষকগণ বাড়তি তিন ঘণ্টায় খাতা দেখতে পারেন। একই জায়গায় বসে সকলের সঙ্গে খাতা দেখা শুরু করলে মূল্যায়নের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে এবং কাজের ক্লান্তি আসবে অনেক দেরিতে। বাড়িতে উত্তরপত্র মূল্যায়নের সময় নানা অপ্রাসঙ্গিক পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়তে হয়। কাজ ব্যাহত হয়।

নূরুল ইসলাম, প্রাক্তন শিক্ষক, বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজ

রেলের জন্য

দূরপাল্লার রেলযাত্রার সময় দেখি, লাইনের দু’পাশে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য প্লাস্টিক, পলিথিন, থার্মোকল ও অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের কাপ-ডিশ, সিন্থেটিক ব্যাগ, বিস্কুট, কেক-পেস্ট্রির মোড়ক, চানাচুরের খালি প্যাকেট, বোতল। ট্রেন ছোটার সময় বাতাসে সেই প্লাস্টিক উড়তে উড়তে আশেপাশের খেত-খামারে পড়ে ভয়ংকর দূষণের সৃষ্টি করে। এখন রেলওয়ে কেটারিং সার্ভিসে সব কিছু পলিপ্যাক ও অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে প্যাক করে পরিবেশন করা হয়। অথচ অ্যালুমিনিয়ামের দীর্ঘ ব্যবহারে জটিল অন্ত্রের রোগসহ বহু গুরুতর রোগ হতে পারে।

সঞ্জীব রাহা, পাডিয়া মার্কেট, নদিয়া

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

Marriage proposal importance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy