জাতীয়তাবাদ
‘অন্য জাতীয়তাবাদের গল্প’ (১২-৩) শীর্ষক নিবন্ধে মুসলিম-পাকিস্তান-যুদ্ধ মার্কা জাতীয়তাবাদের বিকল্প হিসেবে উন্নয়নী জাতীয়তাবাদের কথা বলা হয়েছে। বাস্তবে, এই দুই প্রকার জাতীয়তাবাদের তফাত নেই।
উন্নয়নের নামেই দেশের জঙ্গলবাসী সহনাগরিকদের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। হিন্দু-হিন্দির জাতীয়তাবাদ ধাপে ধাপে সংবাদমাধ্যম, সামরিক প্রশাসন, নজরদারি সংস্থা, নিয়ামক ব্যাঙ্কের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। ফলে তাদের প্রয়োজনমতো আদেশনামা বার করতে অসুবিধে হয়নি। জঙ্গলে বসবাস করার অধিকার কেড়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য হল, বৃহৎ পুঁজির একচেটিয়া প্রাকৃতিক সম্পদ লুটের রাস্তাটিকে নিষ্কণ্টক করা।
নদীবাঁধ নির্মাণও এই বৃহৎ পুঁজির স্বার্থে দেশের সহনাগরিকদের উৎখাত করার আর একটা ফিকির বই কিছু নয়। নদীবাঁধ নির্মাণের ফলে নদী উপত্যকা ও তার তীরবর্তী জনপদগুলির কী দুর্দশা হয়েছে তা আমাদের সকলেরই জানা। অতিবৃষ্টির সময় জল ধরে রাখা ও খরার সময় সেই জল দিয়ে চাষবাস করার জন্য বাঁধ তৈরি হলেও, অতিবৃষ্টিতে বাঁধগুলির ধরে রাখার ক্ষমতার অতিরিক্ত জলে নদীখাতের আশপাশ ভয়ানক ভাবে প্লাবিত হয়। সঙ্গে বাঁধ ভাঙার বিপর্যয়ের আশঙ্কাও সব সময় খাঁড়ার মতো ঝুলে থাকে। উল্টো দিকে, খরার সময় কোথায় কত জল দেওয়া হবে, তা বৃহৎ পুঁজির নিয়ন্ত্রণে থাকা রাজনৈতিক ক্ষমতাশালীরা ঠিক করে।
কাজেই উগ্রহিন্দু জাতীয়তাবাদের বিকল্প কখনওই উন্নয়নী জাতীয়তাবাদ নয়, বরং উন্নয়নী জাতীয়তাবাদের সর্বগ্রাসী হিংস্রতার অন্যতম বড় জোগানদার বিভিন্ন ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ। একটি দেশের নাগরিক হতে গেলে, কোনও না কোনও রকম জাতীয়তাবাদের ‘সাবস্ক্রাইবার’ হতেই হবে, এই ধারণা পেরেক ঠুকে মাথায় ঢোকানোর চেষ্টা চলছে।
কিন্তু একটি দেশের নাগরিক হতে গেলে পৃথিবীর নাগরিক হওয়াটাও জরুরি, মানবসভ্যতা ও তার বাইরে থাকা সমস্ত জীবিতের পৃথিবীর জল-বাতাস-সম্পদের ওপর প্রাকৃতিক, অনিবার্য ও অলঙ্ঘনীয় অধিকার স্বীকার করাটাও জরুরি। তাই একমাত্র মানবতাবাদই হতে পারে জাতীয়তাবাদের বিকল্প।
অরিজিৎ কুমার
শ্রীরামপুর, হুগলি
সেবাব্রত
‘সেবাব্রতেই সেরা ফরাসি সম্মান নবতিপর ফাদার ফ্রাঁসোয়া লাবোর্দকে’ (৭-২) সংবাদে ব্রতচারী বিদ্যাশ্রম (জোকা)-র প্রাক্তন-বর্তমান ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকশিক্ষিকা-কর্মী, অভিভাবক ও শুভানুধ্যায়ীরা আনন্দিত ও গর্বিত।
১৯৭৭-৭৮ সালে নির্মলা মাতা মারিয়া গির্জার (হাওড়া) আশ্রয়ে থেকে ফাদার ‘প্রিকাস্ট কনস্ট্রাকশন’ কাজে পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তরে ব্রতী ছিলেন। সে সময়ে আমাদের বিদ্যালয়ের তদানীন্তন সেক্রেটারি রতন নস্কর মহাশয়ের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয়।
প্রথম দিন সকাল ৮টায় ফাদারের বিদ্যালয়ে আসার কথা। আমরা ৮:১৫ নাগাদ পৌঁছে দেখি রতনবাবুর সঙ্গে শীর্ণকায় এক ইউরোপীয় সাহেব কথা বলছেন। আমরা দশ মিনিট পদব্রজে এসে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছি, আর ফাদার হাওড়ার পিলখানা থেকে সাইকেল চালিয়ে সকাল ৭টা ৫০-এ স্কুলে এসেছেন।
তার পর এক যজ্ঞ। সে সময় আমাদের বিদ্যালয়ে ছাত্রদের বসার উপযোগী শ্রেণিকক্ষ কম ছিল। বিদ্যালয়ের উত্তর প্রান্তে তিন কামরার অ্যাসবেস্টস দেওয়া ঘর (প্রিকাস্ট ফ্যাব্রিকেশনের সাহায্যে) তৈরি হল। প্রায় সকালেই ফাদারকে ব্রতচারী বিদ্যাশ্রমে (ঠাকুরপুকুর সংলগ্ন) দেখতে পাওয়া যেত।
ঘর তৈরির পর অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ফাদারকে আজীবন সদস্য করতে রাজি করানো হল। তাঁর সদস্যপদ ডি আই কর্তৃক মঞ্জুর হলে তিনি রতনবাবুকে তাঁর প্রতিনিধি করলেন। মিতবাক্, শিশুর সরলতামাখা সদাহাস্যময়, কর্মঠ মানুষটির সঙ্গে স্কুলের যোগাযোগ ছিন্ন হয়— রতনবাবুর দেহত্যাগের পরে। বিদ্যালয় থেকে পাঠানো আমন্ত্রণ/নিমন্ত্রণ প্রায়ই ফিরে আসত।
এত বছর পর আবার ফাদারের সম্বন্ধে খবর পেয়ে আমরা আনন্দিত। ঈশ্বরের কাছে তাঁর সেবাব্রতে সুস্থ দীর্ঘ জীবন কামনা করি।
অসিত কুমার ঘোষ
কলকাতা-৬৩
হেলদোল নেই
প্রায় ৫০০ ছেলেমেয়ে শিক্ষকতার দাবিতে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। রোজ কেউ না কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অথচ আমরা কী আশ্চর্য রকম নির্বিকার, নির্লিপ্ত। সমস্ত বিষয়ে ট্রেনে বাসে অফিসে স্টাফরুমে আমরা তর্কের তুফান তুলি, অথচ রাজ্যের রাজধানীর মধ্যে এই শোচনীয় ঘটনা আমাদের অনুভূতির জগতে কোনও তরঙ্গই তোলে না।
নিয়মিত নিয়োগ না হওয়ায় বিদ্যালয়গুলি ধুঁকছে শিক্ষকের অভাবে, ও দিকে এসএসসি পাশ করে, ইন্টারভিউ ও নথি যাচাইয়ে উত্তীর্ণ হয়ে, তরুণ-তরুণী ধুঁকছেন অনশনে। গণমাধ্যমের একাংশ সরকারের সুরে সুর মিলিয়ে উন্নয়নের সানাই বাজাতে ব্যস্ত।
উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল
শেওড়াফুলি, হুগলি
মহিলা শৌচাগার
বিদ্যালয়ের নাম ফকিরচন্দ্র হাই স্কুল (স্থাপিত ১৯০০ সালে)। গ্রাম এবং পোস্ট জোরহাট, জেলা হাওড়া। স্কুলটি ছেলেদের। স্কুলটিতে চার জন শিক্ষিকা আছেন, কিন্তু কোনও মহিলা শৌচাগার নেই। তাঁদের ছেলেদের বাথরুমই ব্যবহার করতে হয়।
অনুপ মৈত্র
সাঁকরাইল, হাওড়া
প্রতারণা
আমি অশীতিপর বৃদ্ধ, প্রতারণার শিকার। আমার মাসশাশুড়ি একটি বৃদ্ধাশ্রমে গত ১৪ বছর থাকার পর, ২৯-৫-১৮ মারা যান এক হাসপাতালে। তাঁর পারলৌকিক কাজের পর, ১৪-৬-১৮ বৃদ্ধাশ্রমের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করি, মাসিমার জন্য গচ্ছিত আমার এক লক্ষ টাকা ফেরত দেবার জন্য। প্রথমে ওঁরা বলেন, টাকাটা তিন মাস পর পাবেন। তার পর বলেন, পুজোর পর পাবেন। তার পর গত ১০-৩-১৯ তারিখে মুখোমুখি বলেন, আপনি টাকা পাবেন না।
প্রশান্ত ভট্টাচার্য
বৈদ্যবাটী, হুগলি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।