Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: শুধুই কেন্দ্র দায়ী?

কিন্তু প্রশ্ন হল, এর দায় কি শুধুই রেলের? যাত্রীদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই? লকডাউনে কাজ হারিয়ে যাঁরা বাড়ি ফিরতে উদ্‌গ্রীব, তাঁরা সরকারি নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মান্য করবেন, এটা ভাবা কি বাড়াবাড়ি নয়?

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২০ ০০:০১

‘করোনা এক্সপ্রেসই’ (১৭-৬) চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা। পত্রলেখক শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনকে করোনা এক্সপ্রেস প্রমাণ করতে গিয়ে কেন্দ্র সরকারের একাধিক ক্ষেত্রের ব্যর্থতাকে তুলে ধরে (বিমুদ্রাকরণ, বাক্‌স্বাধীনতা হরণ) ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন, বোধগম্য হল না। শ্রমিক বহনকারী ট্রেনের সঙ্গে এগুলো কি আদৌ সম্পর্কিত?

পত্রলেখক কেন্দ্রের চার ঘণ্টার নোটিসে লকডাউন দেখতে পেলেন, অথচ রাজ্য সরকার যে কেন্দ্রের আগে লকডাউন ঘোষণা করেছে, তা দেখলেন না। দুর্ভাগ্যজনক। অস্বীকার করার উপায় নেই, ট্রেনে গাদাগাদি করে লোক পাঠানো হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এর দায় কি শুধুই রেলের? যাত্রীদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই? লকডাউনে কাজ হারিয়ে যাঁরা বাড়ি ফিরতে উদ্‌গ্রীব, তাঁরা সরকারি নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মান্য করবেন, এটা ভাবা কি বাড়াবাড়ি নয়? যে দেশে হেলমেট না পরলেও বাইক চালানো যায়, পেট্রোল পাম্পে তেল পাওয়া যায়, বাসে লোক বাদুড়ঝোলা হয়ে অফিস যেতে পারে, সে দেশে রেলের নির্দেশ শ্রমিকরা যথাযথ ভাবে পালন করবেন? তাঁরা তো ভয় ও আশঙ্কায় যে কোনও মূল্যে বাড়ি ফিরতে চাইবেন।
ট্রেনে অনেক মানুষ একসঙ্গে গাদাগাদি করে এসেছেন মানে কি তাঁরা সবাই করোনা নিয়ে আসছেন? তাঁদের মধ্যে কয়েক শতাংশ সংক্রমিত হতেই পারেন বা হবেন। কিন্তু সবাই করোনার ধারক ও বাহক, এমন মন্তব্য কি ঠিক? ভারতীয় আইন সব সময়ই বলে দোষী শাস্তি পাক, কিন্তু কোনও নির্দোষ ব্যক্তি যেন অকারণে শাস্তি না পান, সেটা নিশ্চিত করা দরকার। তা হলে ‘করোনা এক্সপ্রেস’ শব্দবন্ধটি একশো শতাংশ যথার্থ— এ ধরনের মন্তব্য ওই সুস্থ ও করোনা নেগেটিভ শ্রমিকদের ব্যথিত করল না? যখন প্রতি দিন বাইরে থেকে আসা শ্রমিকদের প্রতি মানুষের দুর্ব্যবহার সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নিচ্ছে, তখন প্রশাসনের শীর্ষমহলের এমন বার্তা কি করোনা ভীতিতে ঘৃতাহুতি দিল না?

পত্রলেখক প্রশ্ন তুলেছেন, যাবতীয় পরিকাঠামো-সহ এত দ্রুত কোয়রান্টিন সেন্টার তৈরি করা সম্ভব কি না। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে প্রায় দু’মাস আগে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে এক বিশিষ্ট চিকিৎসক বলেছিলেন, গ্রামের মানুষকে, বিশেষত স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী ও স্কুলগুলিকে, আইসোলেশন সেন্টার হিসাবে তৈরি রাখার জন্য। সরকার যখন জানতই অসংখ্য শ্রমিক বাইরে আছেন এবং তাঁরা আজ না হয় কাল নিজের রাজ্যে ফিরবেনই, তা হলে কেন গ্রামের প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিকে আগে থেকেই কোয়রান্টিন সেন্টারে পরিণত করা হল না? বর্তমানে সর্বত্রই প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিতেই শ্রমিকদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন-এর বন্দোবস্ত হয়েছে। না কি এই রাজ্যের সরকার সব পরিস্থিতির ওপর ছেড়ে দিয়ে দেখতে চেয়েছিল কী কী বিপদ ঘটতে পারে?

প্রণয় ঘোষ
কালনা, পূর্ব বর্ধমান

আঁধার দিনকাল

চিকিৎসক হিসেবে মাঝে মাঝে নিজেকে অসহায় লাগে। আগেও লাগত, কিন্তু এখনকার মতো বোধ হয় কোনও দিন লাগেনি।

বেসরকারি হাসপাতালের সামান্য মাইনের এক জন নার্সের হঠাৎ করোনা সংক্রমণ হয়ে গেল। বাড়ি জানল, পাড়া জানল। ভদ্রমহিলা চেয়েছিলেন বাড়িতে বন্দি থাকতে। প্রায় ঘাড়ধাক্কা দিয়ে প্রতিবেশীরা হাসপাতাল পাঠিয়ে দিল। চিকিৎসক হিসেবে আমিও তাঁকে বাড়িতে রাখার ব্যাপারে কোনও রকম সাহায্য করলাম না। নার্সের স্বামীর কর্মক্ষেত্রে এল পরের বাধা। সে ভদ্রলোকের অফিসে কড়া হুকুম এল আর বড়জোর সাত দিন দেখব... না এলে চাকরি খতম। কেউ কাউকে বোঝাতে পারল না, করোনা ব্যারিকেডে ঘেরা বাড়ি থেকে কী করে এক জন অফিস যাবেন! আমি যখন চিঠি লিখছি তখন বোধ হয় ওঁর চাকরিটি চলেই গেছে।

অরিজিৎ সেন
কলকাতা-৪৭

আর যক্ষ্মা

‘উদ্বেগ বাড়িয়ে একসঙ্গে কোভিড-ডেঙ্গি’ (১২-৬) পড়লাম। কিন্তু যক্ষ্মা বাদ পড়ল কেন? ‘হু’-র সমীক্ষা অনুযায়ী, সারা বিশ্বে ২০১৮ সালে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্তের মধ্যে ভারতীয় প্রায় ২৭%। ২০১৮ সালে ভারতে যক্ষ্মায় মারা গিয়েছেন ৪,৪৯,০০০ জন। প্রায় ১,৩০,০০০ জন মানুষ মাল্টি ড্রাগ রেজ়িস্ট্যান্ট (এঁদের শরীরে কোনও ওষুধ কাজ করছে না) যক্ষ্মায় আক্রান্ত । ২০১৩ থেকে ২০১৮, এই পাঁচ বছরে ভারতে যক্ষ্মায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লক্ষ থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ লক্ষ ।

শুভ্রাংশু কুমার রায়
ফটকগোড়া, হুগলি

কেন পাবেন না

একশো দিনের কাজ প্রকল্পে সবাই কাজ করতে পারবেন বর্তমানে— এ রকমই শুনেছিলাম ঘোষণায়। তবে নিয়মানুযায়ী যাঁরা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে সরকারি অনুদান পেয়েছেন, তাঁরা একশো দিনের কাজের ৯০টি দিনের টাকা ওই অনুদানের টাকার সঙ্গেই পাবেন‌, তাই এক বছর আলাদা ভাবে আর কাজ পাবেন না। কিন্তু এই লকডাউনে প্রায় প্রতিটি মানুষ কর্মহীন, এবং যিনি বাড়ি করার জন্য অনুদান পেলেন তিনিও‌ তো কর্মহীন। তাঁর সংসার কী ভাবে চলবে?

এমনিতেই গ্রামের গরিব এক জন মানুষ একটা বাড়ি করতে কতটা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তা বিশেষ বলার দরকার নেই। তাঁর জব কার্ডের বই রয়েছে, অথচ বাংলা আবাস যোজনার অনুদান পেলেন বলেই এই সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে কাজ পাবেন না? তা হলে ওই বাড়ি তৈরির টাকা থেকেই কি সংসার চালাতে হবে?

সুবীর ভুঁইয়া
ঘাটাল, পশ্চিম মেদিনীপুর

সুরেশ রায়না

আজকাল লক্ষ করছি সুরেশ রায়না খুব নিয়মিত ভাবে প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক ধোনিকে নিয়ে মতামত ও বিবৃতি দিয়ে চলেছেন। এক জন ক্রিকেটপ্রেমী হিসাবে চাইব, রায়না এই সব না করে কঠোর অনুশীলনে নিজেকে ডুবিয়ে দিন। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, তিন ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে তিনিই প্রথম ভারতীয় সেঞ্চুরিকারী ব্যাটসম্যান। তাঁর অনন্যসাধারণ ফিল্ডিং নৈপুণ্যে মুগ্ধ হয়ে জন্টি রোডস তাঁকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ফিল্ডার অাখ্যা দিয়েছেন। তাঁকে তো ভারতীয় দলে প্রয়োজন। বর্তমান ভারতীয় দলে প্রকৃত ব্যাটিং অলরাউন্ডারের অভাব (রবীন্দ্র জাডেজা ও হার্দিক পাণ্ড্য, দু’জনই বোলিং অলরাউন্ডার)। রায়না মিডল অর্ডারে ব্যাটিং-এর সঙ্গে কার্যকরী স্পিন বোলিংও করতে পারেন। তাই রায়নার উচিত ঘরোয়া ক্রিকেটে (যদি এ বছর হয়) মনোনিবেশ করে জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা করা।

সৌম্য বটব্যাল
দক্ষিণ বারাসত, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

নাকে কান্না

অবাক কাণ্ড, যে মানুষগুলো পরিযায়ী শ্রমিকদের এলাকার স্কুলে জায়গা দেবে না বলে এত প্রতিবাদ করল, তাদের নাকি হাতিমাতার মৃত্যুতে চোখে জল এসেছে! যারা ভাবে, পরিযায়ী শ্রমিক মানেই তাঁর করোনা হয়েছে; অথবা ভাবে, আমি একা বেঁচে থাকলেই চলবে, তাদের এই নাকে কান্না মানায় না।

মল্লিকা সরদার
বনগাঁ, উত্তর ২৪ পরগনা

কেন সোনা

বুঝতে পারছি, বিজেপি কেন পশ্চিমবঙ্গকে ‘সোনার বাংলা’ বানানোর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তারা সব পরিবারকে গোপালনে বাধ্য করবে ও গোদুগ্ধ থেকে স্বর্ণ নিষ্কাশনের সরকারি নির্দেশ জারি করবে। বাংলা সোনায় ভরে যাবে।

পান্নালাল নাহা

Letters to the Editor coronavirus Covid 19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy