Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: এক মহান আখ্যান

‘দেবকী বসু প্রোডাকশনস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সংস্থার পরের প্রোডাকশন হবে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’ অবলম্বনে ছবি। সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর বিজলীবরণ সেন এই সিদ্ধান্তের কথা আমাকে জানিয়েছিলেন।

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০০:০১

‘তিনি ছিলেন ভারতীয় সিনেমার...’ (পত্রিকা, ৬-৪) নিবন্ধে আলোচিত ‘পথের পাঁচালী’র চিত্রস্বত্ব নিয়ে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তার উত্তরে জানাই, দেবকী কুমার বসু আমার পিতৃদেব এবং সেই সূত্রে প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত।

বাবার প্রয়োজনা সংস্থা ‘দেবকী বসু প্রোডাকশনস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সংস্থার পরের প্রোডাকশন হবে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’ অবলম্বনে ছবি। সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর বিজলীবরণ সেন এই সিদ্ধান্তের কথা আমাকে জানিয়েছিলেন।

বিভূতিভূষণের ইচ্ছা ছিল, তাঁর কোনও কাহিনি নিয়ে বাবা ছবি করেন। তাই লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বাবার সহকারী অপূর্ব মিত্রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি থাকতেন বিভূতিবাবুর বাড়ির কাছেই, ব্যারাকপুরে। অপূর্ববাবু সংস্থার তরফে লেখকের সঙ্গে মৌখিক চুক্তিও করেন। তখনকার দিনে এই মৌখিক চুক্তির উপর নির্ভর করেই কাজ শুরু করার রেওয়াজ ছিল। এর পর ছবি করার কাজ এবং চিত্রনাট্য নিয়ে ভাবনাচিন্তা যখন শুরু হয়, তত দিনে বিভূতিভূষণ মারা গিয়েছেন।

বাবার কোনও ছবির কাজ শুরু হলে সংস্থার অফিসে ডিস্ট্রিবিউটরদের ভিড় লেগে যেত। পত্রলেখক মারফত জানলাম তার মধ্যে ‘কল্পনা মুভিজ়’-এর মি. ভট্টাচার্যও ছিলেন। এটা আমি জানতাম না। ইতিমধ্যে বাবাকে জানানো হয়, এক জন নতুন পরিচালক ‘পথের পাঁচালী’ ছবি নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছেন। তিনি হলেন সুকুমার রায়ের ছেলে।

সত্যজিৎ রায় নিজেও অনিল চৌধুরীকে নিয়ে বাবার সঙ্গে দেখা করেন। আগেকার দিনের চিত্রপরিচালকদের একটা মহৎ গুণ ছিল, তাঁরা নতুনদের উৎসাহ দিতেন এবং নানা ভাবে সাহায্য করতেন। বাবাও যখন জানতে পারলেন, সঙ্গে সঙ্গে সরে দাঁড়ালেন।

পরের ইতিহাস তো সবাই জানেন। সত্যজিৎ ‘পথের পাঁচালী’ (ছবিতে একটি দৃশ্য) করে বিশ্ববিখ্যাত হন। বাবাও ছবিটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। এর মধ্যে কোনও ভুল নেই, সৌন্দর্য আছে।

দেবকুমার বসু

কলকাতা-২৯

সৌজন্য

2 সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁকে মাঝে মধ্যে কুর্তা এবং মিষ্টি উপহার পাঠান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রত্যুত্তরে জানিয়েছেন এটাই বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য। সেই পরম্পরা মেনেই এই সৌজন্য প্রদর্শন। এ ব্যাপারে আমিও সহমত যে বাঙালিদের এই সংস্কৃতি আবহমান কালের। এটাই ব্যতিক্রমী ট্র্যাডিশন। মুখ্যমন্ত্রী সেই ঐতিহ্যের পথকেই অনুসরণ করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন জাগে একটি ব্যাপারে। কিছু দিন আগে বাংলার এক প্রভাবশালী বিজেপি নেতা, বিধাননগরের মেয়র, তৃণমূল নেতার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকার করেছিলেন। মেয়রও বাংলার সেই সুস্থ ঐতিহ্য মেনে বিজেপি নেতাকে লুচি আলুরদম সহযোগে আপ্যায়ন করেছিলেন। তা হলে সেই সৌজন্যবোধ, ভদ্রতা কি অন্যায় ছিল?

শোভনলাল বকসী

কলকাতা-৪৫

কটাক্ষ

2 বিজেপির সঙ্গে আঁতাত নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন— ‘‘কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার আসন দু’টি তৃণমূল বিজেপিকে উপহার দিয়েছে। একই ভাবে দার্জিলিং, রায়গঞ্জ-সহ অন্তত ১০-১২টি আসন তারা বিজেপিকে ছাড়বে বলে আমাদের আশঙ্কা।’’ (‘কমিশনের দফতরে ধর্নার...’, ১৭-৪) বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যখন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তখন তাঁর দল সম্পর্কে এই অমূলক আশঙ্কা সিপিএমের ভাবমূর্তিকে আরও তলানিতে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে। গঠনমূলক সমালোচনা না করে শুধুমাত্র মমতার অন্ধ বিরোধিতা করতে গিয়ে যা ইচ্ছা তাই বলে ফেললে সেটা যে মানুষ ভাল ভাবে নেন না— এটা কি সূর্যবাবুরা বোঝেন না? সূর্যবাবুরা সর্বত্র যখন তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে আঁতাত দেখছেন তখন মানুষ কিন্তু দেখছেন ভাটপাড়া পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাবে একমাত্র বাম কাউন্সিলর বিজেপির অর্জুন সিংহের সমর্থনে হাত তুলেছিলেন।

রতন চক্রবর্তী

উত্তর হাবরা, উত্তর ২৪ পরগনা

পরামর্শ

2 ছাত্রছাত্রীদের যে দুঃসহ ভারী ব্যাগ বইতে হয়, তার সমাধানের উদ্দেশ্যে একটি পরামর্শ হিসাবে এই চিঠি। প্রতিটি বইকে বেশ কয়েকটি চ্যাপ্টারে ভাগ করতে হবে। একটি চ্যাপ্টারে কুড়ি-ত্রিশটা পাতা থাকবে এবং আলাদা বাইন্ডিং থাকবে। এই ভাবে আট থেকে দশ চ্যাপ্টারে একসঙ্গে একটি মোটা বই তৈরি হবে।

তার মানে প্রতি দিন গোটা বই না নিয়ে কেবল যে চ্যাপ্টার পড়া হবে, সেইটুকু নিয়ে গেলেই প্রয়োজন মিটে যাবে। যদি দরকার পড়ে, চ্যাপ্টারগুলো যে পাতায় ছাপা, তাতে দু’টি ফুটো থাকবে, যাতে ওইগুলি সব একটি ছোট অফিস ফাইলে রাখা যায়। তার মানে সাত পিরিয়ডের জন্য কেবল সাতটি বইয়ের সাতটি চ্যাপ্টার একটি অফিস ফাইলে নিয়ে গেলেই হল, সাতটি বই নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। তার ওজন ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের বেশি হবে না।

এর পর থাকবে হোমটাস্ক আর ক্লাস নোটস-এর ব্যাপার। প্রতিটি পিরিয়ডের জন্য পাঁচটি করে পাতা যথেষ্ট। তা হলে ৩৫টা পাতা। এটিও যদি একটি অফিস ফাইলে নেওয়া যায়, তার ওজন হবে ২৫০ গ্রাম। ফলে সব মিলিয়ে এক কেজির বেশি হবে না।

এই ওজন একটি ছোট ব্যাগে বইলে (তাতে টিফিন বাক্স ও জলের বোতলও থাকবে), ছাত্রছাত্রীদের পিঠ বা শিরদাঁড়ার উপরে একেবারেই বিরাট চাপ পড়বে না।

সুশান্ত কুমার দাস

দুর্গামন্দির রোড, পশ্চিম বর্ধমান

কোন প্রযুক্তি

2 ‘জলপ্রকল্প বাঁচাতে জমা পড়বে নকশা’ (২২-৪) সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি। ১৮৬৪-৭০ সালে নির্মিত বর্তমানে ২৫ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন পানীয় জল উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন পলতার জল শোধনাগার, নদী ভাঙনের থেকে স্থায়ী সুরক্ষা দিতে না পারলে, কলকাতা ও শহরতলির ভয়ঙ্কর পানীয় জল সঙ্কটের সম্ভাবনা। কিন্তু প্রস্তাবিত নকশাটি ধাতব পাত (শিট পাইল) প্রযুক্তি ভিত্তিক হওয়ায়, এবং ধাতব পাতের ভাঙনের নদীতে কোনও ভিত দেওয়ার সম্ভাবনা না থাকায়, এর স্থায়ী সাফল্য সম্বন্ধে সন্দেহের অবকাশ থেকে যাচ্ছে। বস্তুত ভাঙন স্থায়ী ভাবে রোধ করতে হলে এমন উপাদান ব্যবহার করা প্রয়োজন, যা স্রোতের পলি ধরে রেখে নদী পাড় মেরামতে সক্ষম।

গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে ডায়মন্ড হারবারের নিম্নে কুলপিতে প্রায় দশ কিলোমিটার জুড়ে পাড় ভাঙনের ফলে, জাহাজ চলাচলের নদীখাতের গভীরতা কমতে শুরু করে। কলকাতা বন্দরের নদী ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ সেখানে নূতন প্রযুক্তি— ইট ভর্তি বাঁশের খাঁচা ও নোঙর ধরনের কংক্রিট উপাদান ব্যবহার করে, পাড় ভাঙনরোধী ‘স্পার’ তৈরির মাধ্যমে সমস্যার মোকাবিলা করে। চল্লিশ বৎসরাধিক পরে আজও কুলপির পাড় ইট ও কংক্রিটে শক্তিমান এবং অভঙ্গুর। পরবর্তী কালে খড়্গপুর আইআইটি ওই নোঙর কংক্রিট উপাদান

ব্যবহার করে, ভাঙনরোধী কংক্রিটে শক্তিমান মাটির নদীবাঁধ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

উল্লিখিত প্রযুক্তির তথ্যাবলি ভারত সরকারের ‘ইরিগেশন অ্যান্ড পাওয়ার’ জার্নালের ১৯৭৯ এপ্রিল সংখ্যায় এবং ‘ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স (ইন্ডিয়া)’-এর ২০০৬ মে সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।

তরুণ কুমার চৌধুরী

কলকাতা-৬৪

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,

কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

Devaki Kumar Basu Satyajit Ray Pather Panchali Bibhutibhushan Bandyopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy