Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: এক বার বিদায় দে

দুই দিন পরে (১২-২ থেকে) মাধ্যমিক পরীক্ষা, আর আজ দুপুর দুটোর সময় তিন বা চার জন হাতে গিটার নিয়ে তারস্বরে গান গাইতে শুরু করল, মনে হল কে কার থেকে জোরে চিৎকার করতে পারে তার প্রতিযোগিতা চলছে। বেশ কয়েকটা গান তথা চিৎকারে আমাদের প্রাণ যায়-যায় অবস্থা। কিন্তু আজকালকার রীতি অনুযায়ী পাড়ার কেউ প্রতিবাদ করছে না, যদি দাদারা এসে বাড়ি ভাঙচুর করে!

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০

গানের গুঁতো কাকে বলে, তা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। আমাদের পাড়ার একটা সরস্বতী পুজোতে একটা ব্যান্ড এসেছিল, আগেকার দিন হলে এদের BANNED করে দেওয়া হত, এখন তো অ-সুরদের যুগ, তাই...

দুই দিন পরে (১২-২ থেকে) মাধ্যমিক পরীক্ষা, আর আজ দুপুর দুটোর সময় তিন বা চার জন হাতে গিটার নিয়ে তারস্বরে গান গাইতে শুরু করল, মনে হল কে কার থেকে জোরে চিৎকার করতে পারে তার প্রতিযোগিতা চলছে। বেশ কয়েকটা গান তথা চিৎকারে আমাদের প্রাণ যায়-যায় অবস্থা। কিন্তু আজকালকার রীতি অনুযায়ী পাড়ার কেউ প্রতিবাদ করছে না, যদি দাদারা এসে বাড়ি ভাঙচুর করে!

আধ ঘণ্টার মতো সময় ওই চিৎকার সহ্য করে, বাধ্য হয়ে আমি তথাকথিত গায়কদের দেখিয়ে ওদের সামনেই কানে তুলো গুঁজে, ওই ক্লাবে গিয়ে বললাম, এটা কী হচ্ছে, তোমরা কি জানো না আগামী পরশু থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা! ক্লাবের অল্পবয়সি সভাপতি অবশ্য ভাল ভাবেই বলল যে ওই গানটাই শেষ গান, আর চেঁচামেচি হবে না, তাই আমিও চলে এলাম।

গানটা কী জানেন? ‘‘এক বার বিদায় দে মা ঘুরে আসি‌’’। আমি একদম নিশ্চিত, ওই গানটা শুনলে ওই ব্যান্ডের গায়কদের মায়েরা, যতই স্নেহপ্রবণ হন না কেন, ওদের বিদায় দিতে আর এক মুহূর্তও দেরি করবেন না।

চিন্ময় সমাদ্দার

কলকাতা-৬০

বইমেলায়

কলকাতা বইমেলা ৪৩তম বর্ষে অনেক পরিণত হয়েছে। সল্ট লেক সেন্ট্রাল পার্ক জমজমাট। ৮নং গেটের কাছেই বাস টার্মিনাস, ১৯০টি বাড়তি বাস চলেছে বইমেলার জন্য। ধুলোবালি নেই, অগ্নি নির্বাপণের প্রচুর আয়োজন মজুত, আরক্ষাবাহিনী ছিল। বিভিন্ন রকম আকর্ষক লটারি বা প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে মানুষকে বইমুখী করতে চেয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ‘বই কেনো লাইব্রেরি গড়ো’ এ বারের বইমেলার বিশেষ চমক। সেখানে এক লক্ষ টাকার বই এবং বুকশেল্‌ফ, বিজেতার উপহার হিসেবে ঘোষিত হচ্ছিল। আরও ছিল মুক্তমঞ্চ ‘অঙ্কুরোদ্গম’, নতুন শিল্পী সাহিত্যিকদের নিজেকে প্রকাশ করবার ঠাঁই। সবই ভাল, শুধু বিশ্রী ব্যাপার হল লাগামছাড়া শব্দদূষণ।

ইচ্ছেমতো নিজের বিপণির উচ্চৈঃস্বরে বিজ্ঞাপনে কোনও বাধা নেই, ফলে সাংস্কৃতিক মঞ্চের অনুষ্ঠানের অংশগুলিও কানে পৌঁছয় না। এই উচ্চগ্রামে শব্দ বন্ধ করবার বিধিনিষেধ থাকা প্রয়োজন। একটু স্বস্তিতে কথা বলা যায়।

আর ছিল টয়লেটের দুর্গতি। টয়লেট কমপ্লেক্সে ঢুকতে কাঁচা নালা সচেতন ভাবে পেরোলেও পা বাঁচবে না, ভিজবে। টয়লেট ব্যবহারকারীর জন্য জলের ব্যবস্থা ছিল না। মানে ভেতরে কলই ছিল না। অথচ বাইরে বেসিনে জল আছে। পুস্তকপ্রেমী মানুষ দীর্ঘ ক্ষণ বইমেলা চত্বরে থাকেন, টয়লেটে ব্যবহারযোগ্য জলের প্রয়োজন।

আনন্দময়ী মুখোপাধ্যায়

কলকাতা-৭৪

পুজোর পরেই

এ বছর সরস্বতী পুজোর পর পরই মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু করে প.ব. মধ্যশিক্ষা পর্ষদ খুব একটা বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়নি। শনিবার ছিল ডব্লিউবিসিএস (প্রিলি) পরীক্ষা। অনেক স্কুলে সেই পরীক্ষার সেন্টার পড়েছিল। দুটো ভিন্ন পরীক্ষার সিট প্যাটার্ন আলাদা। তাই চাইলেও শনিবার মাধ্যমিকের সব কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। বরং রবিবার সকালেই পুজোর জন্য আগের দিন প্রতিমা আনা, একটা শ্রেণিকক্ষ থেকে সব বেঞ্চ সরিয়ে বেদি বানিয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। রবিবার পুজোর দিন। প্রতিটি স্কুলে থাকে খাওয়াদাওয়ার সাধ্যমতো আয়োজন। পুজোর দিন তো আর ছুটি থাকে না— ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী সবাই উপস্থিত থেকে পুজো সম্পন্ন করেন। তাই সাধারণত পুজোর পর দিন স্কুল ছুটি থাকে। এ বছর সেই ছুটি নিয়ে চলল দিনভর টানাপড়েন। কারণ মঙ্গলবার মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য আগের দিন শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয় চত্বর পরিষ্কার করে বেঞ্চ সাজানো-সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকে। তা ছাড়া ধরে নিতে হয়, পুজো উপলক্ষে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা এক দিন ব্যাহত হয়েছে। তাই, পুজো নির্ঘণ্ট যে হেতু অনেক আগেই পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে পর্ষদ বুধবার মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু করলে সব দিক থেকেই সুবিধা হত।

বিভাস চন্দ

ধর্মা, মেদিনীপুর

বার্তায় ত্রুটি

সরস্বতী পুজোর পরের দিন, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, প্রায় প্রতিটি সংবাদমাধ্যমে আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দু’টি শুভেচ্ছাবার্তা প্রকাশিত হয়েছে। একটি মাধ্যমিক অন্যটি হাই মাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিল পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে। তিনি লিখেছেন ‘‘সকল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।’’ অন্যটিতেও ‘শুভেচ্ছা’ হাই মাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিল পরীক্ষার্থীদের জন্যে। বার্তাটি লক্ষ করতে বলি। এক বার ‘সকল’ লিখলেও পরে আবার ‘পরীক্ষার্থীদের’ লেখা হয়েছে। আসলে বাংলা ভাষায় একই বাক্যে দু’টি বহুবচনের ব্যবহার অশুদ্ধ। হয় ‘সকল পরীক্ষার্থীর’ লিখতে হবে, নয়তো ‘সকল’ বাদ দিয়ে, লিখতে হবে ‘পরীক্ষার্থীদের’। কিন্তু একই বাক্যে ‘সকল’ এবং ‘পরীক্ষার্থীদের’ লিখলে, বহুবচনের দ্বিত্ব হয়, অর্থাৎ একই বাক্যে দু’বার বহুবচনের ব্যবহার হয়। মুখ্যমন্ত্রীর বয়ানে এমন ভুল অনভিপ্রেত। বিশেষত যখন বার্তাটি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে লেখা।

লক্ষীকান্ত ভট্টাচার্য

কলকাতা-৮৯

অবিদ্যা

অরিন্দম চক্রবর্তীর প্রবন্ধ ‘কোন বিদ্যার আরাধনা’ (৯-২) প্রসঙ্গে এই চিঠি। ঈশোপনিষদ থেকে যে মন্ত্রটির আংশিক বঙ্গানুবাদ তিনি উদ্ধৃত করেছেন, সেটি ৯নং মন্ত্র। সম্পূর্ণ মন্ত্রটি হল: অন্ধং তমঃ প্রবিশন্তি যে অবিদ্যাম্ উপাসতে।/ততো ভূয় ইব তে তমো য উ বিদ্যায়াং রতাঃ।।— যারা অবিদ্যার উপাসনা করে তারা গাঢ় অন্ধকারে প্রবেশ করে; আর যারা বিদ্যার উপাসনা করে তারা অধিকতর গভীর অন্ধকারে প্রবেশ করে। তা হলে তো মহাবিপদ। মানুষের তো অবিদ্যা আশ্রয়ই কাম্য হবে। প্রায় অব্যবহিত পরেই, ১১নং মন্ত্রে রয়েছে: বিদ্যাং চ অবিদ্যাং চ যঃ তৎ বেদ উভয়ং সহ।/অবিদ্যয়া মৃত্যুং তীর্ত্বা বিদ্যয়া অমৃতম্ অশ্নুতে।।— এখানে আবার দেখা যাচ্ছে, অবিদ্যার দ্বারা মৃত্যুকে অতিক্রম করে বিদ্যার সাহায্যে অমৃতত্ব লাভের প্রত্যয়ী ঘোষণা। আমরা কি তবে অবিদ্যার (কর্ম বা প্র্যাকটিসের) মাধ্যমে মৃত্যুকে অতিক্রম করে বিদ্যার (ললিতকলা ও সাহিত্যের) চর্চা করে অমৃতত্ব লাভ করব?

আমার মনে হয়, ঈশোপনিষদের মন্ত্রে উল্লিখিত অবিদ্যা ও বিদ্যা শব্দ দু’টি সাধনার প্রেক্ষিতে ব্যবহৃত পারিভাষিক শব্দ। ‘কলরবমুখরিত প্রাঙ্গণে’ তাদের আসন যেন আমরা না পাতি।

অমিত ঘোষ

পাণ্ডুয়া, হুগলি

ভাবনাহীন

সম্প্রতি ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ বিশাল আকারে প্রচারিত মহান উদ্যোগ। কিন্তু এর রূপায়ণে কিছু কিছু নিয়ম বেশ যুক্তিহীন। এন এইচ ২ এবং এন এইচ ১১৭, দু’টিতেই গাড়ির গতিসীমা, অল্প দূরত্বেই কখনও ৬৫, ৬০, ৫০, ৮০, একটু পরে ২০-ও দেখা গেল। বড় ভাবনাহীন নিয়মকানুন। এই গতি নির্দেশিকা অনুযায়ী ধরপাকড়ও হচ্ছে। হাইওয়েতে বারে বারে ব্যারিকেড, হাত তুলে গাড়ি থামানো সেফ ড্রাইভের পরিপন্থী। আর সোনায় সোহাগা যেখানে-সেখানে ডিভাইডারের উপর থেকে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার। এরও শাস্তির ভয় থাকলে লাভ হবে কি না, তাও ভাবতে হবে।

সুকুমার বারিক

কলকাতা-২৯

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

Music Bands Trend Music
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy