Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: রোগী ও গুগ্‌ল বাবা

রোগের ইতিহাস, রোগীর প্রাত্যহিক দিনযাপন প্রণালী শুনে এবং তার পর নাড়ি টিপে, স্টেথো ও টর্চ দিয়ে বুক, পিঠ, গলার ভেতর দেখে ডাক্তারবাবু রোগ সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা তৈরি করেন। এর পর রোগ সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় টেস্ট করতে বলেন।

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০

সৌম্যদীপ মজুমদারের ‘দায় কি শুধু ডাক্তারদেরই’ (৩০-১১) পড়ে কিছু লেখার তাগিদ থেকেই এই চিঠি। চিকিৎসার প্রাথমিক ধাপ হল ক্লিনিকাল অবজ়ারভেশন। সহৃদয় ডাক্তার স্রেফ রোগীর সঙ্গে গল্প জুড়ে রোগীর শরীর ও মনের হদিস পাওয়ার চেষ্টা করেন। রোগের ইতিহাস, রোগীর প্রাত্যহিক দিনযাপন প্রণালী শুনে এবং তার পর নাড়ি টিপে, স্টেথো ও টর্চ দিয়ে বুক, পিঠ, গলার ভেতর দেখে ডাক্তারবাবু রোগ সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা তৈরি করেন। এর পর রোগ সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় টেস্ট করতে বলেন। এ সবের জন্য ‍বিশাল কোনও ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার’-এর প্রয়োজন হয় না, যার অভাবের কথা সৌম্যদীপ লিখেছেন। দরকার ডাক্তারবাবুর মূল্যবান সময়ের, যা তিনি দিতে নারাজ। আজকাল ডাক্তারবাবুরা নিক্তিতে মেপে রোগীকে সময় দেন। দায়সারা গোছের ক্লিনিকাল অবজ়ারভেশন করেই খসখস করে লিখে ফেলেন বেশ কয়েকটা টেস্ট এবং একগাদা ওষুধ। ডাক্তারের সঙ্গে রোগীর ক্ষমতার যে অসামঞ্জস্য বা ‘আ্যসিমেট্রি’, সেটাই অসাধু ডাক্তারের মূলধন। গুগ্‌ল বাবার আশীর্বাদে সেই অ্যাসিমেট্রি একটু হলেও খর্ব হয়েছে। রোগী গুগ্‌ল সার্চ করে নিজের রোগ সম্পর্কে কিছু বোঝার চেষ্টা করলে অসুবিধা কোথায়? একই ওষুধ বিভিন্ন কোম্পানি তৈরি করে এবং দামের ফারাক অনেক সময় অবিশ্বাস্য। গুগ্‌লের কৃপায় ডাক্তারবাবুর দেওয়া ওষুধের সস্তা বিকল্প সহজেই পাওয়া যেতে পারে।

পূর্ণেন্দু সমাজদার

কলকাতা-১০৮

চেয়ার বাদ?

মাধ্যমিক ‘ক্লাসে শিক্ষকদের চেয়ার বাদ, শুরু বিতর্ক’ (২৬-১০) শীর্ষক খবরের প্রেক্ষিতে মাননীয় ডি আই নজরুলবাবু একটি মন্তব্য করেছেন, ‘‘অপমান করা নয়, শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নত করতেই এই পদক্ষেপ।’’ উনি কি মনে করেন, চেয়ারে বসে বা না-বসে পড়ানোটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, না শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পড়ানোর রীতি বেশি গুরুত্বপূর্ণ? তাঁরা ক্লাসে কী ভাবে পড়াবেন সেটার উপর আমাদের ছাত্রছাত্রীদের চরিত্র ও সমাজব্যবস্থার উন্নতি নির্ভর করে।

অনেক সময়ে শিক্ষকদের টানা চারটে বা ছ’টা ক্লাস অবধি পড়াতে হয়, তখন হিসেব করলে দেখা যাবে টানা চল্লিশ মিনিট নয়, চার ঘণ্টা অবধি এক এক জনকে পড়াতে হয়। আবার অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকার হাঁটু বা কোমরের নানা সমস্যা থাকে, তখন তাঁদের ক্ষেত্রে চেয়ার না রাখাটা মারাত্মক অন্যায়। কোনও মানুষকেই মানসিক চাপ দিয়ে কোনও কাজের সফলতা আশা করা যায় না।

সোমা বণিক

কলকাতা-৮৯

যুক্তি ভিত্তিহীন

মানবতাহীনতার যত দৃষ্টান্ত দেখা যায়, তার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত দেখলাম ক্লাসে শিক্ষকদের চেয়ার বাদের সিদ্ধান্তে, যা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর নিয়েছে। শ্রেণিকক্ষের পিছনের ছাত্রছাত্রীদের কাছে শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ যেন পৌঁছতে পারেন সেই জন্য এই ব্যবস্থা। এই যুক্তি ভিত্তিহীন। সুদীর্ঘ কাল ধরে স্কুল শিক্ষাব্যবস্থায় এই প্রথা (ক্লাসে চেয়ার, টেবিল) চলে আসছে। ছাত্রাবস্থায় আমরা অনেকে শেষের দিকেই বসতাম। তা বলে শিক্ষকদের কোনও কথা আমাদের কানে প্রবেশ করত না— বিশ্বাস করি না। প্রথম বেঞ্চের ছাত্রদের প্রতি যেমন দৃষ্টি ছিল, শেষ বেঞ্চের ছাত্রদের ক্ষেত্রেও শিক্ষকদের তেমনই দৃষ্টি ছিল।

পৃথ্বীশ চক্রবর্তী

কলকাতা-১৪০

জন সেন

‘প্রথম শহিদ’ (১৭-১১) চিঠি পড়লাম। ঠিকই, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রথম বাঙালি শহিদ যোগেন্দ্রনাথ সেন, সংক্ষেপে জে এন সেন, বন্ধু ও সহকর্মীরা ডাকতেন ‘জন সেন’। মেধাবী ছাত্র যোগেন্দ্রনাথ বেশ কয়েকটি বিদেশি ভাষায় দক্ষ ছিলেন। যদিও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ভারতীয়দের জন্য আলাদা রেজিমেন্ট ছিল, যোগেন্দ্রনাথ নিজের কৃতিত্বে সরাসরি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগদানের সুযোগ পেয়েছিলেন। তিনি তাঁর রেজিমেন্টের মধ্যে সবচেয়ে শিক্ষিত সদস্য ছিলেন, কর্মদক্ষতার জন্য তিনটি মেডেলও পেয়েছিলেন, কিন্তু শ্বেতাঙ্গ নন বলে তাঁকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কমিশনড অফিসার করা হয়নি। চারিত্রিক দৃঢ়তা ছিল তাঁর বৈশিষ্ট্য। বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইংল্যান্ডে পাঠরত বহু ভারতীয় ছাত্র অভিভাবকদের নির্দেশে দেশে ফিরে এসেছিলেন। যোগেন্দ্রনাথের বাবা, মা ও অন্যান্য আত্মীয় একাধিক টেলিগ্রাম করে তাঁকে দেশে ফিরে আসতে বললেও, তিনি প্রতিটি টেলিগ্রামের উত্তরে সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘মার্জনা করিবেন, বাঙালি জাতির মুখে চুনকালি পড়ে, এমন কার্য্য করিতে পারিব না।’’ হুগলি জেলার চন্দননগর নিবাসী এই বাঙালি শহিদের নামে চন্দননগরে একটি রাস্তার নামকরণ করা প্রয়োজন।

দেবমাল্য ঘোষ

চুঁচুড়া, হুগলি

ফাউন্টেনের গান

ইকো পার্কের মিউজ়িকাল ফাউন্টেনের মিউজ়িকে কি শ্যামাসঙ্গীত মানায়? বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ ওখানে আসেন।

অমিত হালদার

আনন্দ পল্লি, পূর্ব বর্ধমান

স্পোর্টসে অনুদান

দীর্ঘ চার দশকের পর প্রাথমিক শিক্ষায় স্পোর্টসের জন্য সরকারি অনুদান বরাদ্দ হল। এত দিন পঞ্চায়েত, মহকুমা ও জেলা স্তরের স্পোর্টস, প্রাথমিক শিক্ষকদের অনুদানেই সম্পাদন হত। এই বছর সারা রাজ্য ব্যাপী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ব্যাপক অসন্তোষ ও আন্দোলনের ফলে সরকার বাধ্য হল, শিক্ষাখাতে স্পোর্টসের টাকা বরাদ্দ করতে। আবার প্রমাণ হল, শিক্ষকরা শুধুমাত্র নিজের স্বার্থের জন্যই লড়াই করেন না।

কৌশিক সরকার

রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া

অদ্ভুত অজুহাত

কলেজে যে ছাত্রদের হাজিরা ষাট শতাংশ নেই, তাদের অনেকে এক অদ্ভুত যুক্তি দিচ্ছে দেখলাম। ‘‘সাদা কাগজে হাজিরা নিয়েছেন শিক্ষকরা, সেটা মূল রেজিস্টারে ওঠেনি।’’ ধরি, এক ছাত্র সোম থেকে শনিবার কলেজে গেল। সোম থেকে শুক্র শিক্ষকরা রেজিস্টারে হাজিরা নিলেন, শনিবার সাদা কাগজে হাজিরা নিলেন এবং সত্যি সত্যি এটা রেজিস্টারে গেল না। কিন্তু তাতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়, কারণ যে ছাত্র সোম থেকে শুক্র ক্লাস করল, তার হাজিরা কিন্তু একশো শতাংশই থাকছে। শনিবার তো কারও হাজিরাই রেজিস্টারে গেল না। তাই ওটা তো হিসাবও হচ্ছে না।

ঋষিকা চক্রবর্তী

বারুইপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

শোভন?

‘রুদ্ধদ্বার শুনানি শোভনের’ (৩০-১১) শীর্ষক সংবাদ অনুযায়ী শোভনবাবু ও বৈশাখী দেবী যখন আলিপুর আদালত কক্ষের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন, তখন পুলিশের তরফে দু’জনের জন্যই চেয়ার দেওয়া হয়েছিল। আলিপুর কোর্টের ক’জন আইনজীবী বলতে পারবেন যে অশীতিপর বৃদ্ধকেও পুলিশের তরফে এই সৌজন্য দেখানো হয়? ওই সংবাদের পাশের ছবিটি নাকি ওঁদের কোর্ট থেকে বেরোনোর সময় তোলা। ছবিটিতে শোভনবাবুকে সিগারেট ধরাতে দেখা যাচ্ছে। পিছনে খাকি পোশাকে এক জন পুলিশ। সম্পূর্ণ আলিপুর কোর্ট চত্বরে ধূমপান নিষিদ্ধ।

দীপঙ্কর বসু

কলকাতা-৬৮

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy