Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: নির্মূল করতে হবে

যে সব দেশ জঙ্গি তৈরি করার জন্য ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ভারত জুড়ে সর্বাত্মক তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হোক সরকারের পক্ষ থেকে।

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০৮
Share: Save:

দেশের শত্রু জঙ্গি বাহিনীকে ধ্বংস করার জন্য বায়ুসেনার পদক্ষেপে আমরা আনন্দিত এবং উল্লসিত। শুধু জঙ্গি নিধন নয়, জঙ্গিদের পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে। তাই জঙ্গি নিধন যেমন জরুরি, তেমন জঙ্গি তৈরির প্রক্রিয়াটা বন্ধ করা আরও জরুরি। যে সব দেশ জঙ্গি তৈরি করার জন্য ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ভারত জুড়ে সর্বাত্মক তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হোক সরকারের পক্ষ থেকে। কেননা কিছু জঙ্গি ধ্বংস করার কিছু দিন পরে আবার নতুন করে গজিয়ে উঠবে নতুন জঙ্গি বাহিনী। বার বার জঙ্গি হামলা এবং তার মোকাবিলা করতে গিয়ে দেশের বিরাট পরিমাণ অর্থনৈতিক এবং মানবিক সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে। আখেরে জনগণেরই ক্ষতি হচ্ছে।

কিংকর অধিকারী

বালিচক, পশ্চিম মেদিনীপুর

প্রশ্ন কই

কাশ্মীর উপত্যকায় মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে লেখা ‘প্রশ্ন’ (১৬-২) সম্পাদকীয়র জন্য ধন্যবাদ। বিশেষ করে এই ঘটনার পর থেকে চার দিকে যে যুদ্ধ-যুদ্ধ হুঙ্কার উঠেছে সেই পরিমণ্ডলে দাঁড়িয়ে এমন একটি সুচিন্তিত কণ্ঠস্বরের বড়ই দরকার ছিল। হ্যাঁ, শোক প্রকাশ ক্ষোভ প্রকাশ সবই স্বাভাবিক। সে তো করতেই হবে। তার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ত্রুটির কথাও স্বীকার করতে হবে। সরকারের যে লোকজনদের ওপর আমাদের সুরক্ষার ভার ন্যস্ত রয়েছে, তাদের গাফিলতির কথাও বলতে হবে। তা না করে কেবল ‘পাশের দেশের’ বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করলেই হবে? ‘প্রতিবেশী দেশ আমাদের শত্রু’— এই বলে সারা বছর হাওয়া গরম করা হচ্ছে। সেই ‘শত্রু দেশ’-এর কাছ থেকে মিঠাই-মণ্ডা ভেট আসবে এমনটা নিশ্চয়ই আশা করার কথা নয়। বিপদের সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে আমাদেরই তো সাবধান থাকার কথা। তা হলে সামরিক বাহিনীর এত বড় কনভয়ের পথে কেন যথোপযুক্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে না? গোটা দেশের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যখাতে যত টাকা ব্যয় করা হয় তার প্রায় দশগুণ টাকা ব্যয় হয় অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার নামে। তা হলে কেন দেশের সাধারণ মানুষ বা জওয়ানদের সুরক্ষা দেওয়া যাচ্ছে না, সেই প্রশ্নের উত্তর চাইতে হবে প্রথমে।

রবিন চক্রবর্তী

সল্টলেক, কলকাতা

লজ্জার শিরোনাম

সমগ্র দেশ যখন কাশ্মীরে পাকিস্তানের কাপুরুষোচিত জঙ্গি আক্রমণে ৪৯ জন জওয়ানের মৃত্যু নিয়ে শোকাহত, তখন আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠার শিরোনাম ‘জোশের হম্বিতম্বি ছাপিয়ে গলদই বেআব্রু’ (১৫-২) এই বাংলার চেতনাকে কতটা সমৃদ্ধ করেছে জানি না, তবে আমি ভীষণ লজ্জিত বোধ করেছি দেশের এক জন সাধারণ নাগরিক হিসাবে। ভারতের প্রতিবেশী একটি শত্রুদেশ যখন বর্বরোচিত ভাবে দেশের বীর জওয়ানদের আত্মঘাতী বোমা দিয়ে উড়িয়ে দিল, সেই রক্তস্নাত দিনেও রাজনীতির হিসাব-নিকাশ করে সংবাদ প্রচার করতে এই কাগজের বিন্দুমাত্র বিবেকবোধ জাগ্রত হল না? এই নারকীয় ঘটনায় যাঁরা পিতা, পুত্র, স্বামী, দাদা, ভাই-হারা হলেন, সেই পরিবারগুলোর কথা ভেবে সংবাদের শিরোনামের শব্দচয়ন কি একটু শালীন ভাবে করা যেত না? শোকের দিনেও কি প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় না তুললে নয়? দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মানুষের বিশ্বাসের চিড় ধরাতে এ ধরনের শিরোনাম হয়তো মানানসই হতে পারে। কিন্তু তাতে যে ভারতের জাতীয়তাবোধের প্রতি মানুষের বিশ্বাসের মূলেও কুঠারাঘাত করা হয়, সেটা কি এক বারও ভেবে দেখেছেন? গণতন্ত্রে প্রধানমন্ত্রী আজ আছেন, কাল নেই। কিন্তু দেশটা তো চিরকাল থাকবে। দেশটাকে তো রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে রক্ষা করতে হবে। জাতীয়তাবোধই হচ্ছে এর চালিকাশক্তি।

মিহির কানুনগো

কলকাতা-৮১

উপেক্ষিত

পরিযায়ী পাখির মতো শীতের দিনগুলোতে ওঁদের দেখা যায় শহরের অলিতে-গলিতে। কেউ সাইকেলে, কেউ রিকশায়— সঙ্গে একটা ঢাউস বোঁচকা। ওঁদের দেখতে আমাদেরই মতো— আবার খানিকটা আমাদের মতো নয়ও। ওঁদের নিয়ে ‘কাবুলিওয়ালা’ লেখা হয়নি, ওঁরা আক্ষরিক অর্থে ‘কাব্যে উপেক্ষিত’। জঘন্যতম জঙ্গি হামলায় অনেকগুলো ফুল ঝরে পড়ল। কেন জানি না, হঠাৎ করে এই লোকগুলোকেও আমাদের অপরাধী মনে হচ্ছে। ওঁরা মাথা নিচু করে আমাদের সামনে দিয়ে যাচ্ছেন— দেখছি পরিচিত দৃষ্টিগুলো পাল্টে যাচ্ছে, কখনও সরাসরি, কখনও আড়ালে আবডালে ভেসে আসছে টুকরো টুকরো মন্তব্য। তুই করিসনি— তোর বাবা করেছে— অথবা তার বাবা— অথবা ওই রকম কেউ— ছোটবেলায় যেমন গল্পে পড়েছিলাম। কাশ্মীরি শালওয়ালাদের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানাই।

অরিজিৎ সেন

কলকাতা-৪৭

চোখের বদলে

সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এখন একটাই রব— পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দাও শেষ করে দাও। পাকিস্তানের জঙ্গি পুলওয়ামা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তা সন্দেহাতীত, কিন্তু পাকিস্তান যে সরাসরি এই ধ্বংসকাণ্ডে লিপ্ত তার যথেষ্ট প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, পাকিস্তানের স্কুল কলেজ এমনকি মসজিদেও আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার ঘটনা বিরল নয়। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে জঙ্গি সংগঠনগুলোর নিজস্ব কোনও দেশ ধর্ম নেই। তাই পাকিস্তানে শুধু জঙ্গি নয়, আমার আপনার মতো অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা চান পড়াশোনা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। স্বপ্ন দেখেন, বিশ্ব দরবারে তাঁর দেশের উজ্জ্বল দিকগুলো তুলে ধরতে। এ ভাবে চোখের বদলে চোখ, রক্তের বদলে রক্ত— এই নীতি চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আরও জওয়ান নিহত হবেন, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

সুমন সাহা

চন্দননগর, হুগলি

অভিযোগ অদৃশ্য

পুলওয়ামার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক— বলার অপেক্ষা রাখে না। একই সঙ্গে, বদলা নেওয়ার দাবি এবং শান্তির পক্ষে কথা বলা মানুষদের পেটানোর ঘটনাও সমর্থনযোগ্য নয়। তবে আশ্চর্য ব্যাপার হল, ঘটনাটির ফলে সবচেয়ে উপকৃত হয়েছে মোদী সরকার। ভোটের আগে দেশের যাবতীয় সমস্যা মোকাবিলার ব্যর্থতা সরকারকে যে প্রশ্নগুলির সামনে দাঁড় করিয়েছিল, সেগুলি বর্তমানে অদৃশ্য। উগ্র জাতীয়তাবাদের আগুনে গোটা দেশ টগবগ করে ফুটছে। এটা জানা কথা, দরজা খোলা রাখলে চোর চুরি করবেই। আবার, এই আক্রমণ রোধ করতে না পারার ব্যর্থতা সরকারের তরফ থেকে কেউ মাথা নত করে স্বীকারও করেনি।

অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়

কলকাতা-৭৩

সাবধান

পুলওয়ামা হত্যাকাণ্ডের পর বালাকোটে জঙ্গিঘাঁটিতে প্রত্যাঘাত এবং ২৫ জঙ্গি কমান্ডার-সহ প্রায় সাড়ে তিনশো জঙ্গি নিকেশ করে ভারতীয় সেনাবাহিনী বিশ্বের দরবারে আমাদের দেশের মাথা উঁচু করল। যে কোনও ‘মৌলবাদ হচ্ছে সন্ত্রাসবাদের গর্ভগৃহ’। জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবা-সহ পাক মদতে পুষ্ট বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বার বার ভারতে চোরাগোপ্তা আক্রমণে ভারতের নিরীহ মানুষ এবং সেনা জওয়ানদের নিহত করেছে। বালাকোট হল তার মধুর প্রতিশোধ। কাশ্মীরের মানুষ যাঁরা নিজেদের ভারতীয় ভাবেন, তাঁদের উন্নয়নে সরকার সর্বদা সচেষ্ট। কিন্তু দেশদ্রোহীরা সাবধান। ভারতে থাকলে পাকিস্তানের গুপ্তচরবৃত্তি চলবে না। মাসুদ আজহার যাদের ‘আইডল’, তারাও সাবধান।

শান্তনু সিংহ রায়

জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE