Advertisement
E-Paper

লন্ডন ডায়েরি

ভিক্টোরিয়া প্রায়ই ওঁর বাড়ি আসতেন চা খেতে। দু’জনের বন্ধুতা মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল রাজপরিবারে। ১৯০১-এ ভিক্টোরিয়ার মৃত্যু হলে শেষকৃত্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই সকালে করিমের বাড়ির দরজায় সদলবলে হাজির হয় প্রাসাদের লোক।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪৫

ইতিহাসের বাড়িতেই ঠাঁই হ্যারি-মেগানের

রাজকুমার হ্যারি ও মেগান মার্কল কেনসিংটন প্যালেস ছেড়ে উইনসর কাসল-এর ফ্রগমোর হাউসে গিয়ে উঠবেন, খবরে হইচই পড়ে গিয়েছে। এই বাড়িটাই রানি ভিক্টোরিয়া দিয়েছিলেন তাঁর ‘ভারতীয় সঙ্গী’ আবদুল করিমকে। ভিক্টোরিয়া প্রায়ই ওঁর বাড়ি আসতেন চা খেতে। দু’জনের বন্ধুতা মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল রাজপরিবারে। ১৯০১-এ ভিক্টোরিয়ার মৃত্যু হলে শেষকৃত্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই সকালে করিমের বাড়ির দরজায় সদলবলে হাজির হয় প্রাসাদের লোক। নতুন রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডের আদেশে তারা গোটা বাড়ি তছনছ করে; করিমকে লেখা রানির চিঠি, পোস্টকার্ড, সব স্মারক বাজেয়াপ্ত করে পুড়িয়ে ফেলে। মেগান মার্কল কি এই ইতিহাস জানেন? ফ্রগমোর হাউস এখন নতুন করে সংস্কার করা হবে; ১০-১২টা ঘর, জিম-এর ব্যবস্থা হবে। ফ্রগমোর গার্ডেনস-এই হ্যারি-মেগানের বিয়ের ভোজ হয়েছিল।

স্মৃতিময়: ফ্রগমোর হাউস, তখন ও এখন। এখানেই বহু বার এসেছেন রানি ভিক্টোরিয়া

বন্ধুর খোঁজে

বাঙালির প্রিয় লেখক শংকর নতুন এক সন্ধানে ব্যস্ত। খুঁজছেন সেই দুই বাঙালিকে, ১৯৬৭-র সেপ্টেম্বরে জীবনে প্রথম লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে নামার পর যাঁরা ওঁকে সাহায্য করেছিলেন। ডানলপ সংস্থা তাঁকে আমেরিকায় পাঠিয়েছিল, পথে ইংল্যান্ডের অফিসে নামার কথা। বলা হয়েছিল, পাসপোর্ট, বিমান টিকিট আর একটা ওভারকোট থাকলেই যথেষ্ট, বাকিটা কোম্পানি বুঝে নেবে। কিন্তু হিথরোয় নামার পর দেখা গেল, ওঁকে হোটেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউ নেই। কাউকে চেনেন না, পকেটে মোটে সাড়ে সাত ডলার, পাউন্ড স্টার্লিং নেই। হঠাৎ কানে এল বাংলা ভাষা, এগিয়ে গেলেন সে দিকে। দুই বাঙালি যুবক। ওঁরাও লন্ডনে এসেছিলেন কাজের খোঁজে, পয়সাকড়ি নেই তেমন। এক জন পেয়িং গেস্ট থাকতেন এক বাড়িতে, তিনি শংকরকে সেখানে নিয়ে গেলেন দোতলা বাসে চাপিয়ে, ভাড়াও দিলেন দুই বন্ধু মিলেই। রাতে বানিয়ে দিলেন ডিম-টোস্ট। পর দিন ফের বাসে চাপিয়ে নিয়ে গেলেন লন্ডনে ডানলপ অফিসে। জানা গেল, ওঁর আসার খবরটা অফিস পায়নি ঠিকমতো। শংকর সে রাতটা কাটালেন হোটেলে, পর দিন গেলেন অফিসের বার্মিংহাম কারখানায়। সেই দুই বাঙালি যুবকের নামধাম টুকে রাখা হয়নি, জীবনে আর দেখাও হয়নি তাঁদের সঙ্গে। মা বলে দিয়েছিলেন, বিদেশে গিয়ে কারও বাড়িতে অতিথি হয়ে থাকলে তাঁদের বাড়ি, জীবন নিয়ে লিখবে না। শংকরও লেখেননি, ওঁর ‘এপার বাংলা ওপার বাংলা’ বইয়েও না। এত বছর পর শংকর খুঁজছেন ওঁদের।

ক্যামেরা দেখছে

মোবাইল হাতে কথা বলার সময় গাড়ি চালাতে গিয়ে শুধু চালকরাই দুর্ঘটনায় পড়েন তা নয়। পথচারীদেরও একই দশা। অনেক লন্ডনবাসী রাস্তা পেরোনোর সময়েও মেসেজে ব্যস্ত। লন্ডন কর্পোরেশন ঠিক করেছে, শহরের কেন্দ্রে ব্যস্ত মোড়গুলোয় ক্যামেরা বসানো হবে, রাস্তা পেরোতে গিয়ে রাস্তা না দেখে কে ফোনে চোখ রাখছেন, তা ধরতে। গত বছর ব্রিটেনে ৭৮৪৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোবাইল-মগ্ন অবস্থায় রাস্তা পেরোতে গিয়ে। ১৫১টি মৃত্যু, ২১৯২টি গুরুতর জখমের ঘটনা ঘটেছে। পথচারীদের জরিমানা করা হবে না অবশ্য, সতর্ক করা হবে।

কী হবে

সমালোচিত: শমী চক্রবর্তী

ব্রেক্সিট নিয়ে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার মধ্যেই লেবার পার্টির বাঙালি সদস্য শমী চক্রবর্তী সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণের মুখে পড়েছেন। বিবিসি রেডিয়ো ফোর-এ শমী বলেছিলেন, লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন আগামী বছর ২৯ মার্চের (যে দিন ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে) মধ্যে ব্রেক্সিট নিয়ে ভাল কোনও ‘ডিল’ করতে পারতেন। জেরেমির সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময় সেখানে ছিলেন শমীও। দু’মাসের মধ্যে ব্রেক্সিট-সমস্যার সমাধান সম্ভব, বলায় সোশ্যাল মিডিয়ায় শমীকে ‘সুবিধাবাদী’, ‘জেরেমির তাঁবেদার’ বলা হয়েছে। জেরেমি নিজে ব্রেক্সিটপন্থী, যদিও তাঁর দলে অনেকেই বিমুখ। এই মুহূর্তে ব্রিটেনে সাংসদরা টেরেসা মে-র ব্রেক্সিট পরিকল্পনার ঘোর বিরোধী। এর পরে কী হবে, ব্রিটেন বিনা বোঝাপড়াতেই বেরিয়ে যাবে, না কি দ্বিতীয় গণভোট বা সাধারণ নির্বাচন হবে, সেই নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো দ্বিধাবিভক্ত। প্রশ্নগুলো কঠিন, উত্তরও অজানা।

London Diaries London Diaries লন্ডন ডায়েরি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy