Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩
Editorial News

পাকিস্তানের দুর্বোধ্য আচরণ

কেন পাক প্রশাসনের এই আচরণ, তা জানা যায়নি। অসৌজন্যের প্রকৃতি দেখে ভারত বিস্মিত।

অতিথি-অভ্যাগতকে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে পাক নিরাপত্তা বাহিনী।—ফাইল চিত্র।

অতিথি-অভ্যাগতকে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে পাক নিরাপত্তা বাহিনী।—ফাইল চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ০০:৩৭
Share: Save:

অসৌজন্যের আর এক নজির তৈরি করল পাকিস্তান। ভারতের তরফে সামাজিক উষ্ণতার এক আয়োজনকে পুরোপুরি ভেস্তে দিল। কূটনৈতিক সৌজন্যের যে সাধারণ শর্ত, তা-ও দারুণ ভাবে লঙ্ঘন করল তারা।

Advertisement

ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিল। সে আয়োজনকে বিফল করতে পাক প্রশাসন উঠেপড়ে লাগল। যে হোটেলে পার্টি রাখা হয়েছিল, সে হোটেল ঘিরে ফেলল পাক নিরাপত্তা বাহিনী। অধিকাংশ অতিথি-অভ্যাগতকে ঢুকতেই দিল না। রীতিমতো হেনস্থা করে তাড়ানো হল তাঁদের অনেককে।

কেন পাক প্রশাসনের এই আচরণ, তা জানা যায়নি। অসৌজন্যের প্রকৃতি দেখে ভারত বিস্মিত। ভারতীয় হাইকমিশনের বিবৃতিতে বিস্ময় প্রকাশও করা হয়েছে। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটানো হল, সে বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা পাকিস্তান দেয়নি।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Advertisement

ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন আয়োজিত ইফতার পার্টির আয়োজন ভেস্তে দেওয়া— এই ঘটনা যে সাংঘাতিক কিছু, তা হয়তো নয়। কিন্তু ঘটনাটার তাৎপর্য সাংঘাতিক। এই ছোট ছোট ঘটনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপরে খুব বড় প্রভাব ফেলে যায়। ঠিক সেই বিষয়েই ভারতীয় হাইকমিশনার সতর্কও করে দিয়েছেন ইসলামাবাদকে। কিন্তু পাকিস্তানের তরফে তার পরেও কোনও ব্যাখ্যা নেই, কোনও দুঃখপ্রকাশও নেই।.

আরও পড়ুন: ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের অনুষ্ঠানে অতিথিদের ঢুকতেই দিলেন না পাক কর্তারা!

এই পাকিস্তানই কিন্তু দাবি করছিল, ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিতে তারা অত্যন্ত আগ্রহী। নরেন্দ্র মোদীর দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রিত্ব নিশ্চিত হতেই পাক প্রধানমন্ত্রী টুইট করে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। তার পরে ফোনও করেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে পাকিস্তান অত্যন্ত আগ্রহী— ইসলামাবাদ এই রকম বার্তাই দিয়েছিল। এই কী সেই আগ্রহের নমুনা!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথে এ বার ডাক পাননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে জোরদার চর্চা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রীরা যে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর শপথে ডাক পাবেনই, এমন কোনও বাঁধাধরা নিয়ম তো নেই। মোদী ২০১৪ সালে যখন শপথ নেন, তখন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ আমন্ত্রিত ছিলেন। অনেক রাষ্ট্রপ্রধান আবার আমন্ত্রিত ছিলেনও না। আর মোদীর এ বারের শপথে অনেকগুলো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানরা নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পাননি। এটা তো কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। প্রধানমন্ত্রীর শপথে ভারত কাকে আমন্ত্রণ জানাবে আর কাকে জানাবে না, তা স্থির করবে ভারতই। যাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হল না, তাঁদের প্রতি অসৌজন্য প্রদর্শন হল, তেমনও নয় বিষয়টা। পাক কূটনীতিকরাও সম্ভবত এই সরল সত্য বোঝেন। তা হলে ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে আচমকা এমন রুক্ষ আচরণ কেন পাকিস্তানের?

কারণটা দুর্বোধ্যই রয়ে গেল। কিন্তু ফলাফলটা যে ভারত-পাক সম্পর্ককে কোনও ইতিবাচক দিশায় নিয়ে যাবে না, তা বুঝতে ইসলামাবাদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.