সম্প্রীতি, সংযোগ এবং সীমান্তহীনতাই শিল্প-সংস্কৃতি বা খেলাধুলোর অমোঘ গন্তব্য।
তিক্ততার পরিসর ক্রমশ প্রসারিত করতে থাকা কোনও কাজের কথা নয়। পুলওয়ামার ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারত এবং পাকিস্তানের মাঝে তিক্ততা এখন চরমে। কূটনৈতিক লড়াই তুঙ্গে উঠেছে, সরাসরি সামরিক সংঘাতের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু সংঘাতের ক্ষেত্রগুলোর সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে যে সব বিষয়, সেগুলোকেও সংঘাতের আওতায় আনার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এই ধরনের অতি উৎসাহ কখনও ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসে না।
রাজনীতি তথা কূটনীতি এবং রণনীতি এক রকমের পথ ধরে চলে। কিন্তু সে জগতের থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থিত খেলাধুলো বা শিল্প-সংস্কৃতির জগত। সে কথা ভুলে গেলে চলবে না। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে কূটনীতি বা রণনীতি যে পথ নেয়, খেলাধুলো বা শিল্প-সংস্কৃতি কখনও সে পথে হাঁটতে পারে না, কারণ সম্প্রীতি, সংযোগ এবং সীমান্তহীনতাই শিল্প-সংস্কৃতি বা খেলাধুলোর অমোঘ গন্তব্য।
শুটিং বিশ্বকাপে অংশ নিতে ভারতে আসার কথা ছিল দুই পাকিস্তানি শুটারের। ভিসা দেয়নি ভারত। পাক শুটাররা নয়াদিল্লি আসতে পারেননি, বিশ্বকাপে অংশ নিতেও পারেননি।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
সামনে ভারত-পাক ক্রিকেট ম্যাচ রয়েছে। সেই ম্যাচ বাতিল করে দেওয়ার দাবি উঠতে শুরু করেছে| ম্যাচ আগেও অনেক বাতিল হয়েছে। এবারও হবে বলে ধরে নেওয়া যায়| কিন্তু এতে আদৌ কি সমাধানে পৌঁছনো সম্ভব হবে? নাকি কিছুটা অকারণেই আরও একটা দরজা বন্ধ করে ফেলব আমরা?
আরও পড়ুন: না খেলে পাকিস্তানকে ২ পয়েন্ট দেওয়া ঘৃণা করি, মন্তব্য সচিনের
খেলার ধারণাটাই তো সঙ্ঘাতের সম্পূর্ণ বিপরীত। খেলা তো বিশ্ব সৌভ্রাতৃত্বের বার্তাবহ। পাকিস্তানের সঙ্গে সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার কথা এই মুহূর্তে কজন ভারতবাসী ভাবছেন, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। তবু মনে রাখতে হবে, আশার প্রদীপগুলো নিঃশেষে নিভিয়ে দেওয়া কোনও কাজের কথা নয়। যার সঙ্গে সঙ্ঘাতের কোনও সম্পর্কই নেই, তাকে জোর করে সঙ্ঘাতের কেন্দ্রে টেনে এনে কোনও লাভ হবে না।
আরও পড়ুন: পাক শুটারদের ভিসা না দেওয়ার জের, অলিম্পিক কমিটির কড়া নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারত
ভারত আগেও বহু বার পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা বন্ধ করেছে। কোনও লাভ হয়েছে তাতে? সন্ত্রাস কমেছে? খেলার জন্য সন্ত্রাসবাদীদের বিশেষ কোনও সুবিধা হচ্ছে, এমন কথাও কি কেউ বলতে পারবেন?
পরিস্থিতি যে রকম, তাতে ভারত যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ করে, খুব আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। সে এক চরম পরিস্থিতি হবে। কিন্তু সেখানেই শেষ হয়ে যাবে না ভবিষ্যৎ, সেখানেই রুদ্ধ হয়ে যাবে না সময়ের পথ। তার পরেও ভারত থাকবে, তার পরেও পাকিস্তান থাকবে। তাই তার পরেও মানবিক সংযোগের প্রয়োজনীয়তা থাকবে। যে সেতুটা কোনোও দিনই যুদ্ধের কাজে লাগবেই না, যে সেতুটা কোনও যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছনোর পথে কোনও বাধাই তৈরি করবে না, সেই সেতুটা গুঁড়িয়ে দিয়ে শক্তিক্ষয় করার কোনও অর্থ হয় না অতএব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy