Advertisement
০৭ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: মূর্তির উপকারিতা

শিবাজী ভাদুড়ী বিজেপির মূর্তি ভাঙাকে কালাপাহাড়ের মাথামোটা কাজ, আর নকশালদের মূর্তি ভাঙাকে মতাদর্শের ব্যবহারিক প্রয়োগ বলে মনে করেন।

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:০৪
Share: Save:

মূর্তি ভাঙা নিয়ে এই বিভাগে তিনটি চিঠি প্রকাশিত হয়েছে (২৩-৩)। লোকেশ চৌধুরী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘শহর ভর্তি প্রচুর মূর্তি কেন?’’ এ প্রসঙ্গে জানাই, ৩৩ বছর আগে যখন বহরমপুর থেকে কলকাতায় শিক্ষানবিশ হয়ে আসি, শহরে মূর্তি থাকার ব্যবহারিক উপযোগিতা উপলব্ধি করেছিলাম। এক আত্মীয়কে প্রশ্ন করেছিলাম, ‘‘শ্যামবাজারে যে পাঁচমাথার মোড় আছে, সেখানে কোন রাস্তার কী নাম?’’ উনি উত্তরে বললেন, ‘‘দেখবি ওখানে ঘোড়ায় চড়া নেতাজির বিশাল মূর্তি আছে, নেতাজির মুখ যে দিকে, সেটা আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোড, ডান হাত যে দিকে উঁচিয়ে আছেন, সেটা বিধান সরণি, উনি যে দিকে পিছন ফিরে আছেন, সেটা বিটি রোড, ওঁর ঘোড়া যে দিকে মুখ করে আছে, সেটা আর জি কর রোড, ঘোড়ার লেজ যে দিকে অর্ধেক উঠে আছে, সেটা ভূপেন বোস অ্যাভিনিউ।’’ এই দিকনির্দেশ এখনও আমার মনে গেঁথে আছে।

শিবাজী ভাদুড়ী বিজেপির মূর্তি ভাঙাকে কালাপাহাড়ের মাথামোটা কাজ, আর নকশালদের মূর্তি ভাঙাকে মতাদর্শের ব্যবহারিক প্রয়োগ বলে মনে করেন। আইন জানি না, তবে আমার মনে হয়, ভারতীয় দণ্ডবিধিতে মহাপুরুষদের মূর্তি ভাঙার জন্য একই শাস্তির বিধান আছে। আসলে ‘মতাদর্শ’ ব্যাপারটাই খুব গোলমেলে। সেই জন্য কংগ্রেস পার্টি অফিসে সুভাষচন্দ্র বসুর ধুতি-পাঞ্জাবি-শাল পরিহিত ছবি দেখা যায়, আর ফরওয়ার্ড ব্লকের পার্টি অফিসে নেতাজির পূর্ণ সামরিক পোশাক পরিহিত ছবি দেখা যায়।

বহরমপুরে ব্যারাক স্কোয়ার মাঠের উত্তর-পূর্ব দিকে মহাত্মা গাঁধীর মূর্তি আছে। সারা বছর গাঁধীজির চোখে চশমা থাকত না, তবে প্রতি বছর ২ অক্টোবর, তাঁর গলায় মালা দেওয়ার আগে একটা কালো রঙের গোল ফ্রেমের কাচহীন চশমা পরিয়ে নেওয়া হত। হয়তো এখনও সেই রীতি বজায় আছে। ব্যাপারটা ভাল না খারাপ, আজও ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না।

শুভাশিস চৌধুরী হৃদয়পুর, উত্তর ২৪ পরগনা

অন্যকে চেনা

জয়া মিত্রের লেখাটির (‘পরিকল্পিত ভাবে ছড়াল সংঘর্ষ’, ১৭–৪) জন্য ধন্যবাদ। লেখিকা ঠিকই বলেছেন, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বহু দিন পাশাপাশি বাস করেও পরস্পরকে চেনেন না। আর এই অপরিচয়ের ফাঁক দিয়েই বার বার ঢুকে পড়ে পারস্পরিক অবিশ্বাস, সংশয়, ঘৃণা, নিষ্ঠুরতা। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরেও এই অপরিচয় থেকে গেল কেন? এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র এবং নানা নামের সরকারগুলি তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারে কি? বামপন্থীদের দায়িত্ব এ ক্ষেত্রে ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তাদের বৃহৎ অংশ সরকার টিকিয়ে রাখতে এই অপরিচয়ের পরিণামকে কমবেশি ব্যবহার করেছে।

অপরিচয় দূর করতে লেখিকা পুর–পরিষেবার সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য হাত মিলিয়ে উদ্যোগী হতে বলেছেন। যা আসলে নাগরিক আন্দোলন। ব্যক্তিগত স্বার্থের বাইরে বেরিয়ে সমষ্টিগত স্বার্থের জন্য একত্রিত হতে গিয়ে পরস্পরকে অনেকখানিই চেনা যায়। কিন্তু বিষয়টি তো শুধু নাগরিকদের নিজস্ব সমস্যা নয়। সংঘর্ষ যারা বাধায়, বাধানোর পিছনে যে কায়েমি স্বার্থ এবং শক্তিগুলি কাজ করে, তাদের চরিত্র বোঝাটাও খুব জরুরি। তাদের নাগরিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করতে না পারলে, এ জিনিস ভবিষ্যতেও বারে বারে ঘটতে থাকবে। তাই বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নিয়ে কমিটি তৈরি করতে হবে। এলাকায় যারা সাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে চলবে, বা প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ ভাবে সাম্প্রদায়িকতা প্রচার করবে, তাদের এমনকী যাতে সমাজচ্যুত পর্যন্ত করা যায় তেমন মনোভাব গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠান ও উৎসবগুলিতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে মেলামেশা গড়ে তুলতে হবে। সরকারের কাছে দাবি করতে হবে: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে এবং সিলেবাসকে সব রকমের ধর্মীয় প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা হোক, সরকার আয়োজিত বা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে কোনও ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করা চলবে না।

ইন্দ্রজিৎ মিত্র কলকাতা–৪

পক্ষে বিপক্ষে

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নবপ্রবর্তিত পাঠ্যক্রম অনুযায়ী, বাংলা ভাষার প্রবন্ধের ক্ষেত্রে নিজস্ব চিন্তা, ভাষাগত দক্ষতা, ভাবনার স্বচ্ছতা বিশদে প্রতিফলিত হওয়ার সুযোগ এনে দেওয়া হয়েছে। তাদের কথা অনুযায়ী, ‘‘প্রবন্ধের যে চারটি ধরন রাখা হয়েছে তারা পরস্পরের থেকে আলাদা কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রেই যুক্তি ও কল্পনা, ভাব ও ভাষা, অর্জিত জ্ঞান ও তা প্রকাশের সামর্থ্য পরীক্ষিত হবে।’’ কিন্তু বিতর্ক নামক যে অংশটি আছে, সেখানে কেবল মতের পক্ষে লেখা থাকে, ছাত্রছাত্রীদের এর বিপক্ষে লিখতে হয়। আমার প্রশ্ন: কোনও পরীক্ষার্থীর ব্যক্তিগত মতামত তো মতের পক্ষেও হতে পারে, তা হলে সে তো তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে অসমর্থ। উদাহরণ, দেওয়া আছে বিতর্কের বিষয় ‘‘পরীক্ষায় প্রাপ্ত নাম্বার সাফল্যের একমাত্র মাপকাঠি নয়।’’ পরীক্ষার্থীকে এর বিপক্ষে লিখতে হবেই, তা হলে তার ভাবনা, নিজস্ব চিন্তা প্রতিফলিত হওয়ার সুযোগ কোথায়? আবার বিতর্কের বিষয়, ‘‘র‌্যাগিং একটি সামাজিক অপরাধ।’’ বিপক্ষে লিখতে হবে, অর্থাৎ দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র বা ছাত্রী লিখবে যে র‌্যাগিং করা ভাল, যেখানে বর্তমানে এটাকে আইনত অপরাধ বলে গণ্য করা হচ্ছে?

সম্পদ হালদার বাজার পাড়া, পুরুলিয়া

বইটাই নেই

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান (বিশেষজ্ঞ কমিটি) চতুর্থ শ্রেণির ‘আমার পরিবেশ’ বইতে প্রাক-কথনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় উল্লেখ করেছেন, ‘‘শিখিবার কালে বাড়িয়া উঠিবার সময় প্রকৃতির সহায়তা নিতান্তই চাই।’’ কিন্তু প্রকৃতিকে জানতে হলে, পরিবেশ বইটা তো পড়ুয়াদের হাতে পেতে হবে, বইটার পৃষ্ঠা ওল্টাতে হবে। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে মার্চ মাস শেষ হয়ে যাওয়া অবধি ছাত্রছাত্রীরা ‘আমার পরিবেশ’ বইটি হাতেই পায়নি।

অনুপম সাঁতরা সবং, পশ্চিম মেদিনীপুর

দায় কার

নিজে একটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হওয়ার সুবাদে এ বারই প্রথম লক্ষ করলাম, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কিছু স্কুলে কোনও কোনও পাঠ্যপুস্তক (যেমন আমাদের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির ইংরেজি বই) পৌঁছতে সরকার ঘোষিত ‘বুক ডে’ ২ জানুয়ারি তো বটেই, শিক্ষাবর্ষের তিন মাস পেরিয়ে গেল। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার যে ক্ষতি হল, তার দায় কার?

তিমিরবরণ ভট্টাচার্য তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর

প্রশ্নে ভুল

অবাক হতে হয় যখন দেখি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারক পরীক্ষা ‘সেট’(সিইটি)-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাতেও বিস্তর গোলযোগ থাকছে। ইতিহাস তৃতীয় পত্রের ‘ওয়াই’ সিরিজের ৩৯ নম্বর প্রশ্নটিতে চারটি প্রদত্ত জোড় থেকে একটি ভুল জোড়কে বাছতে বলা হয়েছিল, অথচ চারটি অপশনের মধ্যে দু’টিতে ভুল জোড় ছিল! অপশন ‘এ’-তে ভুল জোড় ছিল, কারণ ইবন-ই হাসানের বইয়ের নাম ‘সাম অ্যাসপেক্টস অব মুসলিম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ আদৌ নয়। এই বইয়ের লেখক আর পি ত্রিপাঠি। আবার অপশন ‘সি’-তে ভুল জোড় ছিল, কারণ শিরিন মুসভির বইয়ের নাম ‘িদ ইকনমি অব মুঘল ইন্ডিয়া’ একেবারেই নয়। ওঁর বইয়ের ঠিক নাম হল ‘দি ইকনমি অব দ্য মুঘল এম্পায়ার সি (সার্কা) ১৫৯৫: আ স্ট্যাটিস্টিক্যাল স্টাডি’।

তৌহিদর রহমান মেচেদা, পূর্ব মেদিনীপুর

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

statues
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE