একটা সময় ছিল যখন কেউ ব্যাঙ্কে গেলে প্রায় গোটা দিনের সময় হাতে নিয়েই যেতেন। ব্যাঙ্কে লাইন দেওয়া, ফর্ম ভরা, টাকা তোলা, পাসবই আপডেট করা— মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে এ ছবি খুবই পরিচিত ছিল। বেশ বিত্তশালী হলে বড়জোর নিজে না গিয়ে অন্য কাউকে চেক লিখে পাঠানো। সম্প্রতি কলকাতা ও শহরতলির একাধিক এটিএম থেকে পর পর টাকা খোয়ানোর অভিযোগ আসার পর থেকে এখন সেই আদি নিয়ম ধরে থাকা মানুষগুলোকেই আচমকা বিচক্ষণ মনে হতে শুরু হয়েছে।
স্কিমার, কার্ড ক্লোন করা, পিন নম্বর হ্যাক করে নেওয়া, এ সব ঘিরে বিস্তর জল্পনা। কেবল কয়েকটা সংখ্যা, আর সেই সংখ্যার আগে-পরে করে কয়েক বার সাজিয়ে নিয়ে মিলিয়ে নেওয়া সজ্জায় আপনার অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যেতে পারে। এর থেকে তো পাড়ার মোড়ে ছিনতাইবাজকে আটকানো সোজা ছিল। নিদেনপক্ষে বলা যেত আমার দুর্বলতা বা অসাবধানতার সুযোগ নিয়ে ছিনতাই করেছে। এখানে গ্রাহকের কিছু করার নেই, স্কিমার হোক বা হ্যাক করে হোক, যা-ই করা হোক সেটা পুরোটাই হাতের বাইরে।
এই লোকসান হওয়ার পরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কোনও বাড়তি দায়িত্ব নেয়নি। এমনকি, সর্বস্বান্ত হওয়া মানুষগুলো যখন ব্যাঙ্কে গিয়ে তাঁদের টাকা লুট হওয়ার কথা জানান, তখন ব্যাঙ্ক কেবল সমবেদনা জানানো ছাড়া সেই অর্থে আর কিছুই করে উঠতে পারেনি। অথচ আপনার কাছে দিনে সাত বার করে ফোন, ব্যাঙ্কে গেলেই দেঁতো হাসি হেসে কী কী উপায়ে আপনি অমুক কার্ডের বা অমুক স্কিমের উপযুক্ত হয়ে গিয়েছেন, সেটা বোঝানোর লোকের অভাব হবে না। এক খ্যাতনামা ক্রেডিট কার্ড সংস্থা বেশ আদেশ করার ভঙ্গিতে বিজ্ঞাপনে লেখে, ‘ডোন্ট লিভ লাইফ উইদাউট ইট’। কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনে বা কেনাকাটায় থাকে সরাসরি ছাড় দেওয়ার প্রলোভন।