Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Editorial News

শুধু অধিকার ফলালে চলবে না, দায়টাও নিতে হবে

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দেখভালটা হচ্ছে কোথায়? যা রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা, রাজ্য সরকার তা নিয়ন্ত্রণে রাখছে কোথায়?

সন্দেশখালিরই ভাঙ্গিপাড়ায় নিহত বিজেপি-কর্মী প্রদীপ মণ্ডলের স্ত্রী ও ছেলে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

সন্দেশখালিরই ভাঙ্গিপাড়ায় নিহত বিজেপি-কর্মী প্রদীপ মণ্ডলের স্ত্রী ও ছেলে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৯ ০১:০৪
Share: Save:

আবার বোধ হয় আমরা পিছনে ফেলছি বাকিদের। শুরু হয়েছিল প্রাক নির্বাচনী হিংসা দিয়ে। তার পরে তুমুল হিংসা দেখেছিলাম ভোটগ্রহণের দিনগুলোয়। যে সব দৃশ্য এখন প্রায় দেখাই যায় না ভারতের অন্য কোনও রাজ্যে। এ বার শুরু হয়েছে নির্বাচন পরবর্তী অশান্তি। দেশের আর কোনও প্রান্তে এই রকম ঘটনা ঘটার খবর নেই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এমন প্রায় কোনও প্রান্তই নেই, যেখান থেকে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার খবর আসছে না।

উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অন্যান্য জেলা থেকেও রোজ অশান্তির খবর আসছে। ভোট মেটার পর থেকে এমন একটা দিন নেই, যে দিন ভাঙচুর বা হামলা বা মারধর বা খুনজখমের খবর এল না। এ কোন পরিস্থিতিতে বাস করছি আমরা!

রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অবশ্য কোনও কথা শুনতে রাজি নয় রাজ্য সরকার। সন্দেশখালিতে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার কথা আলোচনায় এল। তাতে ফুঁসে উঠলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আইন-শৃঙ্খলা তো রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিষয়, কেন্দ্র সেখানে হস্তক্ষেপ করবে কেন? প্রশ্ন জ্যোতিপ্রিয়র। ঠিক প্রশ্নই তুলেছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ১০০ শতাংশ ঠিক কথা বলেছেন--- আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের দেখভালের বিষয়, কেন্দ্রের নয়। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয়বাবু, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দেখভালটা হচ্ছে কোথায়? যা রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা, রাজ্য সরকার তা নিয়ন্ত্রণে রাখছে কোথায়?

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন: শাহের মন্ত্রকের ‘পরামর্শ’, ‘ব্যর্থ’ রাজ্যকে কেন্দ্রের হুঁশিয়ারি! আজ মোদীর সঙ্গে বৈঠক রাজ্যপালের​

আরও পড়ুন: ‘শয়তান ঢুকেছে’ সন্দেশখালিতে, আতঙ্কে পালাচ্ছে মানুষ​

এত রক্তপাত মেনে নেওয়া যায় কী ভাবে? সন্দেশখালিতে পরিস্থিতি যে রকম ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে, তা মেনে নেওয়া যাবে কী ভাবে? কে নেবেন এর দায়? সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তো এখনও একটা শব্দও খরচ করতে দেখা গেল না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে বিশেষ পরামর্শ এল। রাজ্য সরকারের তা মোটেই পছন্দ হল না। আর এক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে কেন্দ্রের সক্রিয়তার নিন্দা করলেন। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ভার যাঁর হাতে, তাঁকে আজ পর্যন্ত মুখ খুলতে দেখা গেল না। এর পরেও অধিকার-অনধিকারের প্রশ্ন কেউ তোলেন কী ভাবে!

শুধু অধিকার আর ক্ষমতার কথা বললে হবে কী ভাবে? দায়িত্বটাও তো নিতে হবে। সন্দেশখালির পরিস্থিতির বা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হিংসাত্মক ঘটনাগুলোর দায় নেবেন কে? আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়, বুঝলাম। তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারার দায়টা কার? সেটাও স্পষ্ট করে বলুন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE