প্রাণের খোঁজে। কানপুরে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: এএফপি।
গৃহস্থের বুদ্ধি যদি চোর পালিয়ে যাওয়ার পরে বাড়ে, তা হলে কি কোনও লাভ হয়?
হ্যাঁ, লাভ হয়। চোর পরের বার আর সিঁদ কাটার সুযোগ পায় না। অর্থাৎ পরে আর চুরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
ভারতীয় রেলের ক্ষেত্রের কিন্তু সে নিয়ম প্রযোজ্য নয়। ভারতীয় রেলে বার বার চোর আসে, বার বার চুরি করে যায়, চুরির পর বার বার রেল কর্তৃপক্ষের বুদ্ধি বাড়ে, কিন্তু আবার চোর আসে এবং আবার সফল হয়।
দুর্ঘটনা ভারতীয় রেলে এক নিরন্তর পরম্পরা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু দিন কাটলেই একটা করে বড় রেল দুর্ঘটনার খবর আসে, অনেকগুলো মৃত্যুর খবর আসে, বহু ক্ষয়ক্ষতির খবর আসে।
রেলমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সুরেশ প্রভু যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয় নিয়েই সবচেয়ে বেশি কথা খরচ করেছিলেন। জনমোহন রেলমন্ত্রী হতে চান না, কাজের কাজটা করতে চান— এমন বার্তা দিয়েছিলেন। এখন মনে হচ্ছে, সবই কথার কথা। দুর্ঘটনার পরম্পরায় আদৌ কোনও ছেদ নেই। ভারতীয় রেল আছে ভারতীয় রেলেই।
প্রধানমন্ত্রী বললেন, পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হবে। রেলমন্ত্রী বললেন, এই দুর্ঘটনার জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের কেউ ছাড় পাবেন না। কী লাভ হবে সে সবে? যে শতাধিক প্রাণ চলে গেল, সেগুলো কি ফিরবে আর? যে পরিবারগুলোর মাথায় আচমকা আকাশটা ভেঙে এল, তাঁদের জীবন আর কি কোনও ভাবেই আগের ছন্দে ফিরবে? সর্বোপরি, এর দায় কি সুরেশ প্রভু নিজেও এড়াতে পারবেন? কিছুতেই এড়াতে পারবেন না। দায় তাঁকেও নিতে হবে।
লাইনে ফাটল ছিল জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটি, নজরদারির অভাব, সতর্কতাহীনতা। এই কারণগুলোর জন্য ভারতীয় রেল আগেও দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে। সেই প্রত্যেক দুর্ঘটনার পরেই রেল কর্তৃপক্ষের বুদ্ধি অনেকটা করে বেড়েছিল। কিন্তু আবারও সেই একই কারণে দুর্ঘটনা ঘটল। তদন্ত করে আর শাস্তি দিয়ে তা হলে লাভ কী হয়? রেল মন্ত্রকের কাছে কোনও জবাব আছে কি? সমগ্র ভারত জবাবটা চাইছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy