Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু

পুলিশের দুই মূর্তি

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০১

পুলিশের দুই মূর্তি

দুর্গাপুজোর দিনগুলোতে পুলিশের ভূমিকা যে অসাধারণ, সে কথা এক বাক্যে সকলকেই মানতে হবে। কলকাতায় পুজোর সংখ্যা যেমন বেড়েছে, পাশাপাশি দর্শনার্থী ও তাঁদের দু’চাকা বাহনের সংখ্যাও অত্যন্ত দ্রুত হারে বেড়েছে। পুজোর ক’টা দিন কোথাও কোনও গাড়ি থেমে থাকেনি। নিশ্চিন্তে, শান্তিতে মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার সর্বত্র ঠাকুর দেখেছেন পুলিশের সহায়তায়। পুজোর দিনগুলোতে পুলিশকর্মী-সহ উচ্চ পদাধিকারীগণ দিন-রাত এক করে মানুষের সুরক্ষার দায়িত্বে অবিচল ছিলেন। উচ্চপদে আসীন আমার বন্ধু, আত্মীয়দের দেখেছি, তাঁদের পরিবারের জন্যও ন্যূনতম সময়টুকুও দিতে পারেনি। অথচ পরিবারের পক্ষে ক্ষোভ দেখিনি। এই ছবি প্রতিটি পুলিশ পরিবারেই দেখা যাবে। সুস্থ নাগরিক জীবন বজায় রাখতে অসাধারণ কর্মদক্ষতায় নিষ্ঠার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছেন তাঁরা।

পুলিশের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী বহু ঘটনা সামনে এসেছে, তবে তার বেশির ভাগ ঘটনাই ব্যক্তিগত দুর্নীতির কারণে। সমষ্টিগত ভাবে পুজোর দিনগুলোয় তাঁদের দেখেছি হাজার হাজার মানুষের জন্য সুরক্ষার বেষ্টনী গড়ে তুলতে, সারা দিন সারা রাত ধরে। রুগ্ণ প্রবীণ মহিলাকে কোলে তুলে বাবুবাগানের ভিড়ে বের করে আনতে দেখেছি। সুকান্ত সেতুর উপর ট্যাক্সির ধাক্কায় আহত যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখেছি। কসবা-পাটুলিতে রাত তিনটের পর দেখেছি নিস্তব্ধ প্যান্ডেলে রাতজাগা পুলিশকে, যাঁর চোখে ছিল ক্লান্তির ছাপ। ভিআইপি’কে সামলাতে তৎপর পুলিশকর্মীদের মানুষের সুরক্ষায় প্রস্তুত হতে দেখেছি নেতাজি জাতীয় সেবাদলের পুজোয়, ভোর চারটেয়। মনে হয়েছিল প্রয়োজনে তাঁরা যেন সুরক্ষার স্বার্থে নিজের বলিদানেও প্রস্তুত। উদয়ন সংঘের পুজোয় সন্ধ্যায় ভিড়ে শক্ত বেষ্টনী গড়ে তুলতেও দেখেছি। হরিদেবপুরের নামকরা পুজোয় মহিলাদের কটূক্তি করার জন্য ছেলেদের লাঠি নিয়ে তাড়া করতেও দেখেছি। ব্যাম্বিনোর পাশে এক জন পুলিশকে তাঁর বসার বেঞ্চ শেয়ার করে ক্লান্ত যুবকযুবতীদের বিশ্রাম করতে দিতে দেখেছি।

আবার এও দেখেছি, সন্তোষপুর লেক পুজোয় অষ্টমীর রাত আড়াইটেয় যে রাস্তায় নো এন্ট্রি বোর্ড নেই, সেখানে পর পর ১৬-১৮টি বাইক, তার উপর ১০০ টাকার ফাইনের স্টিকার সেঁটে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সম্মিলিত প্রতিবাদ ছিল। এক জন কমবয়সি পুলিশ দেখে নেবার হুমকি দিচ্ছিল। আশ্চর্য লেগেছিল একই দিনে দুই প্রান্তে দুই ছবি। রাত আড়াইটে নাগাদ ক্লান্ত দর্শনার্থীদের উপর একদল অমানবিক পুলিশের দুর্ভাগ্যজনক আচরণ। এক জন অফিসার বললেন, টাকাটা তো ব্যাংক নেবে, ওটা তো আমরা নিচ্ছি না। এই ছবিটা রোজকার। কলকাতার বিভিন্ন স্থানে, বিশেষত সাউথ সিটি মল-এর পাশে আনঅথরাইজড দোকানের মেলা, যেখানে পুলিশ নির্বিকার। অথচ সেখানেই গলিতে ক্লিনিকে আসা রোগীর পরিবারের দু’চাকা/চার চাকা যানকে নো-এন্ট্রি বোর্ড ছাড়াই তুলে নিয়ে যায়। কিছু দিন হল লজ্জার কারণে একটি বোর্ড লাগানো হয়েছে। যাদবপুর অঞ্চলে এ ঘটনা চলছে প্রত্যেক দিন।

আমার প্রশ্ন, এই টাকা আদায়ের ফন্দি কি শুধুই সরকারি চাপে? পুলিশের এই অর্থ আদায়ের এই অনৈতিক পদ্ধতি মানুষকে বীতশ্রদ্ধ করে তুলেছে। পুলিশকর্মীদের এ হেন কর্মপদ্ধতি মানুষের থেকে তাঁদের বিচ্ছিন্ন করছে, অশ্রদ্ধার পাত্রে পরিণত করেছে। এই বেআইনি লক্ষ্যপূরণের চাপ যদি সরকারি মদতে ঘটে থাকে, তা হলে অবিলম্বে পুনঃবিবেচনা করা প্রয়োজন। আর যদি সরকারি মদত ছাড়াই পুলিশ তার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অমানবিক গুন্ডাগিরি ঘটিয়ে থাকে, তা হলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

প্রতীশ ভৌমিক। কলকাতা-৯২

সত্যজিৎ ও চিরঞ্জিৎ

‘দীপকের প্রত্যাবর্তন’ সাক্ষাৎকার-এ (আনন্দ plus, ২৪-৯) লেখা হয়েছে ‘সত্যজিৎ রায় চিরঞ্জিৎকে কোনও ছবিতে কাজ করাননি।’ এটা ঠিকই, সত্যজিৎ রায়ের কোনও কাহিনিচিত্রে চিরঞ্জিৎ নেই, কিন্তু তথ্যচিত্র ‘সুকুমার রায়’-এর লক্ষ্মণের শক্তিশেল নাটকের পর্বটিতে চিরঞ্জিৎ লক্ষ্মণের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, যেখানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সেজেছিলেন রাম।

অরূপরতন আইচ। কোন্নগর, হুগলি

letters to the editor letters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy