Advertisement
১৭ মে ২০২৪
SSC Recruitment Verdict Effect on Madhyamik

কী ভাবে মাধ্যমিকের খাতা দেখার ছাড়পত্র চাকরিহারা শিক্ষকদের? শিক্ষামহলে প্রশ্ন, কী বলছে পর্ষদ?

২০১৬ সালে এই প্যানেলের পরীক্ষা হয়। সেখান থেকে ২০১৯-এ চাকরি পান ২০১৬ সালের প্যানেলভুক্ত শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীরা। যে প্যানেল সম্প্রতি হাই কোর্ট থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

অরুণাভ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৪ ১৪:৫৫
Share: Save:

মাধ্যমিকে খাতা দেখেছেন চাকরিহারা এবং ‘অযোগ্য’ পরীক্ষকরাও। যা নিয়ে প্রশ্ন শিক্ষামহলে। সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্ট ২৫,৭৫৩ জনের ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০০ জন শিক্ষক রয়েছেন, যাঁদের ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত করেছে সিবিআই। স্কুল সার্ভিস কমিশন তাতে সম্মতিও জানিয়েছে। তাঁরাও এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখেছেন, যা নিয়েই বিতর্ক।

এ বছরে মোট পরীক্ষক ছিলেন ৫১,৮৩৮ জন। এর মধ্যে প্রধান পরীক্ষক ছিলেন ১ হাজার ৪৭৮ জন। এর মধ্যেই বহু ‘অযোগ্য’ পরীক্ষক আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১৬ সালে এই প্যানেলের পরীক্ষা হয়। সেখান থেকে ২০১৯-এ চাকরি পান ২০১৬ সালের প্যানেলভুক্ত শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীরা। যেই প্যানেল সম্প্রতি হাই কোর্ট থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ওই বাতিল প্যানেল থেকে বহু পরীক্ষকই এ বছরের মাধ্যমিকের খাতা দেখেছেন।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, যদি কোনও শিক্ষকের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা দু’বছর হয়ে যায়, তা হলে তিনি খাতা দেখার জন্য যোগ্য। পাশাপাশি, প্রধান পরীক্ষকদের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা ১৫ বছরের হতে হবে। এই বিষয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই বিষয়টি হতেও পারে। কিন্তু এই বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষকদের তালিকা স্কুলের তরফে দেওয়া হয়। তাই আমাদের কাছে এর কোনও উপযুক্ত তথ্য নেই।’’

প্রসঙ্গত, স্কুল সার্ভিস কমিশনের অধীনে ২৫,৭৫৩টি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার। শীর্ষ আদালতে পৃথক ভাবে মামলা করেছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এসএসসির চেয়ারম্যান রায় ঘোষণার দিনই জানিয়েছিলেন, তাঁরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হবেন। হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করে। তার ফলে চাকরি যায় ২৫,৭৫৩ জনের। যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে বলা হয়েছে ওই চাকরিপ্রাপকদের। এই রায়ের বিরুদ্ধেই শীর্ষ আদালতে মামলা করে রাজ্য। প্যানেল-বহির্ভূত চাকরিকে ‘সম্পূর্ণ জালিয়াতি’ বলে মন্তব্য করে রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, যোগ্য-অযোগ্যদের বাছাই করা হবে কী উপায়ে? তা আদৌ সম্ভব? আর যোগ্য-অযোগ্যদের বাছাই করতে গিয়ে কোনও ভুল হবে না, তারই বা কী নিশ্চয়তা? রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য ছিল, ‘‘আপনারা চাকরি বাতিলের বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন? অথচ কোনও আসল ওএমআর শিটই নেই। কোন তথ্যের ভিত্তিতে যোগ্য এবং অযোগ্যদের বাছাই করছেন? ২৫ হাজার কিন্তু বিশাল সংখ্যা।’’

প্রধান বিচারপতি জানান, পুরো বিষয়টিই তাঁরা শুনবেন। তবে মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের যে নির্দেশ উচ্চ আদালত দিয়েছিল, তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik Result 2024 Bengal SSC Recruitment Verdict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE