ফাইল চিত্র।
বঙ্গ বিধানসভার চলতি নির্বাচন পর্বে বিভিন্ন দলের প্রচারে, এমনকি ভোটের লাইনেও অতিমারির সতর্কতা বিধির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। তা নিয়ে মামলাও হয়েছে একাধিক। এমনই একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টও সোমবার প্রশ্ন তুলল, বুথে বুথে কোভিড বিধি কী ভাবে মানা হচ্ছে এবং কতটা মানা হচ্ছে? নির্বাচন কমিশনের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছে আদালত।
কোভিড পরিস্থিতিতে নির্বাচন নিয়ে এ দিন তিনটি মামলার শুনানি হয়েছে উচ্চ আদালতে। তার মধ্যে একটি মামলায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণন নির্দেশ দিয়েছেন, বুথে বুথে করোনা বিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা জানানো হোক। অন্য একটি মামলায় সব জেলাশাসককে বিবাদী পক্ষ হিসেবে যুক্ত করতে বলেছে হাইকোর্ট।
অতিমারির দাপটে স্কুল-কলেজ কার্যত বন্ধ। সামাজিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ রয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এত প্রবল ভাবে আছড়ে পড়ছে যে, সতর্কতা-বিধি অক্ষরে অক্ষরে না-মানলে পরিস্থিতি অচিরেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে বলে চিকিৎসক ও সংক্রমণবিদেরা বার বার হুঁশিয়ার করে দিচ্ছেন। কিন্তু গণতন্ত্রের মহোৎসবে তাতে কেউ বিশেষ কান দিচ্ছে না। ভোটের প্রচারে ও জনসভায় যে-ভাবে কোভিড বিধি উপেক্ষা করেই ভিড় হচ্ছে, তা নিয়ে অনেকেই বিস্মিত। তাঁদের বক্তব্য, রাজনীতির এই বেপরোয়া মনোভাব বিস্ময়কর। আদালতের খবর, এ দিন শুনানিতে ‘রাজনীতির সীমাহীনতা’ নিয়ে কার্যত সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে বিচারপতির গলাতেও।
কোভিড আবহে এই নির্বাচন নিয়ে মামলা করেছেন চিকিৎসক সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়। তাঁর আইনজীবী শমীক বাগচী ও নুর ইসলাম শেখ আদালতে প্রশ্ন তোলেন, কমিশন যে-সব বিধি মেনে চলার কথা বলেছে, তাতে কতটা লাভ হচ্ছে? তাঁদের আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে হাইকোর্ট নির্বাচন স্থগিত করে দিতে পারে। যদিও কমিশনের আইনজীবী এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন।
এই সব মামলার আবেদনকারীদের অভিযোগ, নির্বাচনী প্রচারে কোথাও অতিমারির স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। হাজার হাজার মানুষের জমায়েত হচ্ছে। সেখানে কেউ মাস্ক পরছেন না। অনেকে বলছেন, বুথের মুখে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার রয়েছে ঠিকই। কিন্তু ভোট দিতে আসা মানুষজন মাস্ক না-পরে, পারস্পরিক দূরত্ব-বিধি উড়িয়ে দীর্ঘ ক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন। রাজনৈতিক দলের ভোট-শিবিরেও মাস্কের দেখা মিলছে না। তা হলে শুধু বুথের মুখে ওই ব্যবস্থা রেখে কী লাভ হচ্ছে, তা নিয়েও জনমানসে প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ বলছেন, ভোট কেন্দ্রে সামান্য ছাউনি করা হচ্ছে। তীব্র রোদে মানুষজন সেই ছাউনির তলায় ভিড় করছেন। মানবিকতার খাতিরে তাঁদের সরে যেতেও বলতে পারছেন না কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা।
এই অবস্থায় বিষয়টি আদালতে পৌঁছনোয় অনেকেই নতুন কোনও নির্দেশের অপেক্ষায় সে-দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আগামী শুক্রবার ফের এই সব মামলার শুনানি হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy