Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: কোভিডে ঘরবন্দি অধীরের ঘরের মাঠে ‘হাত’-এর মুখরক্ষার লড়াই শুরু মুর্শিদাবাদে

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় কংগ্রেস ১৪টি আসনে জিতেছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ফলে ১৭টিতে এগিয়ে তৃণমূল।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২১ ০৭:৫৬
Share: Save:

সপ্তম ও অষ্টম দফায় ভোট মুর্শিদাবাদ জেলায়। শুরুটা হল সোমবার। এই লড়াইকে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে কংগ্রেসের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। আরও বেশি করে প্রদেশ কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীর লড়াই। বহরমপুরের সাংসদ গত লোকসভা নির্বাচনে নিজে জয় পেলেও জেলার অপর দুই আসন মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরে জয় পায় তৃণমূল। বিজেপি-ও ভোট প্রাপ্তির হিসেবে অনেকটাই এগিয়েছে জেলায়। তাই অধীর-গড় মুর্শিদাবাদে এ বারের লড়াই যে কঠিন তা মানছে কংগ্রেসও।

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় কংগ্রেস ১৪টি আসনে জিতেছিল। সেখানে তৃণমূল ও বামফ্রন্ট ৪টি করে আসন পায়। কিন্তু ২০১৯ সালের ফল অনেকটাই বদলে যায়। লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে জেলার ২২টি আসনের মধ্যে ১৭টিতে এগিয়ে তৃণমূল। ৪টিতে কংগ্রেস। ১টিতে বিজেপি। কংগ্রেসের একাংশ অবশ্য মনে করছে ২০১৯ সালের লোকসভা এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ফারাক বিস্তর। তাঁদের দাবি, এ বারের নির্বাচনে তৃণমূলের দাপট যেমন কমেছে, তেমন কিছুটা হলেও শক্তি বেড়েছে কংগ্রেসের। সেই সঙ্গে পাশে আছে বাম ভোট।

তবে বিজেপি কেমন ফল করবে তার আন্দাজ না পাওয়া গেলেও এটা ঠিক যে মুর্শিদাবাদ নিয়ে রীতিমতো আশাবাদী তারা। ৬৫ শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদে ৫ জন মুসলিম প্রার্থী দিয়েছে গেরুয়াশিবির। ২০১৬ সালেও বিজেপি এই জেলায় মাত্র ৪টি আসনে ২০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিল। সেখানে ২০১৯ সালে ৭ আসনে ৪০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছে। জঙ্গিপুর, সুতি, নবগ্রামে ভাল ভোট পেলেও সবার আগে থেকে চমকে দিয়েছিল মুর্শিদাবাদ আসনে। তাই খাতা খোলার আশা দেখেছে বিজেপি-ও।

এই জেলার ভোটেও বড় প্রভাব থাকতে পারে শুভেন্দু অধিকারীর। তৃণমূলের কাছে তিনি যেমন অভাব বিজেপি-র কাছে প্রাপ্তি। দীর্ঘ সময় মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু। সেই সুবাদে তাঁর পরিচিতি এবং প্রভাব নিয়ে এখনও তৃণমূল নেতাদের একাংশের মধ্যে চিন্তা রয়েছে। সেই সময় কংগ্রেসের হাতে থাকা জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত একে একে দখল করেছিল তৃণমূল। ২০১৬ সালে শুভেন্দুর নেতৃত্বেই ওই জেলায় ৪টি আসনে জেতে তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ আসন জয়ের পিছনে শুভেন্দুর বড় অবদান রয়েছে বলেও দাবি করেন তাঁর অনুগামীরা। শুভেন্দুর হাত ধরে অনেক নেতা, কর্মীও এসেছেন বিজেপি-তে।

এমন এক ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনায় নবাবের জেলায় যখন উত্তাপ তখন তার থেকে অনেকটাই দূরে থাকতে হচ্ছে নীলবাড়ির লড়াইয়ে কংগ্রেস সেনাপতি অধীরকে। করোনায় আক্রন্ত হয়ে তিনি এখন ঘরবন্দি। শেষ কয়েকদিন প্রচারেও নামতে পারেননি। অধীর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, ‘‘দাদা এই শেষবেলার প্রচারের সুযোগ না পাওয়াটা লড়াই কঠিন করে দিল। ভোটের দিনও তিনি রাস্তায় নামতে পারবেন না।’’ অধীর যদিও তেমনটা মানতে চাইছেন না। ঘনিষ্ঠদের কাছে তিনি জানিয়েছেন, গত লোকসভা নয়, গত বিধানসভা নির্বাচনের মতোই ফল করবে কংগ্রেস। মুখে এমনটা বললেও তিনি যে একটু চিন্তিত সেটাও স্পষ্ট অধীরের আচরণে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন বহরমপুর শহরে রয়েছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অধীর। শনিবারই তিনি কমিশনে চিঠি দিয়ে সেই আপত্তির কথা জানিয়েছেন। নিভৃতবাস থেকেই মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুশীল চন্দ্র ও পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক আরিজ আফতাবকে একযোগে অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী বহরমপুরে রাত্রিবাস করে নিজের ভোট লুটের চূড়ান্ত পরিকল্পনাকে রূপদান করবেন। এ ক্ষেত্রে তিনি প্রভাব খাটিয়ে সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দেবেন। সঙ্গে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনীকেও মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে ভোট লুট করার নির্দেশ দেবেন’। এটা কি অধীরের আগাম সাফাই গেয়ে রাখা? এমন প্রশ্নও উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE