প্রতীকী ছবি। —ফাইল চিত্র
মইনুল হকের প্রতিপক্ষ কে? তৃণমূল নাকি বিজেপি? ফরাক্কার বিধানসভা নির্বাচনে শিল্প শহর জুড়ে এখন তা নিয়েই জল্পনা সর্বত্র। ব্লক সভাপতি নেই ফরাক্কায় তৃণমূলের। গোষ্ঠী কোন্দল মেটাতে ১১ জন স্থানীয় নেতাকে নিয়ে নির্বাচনী কমিটি গড়ে দিয়েছে তৃণমূল। নেতাদের আশা ছিল স্থানীয় কোনও নেতাকে প্রার্থী করবে দল। কিন্তু করেনি। পাশের ব্লক থেকে প্রার্থী করে আনা হয়েছে মনিরুল ইসলামকে। ফরাক্কার রাজনীতিতে তিনি একেবারে নবাগত।। এমনকি শমসেরগঞ্জের বাসিন্দা হলেও তৃণমূল রাজনীতিতে তাঁর নাম তেমন একটা শোনা যায়নি সেখানেও।
একই অবস্থা বিজেপির। ২০১১ সালে দলের হয়ে লড়ে হেমন্ত ঘোষ ১৯.৬১ শতাংশ ভোট পেয়ে নজর কাড়লেও পরবর্তীতে বিজেপিতে দেখা যায়নি আর তাঁকে সে ভাবে। বছর খানেক আগে হঠাৎ করে আবার দলের রাজনীতিতে ভেসে ওঠেন তিনি।
ফরাক্কায় এই দুই প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই দুঁদে রাজনীতিক মইনুল হকের।
২৫ বছরের টানা বিধায়ক তিনি কংগ্রেসের, সব সময় যার অবস্থান রাজ্যে শাসক দলের বিরোধী হিসেবে। কংগ্রেস দলের সর্ব ভারতীয় ক্ষেত্রেও পরিচিতি রয়েছে তাঁর। যার জেরে তাঁকে কখনও জম্মু কাশ্মীরের, কখনও ঝাড়খণ্ডের পর্যবেক্ষেক করেছে দল। এলাকায় মইনুলের সুনামও রয়েছে, রয়েছে অনেক দুর্নামও। কিন্তু ফরাক্কার বুকে সারা বছর রাজনীতি ও জন সংযোগের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রাখার কৌশলেই ২৫ বছর ধরে তিনি আজও অপরাজেয়।
সারা রাজ্যের মত ফরাক্কাতেও কংগ্রেস দুর্বল হয়েছে। বেশিরভাগই তৃণমূলে ভিড়েছেন। কিন্তু দলের রাজনীতির গন্ডীর বাইরে তার দাপট অস্বীকার করার নয়। গত পাঁচ বারের নির্বাচনে মইনুল গতবছর জিতেছেন ২৮ হাজার ভোটে তৃণমূল প্রার্থী মহম্মদ মোস্তফাকে হারিয়ে। এলাকায় তাঁর জনসংযোগই যে এই জয়ের সাফল্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এলাকার ডজন খানেক ক্লাবের সভাপতি ও কর্তা তিনি। তার একটা বড় গুণ কর্মীরা বিপদে পড়লে তাঁদের পাশে থাকা। কথাটা অপ্রিয় হলেও তা মুখের উপর বলে দিতে পারেন তিনি। শিল্পনগর ফরাক্কা কেন্দ্রীয় জলসম্পদ দফতরের অধীনে । তাই প্রকল্প এলাকার মধ্যে সেভাবে উন্নয়ন করার কিছু নেই। তাই তা নিয়ে কোনো হইচইও নেই।
ফরাক্কায় বরাবরই তার মূল প্রতিপক্ষ ছিল সিপিএম। আর ২০১৬ সাল থেকে কি বিধানসভা কি লোকসভা সবেতেই সিপিএম ও কংগ্রেস একজোট।
রেজাউল হক ফরাক্কার এক গ্রামের বাসিন্দা। বলছেন, “ মইনুল হক ২০১৬ সালে হারছেন বলে চারিদিকে রব উঠে ছিল। মানুষ বিশ্বাসও করেছিল। কারণ সেবারের তৃণমূল প্রার্থী মহম্মদ মোস্তফার দাপট কোনও অংশে কম ছিল না মইনুলের থেকে। কিন্তু সব জল্পনা উড়িয়ে মইনুল জিতলেন তাঁর অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে।”
তাঁর কথায়, রাজনীতি বড় কঠিন ঠাঁই। তৃণমূলের সঙ্গে থেকেছেন, ঘুরেছেন, খেয়েছেন। ভোট করেছেন মইনুলের। ফরাক্কায় তৃণমূলের অন্দরের এই সব নেতারাই মইনুলের বড় শক্তি।”
রেজাউলের রাজনীতির এই হিসেব অবশ্য এবারে মানতে রাজি নন সিপিএম থেকে তৃণমূলে আসা কমরেড অরুণময় দাস। তার কথায়, “মইনুল হক ফরাক্কায় কোনওবারই জেতেন না, বরাবরই পিছিয়ে থাকেন ৯ অঞ্চল মিলিয়ে। সেই ঘাটতি মিটিয়ে মইনুলকে এগিয়ে রাখত শমসেরগঞ্জের দুটি পঞ্চায়েত। কিন্তু মনিরুল প্রার্থী হওয়াই সেটা সম্ভব হবে না। দ্বিতীয়ত সিপিএম নেতারা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সিপিএমের ৮০ শতাংশ ভোট এবার যাবে তৃণমূলের দিকে। তাই ২৫ বছর পর বড় সড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন মইনুল এই প্রথম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy