Advertisement
০৫ মে ২০২৪

‘নিউ মার্কেটের কাছে দু’বছর কাজ করেছিলাম’

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাওয়া আর সকালে ওঠা। সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে দেখুন, ভাল লাগবে। ক্রোয়েশিয়া ওয়র্ল্ড কাপ ফাইনালে খেলেছে কারণ, ওই দেশে যুবক থেকে বৃদ্ধ সবাইকে যে কোনও একটা স্পোর্টস খেলতেই হয়। আমাদের দেশে এ নিয়ে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।

অক্ষয় কুমার।

অক্ষয় কুমার।

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

প্র: এই প্রথম বাঙালি চরিত্র করছেন। কলকাতায় থাকার দিনগুলো মনে প়়ড়ে?

উ: হ্যাঁ, অনেক স্মৃতি। নিউ মার্কেটের কাছে আমার কাজের জায়গা ছিল। দু’বছর ছিলাম ওই শহরে। তখন অনেক কিছু শিখেছিলাম। যেগুলো জীবনে চলার পথে কাজে লেগেছে। বাঙালিরা খুব জেদি হয়। কোনও বিষয় এক বার মাথায় ঢুকলে যেন তেন প্রকারে সেই কাজটা করেই ছাড়ে। তাতে পুরো জীবন লেগে গেলে, লেগে যাবে। এক কথায় বাঙালিরা জিনিয়াস। এই শহর থেকেই এক জন ভাল বন্ধু পেয়েছি। তার সঙ্গে এখনও আমার যোগাযোগ আছে। তখন তো বাংলাও ভাল বুঝতে পারতাম। কোথায় কী খাবার ভাল পাওয়া যায়, সব জানতাম।

প্র: আপনার নায়িকা মৌনী রায়ও তো বাঙালি।

উ: মৌনী খুব ভাল অভিনেত্রী। টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ। ও আমার স্ত্রীর ভূমিকায়। ওর চরিত্রের খুব জোরালো একটা দিক আছে, সেটা ক্রমশ প্রকাশ্য।

প্র: ‘গোল্ড’ করার পিছনে কী কারণ ছিল?

উ: ১৯৪৮ সালে স্বাধীন ভারত অলিম্পিকে প্রথম সোনা জেতে। সেই সময়ে আমাদের দেশে যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল, তাতে ঘটনাটা চাপা প়়ড়ে যায়। ইতিহাসের বইতে হয়তো উল্লেখ আছে। কিন্তু সে সব আর কে উল্টে দেখে! আমাদের মনে হয়েছিল, এই গল্পটা সবাইকে বলা প্রয়োজন। এ রকম গল্প ছবির মাধ্যমে দর্শকের কাছে তুলে ধরলে, তার ইমপ্যাক্ট অনেক বেশি হয়। আমি খুব ভাগ্যবান যে, ছবিটা আমার কাছে এসেছে।

প্র: অক্ষয়কুমারকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আধুনিক জগতের মনোজকুমার বলা হয়। আপনার কী মত?

উ: এই সব আমি ভাবি না। ‘এয়ারলিফ্ট’, ‘টয়লেট এক প্রেম কথা’, ‘প্যাডম্যান’, ‘গোল্ড’-এর মতো ছবি করি, কারণ আমি চাই ছবির মাধ্যমে ব্র্যান্ড ইন্ডিয়া তৈরি করতে। হলিউডের ছবির প্রভাব আমাদের উপর খুব বেশি। আমেরিকার সুপার পাওয়ার হওয়ার পিছনে ওদের ছবির অবদান অনেক। ওরা যদি ‘থ্রি হান্ড্রেড’ বানাতে পারে তা হলে আমরা ‘কেশরী’ বানাতে পারব না? যেখানে মাত্র একুশ জন শিখ দশ হাজার আফগানের সঙ্গে লড়াই করেছিল!

প্র: এই বয়সেও এতটা এনার্জি কী করে?

উ: রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাওয়া আর সকালে ওঠা। সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে দেখুন, ভাল লাগবে। ক্রোয়েশিয়া ওয়র্ল্ড কাপ ফাইনালে খেলেছে কারণ, ওই দেশে যুবক থেকে বৃদ্ধ সবাইকে যে কোনও একটা স্পোর্টস খেলতেই হয়। আমাদের দেশে এ নিয়ে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু আমি সকলকে অনুরোধ করছি, যে কোনও একটা খেলা নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। তাতে মনও ভাল থাকবে। আমাকে অনেকে ডিপ্লোম্যাটিক বা পলিটিক্যালি কারেক্ট বলেন। আমি সেটা স্বীকারও করছি। কিন্তু আমি কোনও দিন কারও নিন্দে করিনি। কোনও সাক্ষাৎকারে কারও নামে খারাপ কথা বলিনি। দেখবেন, আমার নামেও কেউ খারাপ কথা বলে না। মার্শাল আর্টের মূল মন্ত্র— ধৈর্য রাখা। মনকে সব নেগেটিভ জিনিসের থেকে দূরে রাখা। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। এগুলো আমরা ছোটবেলা থেকে শিখে আসছি। কিন্তু ভুলে যাই।

প্র: সন্তানদের মধ্যে নিজের কী কী গুণ দেখতে চান?

উ: ওরা নিজেদের ব্যক্তিত্ব নিজেরা তৈরি করুক। ভাল-খারাপ দিকগুলো বলে দিই, বাকিটা নিজেরা বুঝে নিক।

প্র: অনেকের বায়োপিকে অভিনয় করেছেন। নিজের বায়োপিক করতে চান না?

উ: না। এমন কিছু করিনি যার জন্য আমার বায়োপিক বানাতে হবে। অরুণাচল মুরুগানন্থম সস্তায় স্যানিটারি ন্যাপকিন বানিয়েছেন। রঞ্জিত কাটিয়াল ১ লক্ষ ৭০ হাজার লোককে এয়ারলিফ্ট করেছিলেন। তাঁদের সামনে আমি কে?

প্র: অক্ষয়কুমারের কাছে স্টারডম কী?

উ: স্টারডম আজ আছে, কাল নেই। কোনও কিছুকে হালকা ভাবে নিই না। পরিশ্রম করি। টেকেন ফর গ্রান্টেড মনোভাব নেই আমার। কেরিয়ারের শুরুতে অনেকটা স্ট্রাগল করেছি। মুম্বইয়ের চার্চগেট স্টেশনের কাছে রাস্তার একটি বুকস্টলে ‘হাউ টু লার্ন অ্যাক্টিং’ বলে একটা বই কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যথেষ্ট টাকা ছিল না। মুম্বই আমাকে কাজ দিয়েছে। কাজ করতে শিখিয়েছে।

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী, মুম্বই

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Akhsay Kumar Actor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE